‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার এখন হজ তত্ত্বাবধায়ক, কী ভয়ঙ্কর!’- ফখরুল ইসলাম আলমগীর

98

আওয়ামী লীগ জনগণের ভোট চুরি করে ক্ষমতায় বসেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘তাদের (আওয়ামী লীগ সরকার) সঙ্গে জনগণের কোনও সম্পর্ক নেই; তাদের জনগণের কাছে কোনও জবাবদিহিতা নেই। আর সেই জন্যই আজকে যখন বন্যা হচ্ছে, তখন তাদের কাউকে জনগণের পাশে দেখতে পাচ্ছেন না, মানুষের পাশে দেখতে পাচ্ছেন না।’

শনিবার (২০ জুলাই) চট্টগ্রাম নগরীর কাজির দেউরি এলাকার নুর আহমদ সড়কে আয়োজিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবিতে চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিএনপির উদ্যোগে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। সমাবেশে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রধান অতিথি ছিলেন।

তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন, যারা নির্বাচনের সঙ্গে জড়িত। আপনারা কালকের সংবাদপত্র পড়েছেন? যদি পড়েন, তাহলে দেখবেন সরকার হাজিদের তত্ত্বাবধানের জন্য একটি টিম পাঠাচ্ছে, ওই টিমের সদস্য হয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার হজ করতে সৌদি আরব যাচ্ছেন। দেখেন, সাংবিধানিক পদগুলোর এখন কী অবস্থা! এটি কী ভয়ংকর! তিনি (নিবার্চন কমিশনার) হজ তত্ত্বাবধান করতে যাচ্ছেন; নির্বাচন তত্ত্বাবধান বাদ দিয়ে।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আজকে যখন মানুষ চাচ্ছে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হোক তখন সেখানে নৈরাজ্য সৃষ্টি হয়েছে। আপনারা দেখেছেন, আদালতে ঢুকে হত্যা করা হয়েছে, দিনে-দুপুরে কুপিয়ে হত্যা করা হচ্ছে। আমাদের মা-বোন কেউ রেহাই পাচ্ছে না। আজকে কোথাও কোনও জবাবদিহিতা নেই। এই জবাবদিহিতা না থাকায় এই নৈরাজ্য সৃষ্টি হয়েছে।’

অন্য খবর  গোপালগঞ্জে অ্যাম্বুলেন্স-ট্রেলার সংঘর্ষে চারজনের মৃত্যু

তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ঢোল বাজায়, বাংলাদেশ নাকি এখন উন্নয়নের রোল মডেল। তারা বলে, বাংলাদেশে নাকি উন্নয়নের নহর বয়ে যাচ্ছে। অথচ কয়েকদিন আগেও বিশ্ববিখ্যাত একজন অর্থনীতিবিদ এসে বলে গেছেন, বাংলাদেশ বড় ধরনের ঋণের ফাঁদে পড়তে যাচ্ছে এবং রিজার্ভ ফাঁকা হয়ে গেছে।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ব্যাংকগুলোকে লুট করে শেষ করে দিয়েছে। একটা ব্যাংকও নেই, যেখানে সুষ্ঠু লেনদেন আছে। শেয়ার মার্কেটকে ধ্বংস করে দিয়েছে। গ্যাসের দাম বাড়িয়েছে, জ্বালানির দাম বাড়িয়েছে, প্রত্যেকটা জিনিসের দাম বাড়িয়েছে। বাজেট ঘোষণার পর সব ভোগ্যপণ্যের দাম বেড়েছে।’

তিনি বলেন, ‘এ সরকার পুলিশ প্রশাসন, প্রশাসন এবং বিচার বিভাগকে দলীয়করণ করেছে। এমনকি মিডিয়া, আমাদের সাংবাদিক ভাইদের মাঝে ঢুকে তাদের নিয়ন্ত্রণ করা শুরু করে দিয়েছে; যেন খবর তাদের ইচ্ছেমতো প্রকাশিত হয়।’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমি স্পষ্টভাবে বলতে চাই, এই নির্বাচন কমিশন দিয়ে অবাধ, নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না। তাই শিগগিরই এই নির্বাচন কমিশন বাতিল করে নিরপেক্ষ ব্যক্তিদের দিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে।’

চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভাপতি ডা. শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন–  বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. খন্দকার মোশারফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস-চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান, বরকত উল্যাহ বুলু, মোহাম্মদ শাহজাহান, মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন, আব্দুল আউয়াল মিন্টু, গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী, যুগ্ম-মহাসচিব মাহবুব উদ্দিন খোকন, খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঁইয়া, জয়নাল আবেদিন ফারুক, অধ্যাপক জয়নাল আবেদিন প্রমুখ।

অন্য খবর  ঢাকায় বাইডেনের প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা

সরকার বিএনপিকে ভয় পায় মন্তব্য করে সমাবেশে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের সমাবেশ করার অনুমতি দেওয়া হচ্ছিল না। শেষ মুহূর্তে গতকাল সন্ধ্যায় অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তাও সড়কের ওপর সমাবেশ করার অনুমতি দিয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘বিএনপি নেতাকর্মীরা জ্বলে-পুড়ে খাটি সোনায় পরিণত হয়েছে। তাই বিএনপিকে যেখানেই সমাবেশ করার সুযোগ দেওয়া হোক না কেন, সেখানেই জনসমুদ্র হবে।’

আপনার মতামত দিন