ধারণা করা হয়, অতি প্রাচীন কালে এ স্থানে গঙ্গা ও ব্রহ্মপুত্রের সঙ্গমস্থল ছিল। পরবর্তিতে উভয় নদীর প্রবাহ পরিবর্তনের ফলে এই স্থান শুষ্ক হয়ে বিলে পরিণত হয়। এটি মূলত ঢাকা ও মুন্সীগঞ্জ জেলার বর্ডারে অবস্থিত । যেটি আড়িয়াল বিল হিসেবে পরিচিত। এই বিলের সান্নিধ্যে গেলে কিছুটা হলেও ঋতুময় বৈচিত্র্য লক্ষ্য করা যায়। বিলটি বেশিরভাগ সময় শুষ্ক থাকে। শীতকালে নানা ধরনের সবজির চাষ হয়। দেশের সবচেয়ে বড় জাতের মিষ্টি কুমড়ার চাষ হয় এ বিলের মাটিতেই। গ্রীষ্মকালে চাষ করা হয় ধান। চারদিকে সবুজ ধানের চারা। ধানের পরিচর্যায় কৃষকের ব্যস্ততা বেড়ে যায়। নিড়ানি, সার দেয়ার কাজ চলে সন্ধ্যা অবধি। একটু পর পর কৃষকের কন্ঠে গানের সুর। সে এক অন্য রকম অনুভূতি। বর্ষা এলে এর রূপ বদলে যায়। চারপাশে থৈ থৈ করে জলরাশি। ফুটে ওঠে রাশি রাশি শাপলা। বর্ষা এলেই আড়িয়াল বিল মূলত পরিপূর্ণতা পায়।
শুক্রবার ছুটির দিনে কৃষকের খোঁজে গিয়েছিলাম আরিয়ালবিলে। কথা হলো কর্ম ব্যস্ত কৃষকের সঙ্গে। সামনে আসছে বৃষ্টির মৌসুম। কৃষক বৃষ্টিতে ভিজে কাজ করতে স্বাচ্ছন্দবোধ করেন। বৃষ্টিতে মাঝ মধ্যেই হয় বজ্রপাত। জীবন বাঁচাতে বৃষ্টিতে কাজ করতে নিষেধ করা হয় তাদেরকে। সেভ দ্য সোসাইটি অ্যান্ড থান্ডারস্টোর্ম অ্যাওয়ারনেস ফোরামের নানা সচেতনতা কার্যক্রম তুলে ধরা হয়।
কৃষক বিলের কিছু অংশ আমাকে ঘুড়িয়ে দেখালেন। এক ঘন্টার মতো সময় কাটালাম। নজর কারা মন মাতানো সবুজ শ্যামল দৃশ্য। বিলের দিকে তাকালে সবুজ আর সবুজ। চোখ জুড়িয়ে যাবে। যারা জমির আইল দিয়ে হাঁটতে পারেন তারা হেটে বহুদূর যেতে পারেন।
এ সময় দেখতে পাবেন বাতাসে ফসলি জমির তরঙ্গ। এ এক অন্য রকম দৃশ্য। সন্ধ্যায় দেখতে পাবেন সূর্যাস্ত। মনে হবে সূর্য যেন পাশের গ্রামে লুকাচ্ছে।
ঢাকা থেকে প্রায় ৪২ কিলোমিটার দক্ষিণে মুন্সিগঞ্জ জেলার অন্তর্গত শ্রীনগর উপজেলায় অবস্থিত আড়িয়াল বিল। এর আয়তন ১৩৬ বর্গ কিলোমিটার।
রাজধানীর গুলিস্তান থেকে মাওয়াগামী যে কোনো বাসে চড়ে সিরাজদিখানে নামতে হবে। এরপর শ্রীনগরের হাসারা হয়ে আলমপুর হয়ে একটু সামনেই আড়িয়াল বিল।
লেখকঃ রাশিম মোল্লা
প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক
সেভ দ্য সোসাইটি অ্যান্ড থান্ডাস্টোর্ম অ্যাওয়ারনেস ফোরাম