আল-আকছার চেয়ারম্যান রিমান্ডে

323

গ্রাহকদের অর্থ আত্মসাৎ ও প্রতারণার মামলায় আল-আকছা ইসলামী মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান খানকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গত বৃহস্পতিবার রাতে এক দিনের রিমান্ডে নিয়েছে ঢাকার নবাবগঞ্জ থানার পুলিশ।

নবাবগঞ্জ থানার পুলিশ জানায়, ঢাকা, দোহার, নবাবগঞ্জ, সাভার ও নরসিংদীতে আল-আকছা ইসলামী মাল্টিপারপাসের ১২টি শাখা রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি দৈনিক, সাপ্তাহিক, মাসিক ও এককালীন ভিত্তিতে গ্রাহকদের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করত। কিন্তু গত জানুয়ারি মাসে প্রতিষ্ঠানটি গ্রাহকদের টাকা ফেরত না দিয়েই বিভিন্ন শাখা বন্ধ করে দেয়।

পুলিশ জানায়, সম্প্রতি তাকে ঢাকার ধামরাই উপজেলায় কোম্পানীর ইল্ট্রেনিক্স ফ্যাক্টিরী থেকে তাকে গ্রেফতার  করে পুলিশ। এরপর পল্টন, মিরপুরসহ দেশের কয়েকটি থানায়জিজ্ঞাসাবাদ শেষে গত ২৫ এপ্রিল বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে ঢাকার একটি আদালত থেকে নবাবগঞ্জ থানায় আনা হয় গ্রাহকরাজানান, কোন রকমের নোটিশ ছাড়া গত ১৪ জানুয়ারী নবাবগঞ্জ উপজেলা সদরের নবী উল্লাহভবনের ২য় তলার অফিস কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেয়।

গ্রাহকদের অভিযোগ প্রতিষ্ঠানটির এ শাখা তাদের ৮ কোটিরও বেশি টাকা গচ্ছিত ছিল।অভিযোগ পেয়ে, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দেওয়ান মাহবুবুর রহমানের উপস্থিতিতে  প্রতিষ্ঠানটির নবাবগঞ্জ শাখা অফিস ও নিচতলার একটি ইলেক্ট্রনিক্স শো-রুম সীলগালা করে পুলিশি আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশ দেন।

অন্য খবর  ঢাকা জেলা পরিষদ নির্বাচনঃ দোহার-নবাবগঞ্জে জমে উঠেছে প্রচার

গত বৃহস্পতিবার রাত ১০টায় তাঁকে আদালত থেকে নবাবগঞ্জ থানায় আনা হয়। বৃহস্পতিবার রাতে নবাবগঞ্জ থানায় সাইদুর বলেন, ‘সরকার নতুন সমবায় আইন করে শাখা কার্যালয় করার নিষেধ করায় আমরা আমাদের শাখাগুলো বন্ধ করে ঢাকায় প্রধান কার্যালয় থেকে কার্যক্রম চালানোর সিদ্ধান্ত নিই। পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন স্থানের গ্রাহকেরা টাকার দাবিতে চাপ সৃষ্টি করলে আত্মগোপন করি।’

সাইদুর বলেন, ‘গ্রাহকদের আমানতের টাকা আমরা রিয়েল এস্টেট, ইলেকট্রনিকসসহ বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করেছি। এখন টাকা চাইলেই তো দেওয়া সম্ভব নয়। আমরা সম্পদ বিক্রি করে পর্যায়ক্রমে গ্রাহকদের টাকা ফেরত দেব।’

এদিকে সাইদুরের রিমান্ডের খবর ছড়িয়ে পড়লে নবাবগঞ্জে আল-আকছার প্রতারিত গ্রাহকেরা শুক্রবার সকাল থেকে নবাবগঞ্জ থানার সামনে ভিড় করেন। তাঁরা সাইদুরসহ আল-আকছার অন্য কর্মকর্তাদের শাস্তি এবং তাঁদের টাকা ফেরত দেওয়ার দাবি জানান।

গ্রাহকেরা বলেন, আল-আকছার নবাবগঞ্জ শাখায় ২০০ গ্রাহকের প্রায় আট কোটি টাকা জমা আছে। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি টাকা ফেরত না দিয়ে কোনো নোটিশ ছাড়াই গত ১৪ জানুয়ারি নবাবগঞ্জ কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেয়।

নবাবগঞ্জ থানার পুলিশ জানায়, সাইদুরকে গ্রেপ্তারের খবর পেয়ে ১০ এপ্রিল আবুল কালাম আজাদ নামের এক গ্রাহক তাঁর পৌনে চার লাখ টাকা আত্মসাৎ ও প্রতারণার অভিযোগে সাইদুরসহ আল-আকছার সাত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন। ওই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও নবাবগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সাইদুরকে গ্রাহক আবুল কালাম আজাদের করা মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এক দিনের রিমান্ডে থানাহাজতে আনা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে বিভিন্ন শাখার গ্রাহকদের প্রায় ১৫০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠলেও পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তিনি ৭৫ কোটি টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন।

অন্য খবর  দোহারে স্বাধীনতার ৪০ বছর পূর্তি উদযাপন

অন্যদিকে, মো. সাইদুর রহমান খান (মন্টু)’র রিমোন্ডের খবর ছড়িয়ে পড়লে প্রতারিত গ্রাহকরা থানা ফটকে ভীড় করে এবং সত্যতা জানতে পেরে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। নবাবগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক মোস্তাফিজুর রহমান জানান, ১ দিনের রিমান্ড শেষে আদালতে প্রেরণ করা হবে।

আপনার মতামত দিন