দোহার পৌরসভার ড্রেনেজ ব্যবস্থা কেড়ে নিচ্ছে জনগণের জায়গা

379
পৌরসভার ড্রেনেজ ব্যবস্থা কেড়ে নিচ্ছে জনগণের জায়গা

ঢাকা জেলার দোহার পৌরসভার ড্রেনেজ ব্যবস্থার কারণে বছরের পর বছর ধরে আবার কোন স্থানে কয়েক মাস ধরে বেশ কয়েকটি সড়ক খুঁড়ে রাখা হয়েছে। কয়েকটি সড়কে ড্রেনেজ ব্যবস্থার কাজও শেষ হয়েছে অনেক দিন ধরে। কিন্তু সে গুলোতেও দেখা যাচ্ছে ড্রেনের পাশ দিয়ে রাস্তা ভেঙে ড্রেনের ভিতরে টুকে যাচ্ছে। কিন্তু এই ড্রেনেজ ব্যবস্থা রাস্তা গুলো যান চলাচলের জন্য সড়কগুলো সংস্কার না করায় চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দা, ব্যবসায়ী ও সড়কগুলো ব্যবহারকারীদের।

সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পৌরসভার গাংপাড় এলাকা থেকে খারাকান্দা পশু হাসপাতাল পর্যন্ত প্রায় দুই বছর খানিক ধরে রাস্তা খুরে ফেলে রাখা হয়েছে ড্রেনেজ ব্যবস্থার জন্য। আবার খারাকান্দা মাঝি বাড়ি থেকে আবেদ আলী মেম্বার বাড়ি পর্যন্ত এই রাস্তাটিও প্রায় বছর খানেক ধরে খুরে রাখা হয়েছে ড্রেনেজ ব্যবস্থার জন্য।

অন্যদিকে উত্তর জয়পাড়া কুটি বাড়ি থেকে সাহেব বাজারের রাস্তা পর্যন্তও একই অবস্থা। এই রাস্তা গুলোতে দির্ঘ দিন ধরে ড্রেনেজ ব্যবস্থা জন্য পাইপ ফেলে রাখা হয়েছে। আর এতে ভোগান্তিতে পরছে ঐ স্থানের বাসিন্দারা। এসব রাস্তায় ড্রেনেজ ব্যবস্থা জন্য পাইপ স্থাপন করা হয়েছে। তবে পাইপ বসানো শেষ হলেও রাস্তা যান চলাচলের উপযোগী করা হয়নি। এতে ভোগান্তির শেষ নেই ঐস্থানের বাসিন্দাদের। আর এতে ধুলাবালুতে পরিবেশ মারাত্মকভাবে দূষিত হচ্ছে। সাথে বৃষ্টি নামলে বৃষ্টির পানি জমে জন্মাচ্ছে মশা।

পৌরসভার মাঝিবাড়ি থেকে আবেদ আলী মেম্বার বাড়ি পর্যন্ত এই রাস্তার বিষয় জানতে চাইলে স্থানীয় রফিক, সোনামিয়া ও রাহেলা বলেন, এই রাস্তাটি বছর খানিক ধরে পরে আছে ড্রেনেজ ব্যবস্থার জন্য। ড্রেনেজ ব্যবস্থা জন্য পাইপ বসালেও রাস্তাটি এখনো ঠিক করা হয়নি আর এতে আমাদের কারো কোন অসুবিধা হলে ডাক্তারের কাছে রোগীকে নিতে অনেক কষ্ট হয়। এখন এই রাস্তার জন্য আমাদের অনেক সমস্যা হচ্ছে।

অন্য খবর  দোহারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে স্কুলছাত্রের মৃত্যু

মোজ্জাফর ও দোলাল বলেন, এই রাস্তাটি ঠিক করা হচ্ছে না। পৌরসভার উন্নয়ন এখন আমাদের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। পৌরসভা বলছে এই রাস্তাটি এখন বিশ ফুট চড়াও হবে। এতে আমাদের অনেক ক্ষতি হবে বাড়িঘর ভাঙতে হবে। আমাদের জায়গা আছে অল্পএকটু তার মধ্যে যদি রাস্তার জন্য নিয়ে যায় তাহলে কি করে আমরা থাকবো। সে জন্য এবিষয়ে আমরা পৌরসভার কাছে আমরা দরখাস্ত দিয়েছি রাস্তা যাতে বড় না করার সে জন্য। কিন্তু মাঝি বাড়ি থেকে খারাকান্দা মোড় পর্যন্ত ঘরবাড়ি ভেঙে রাস্তা বড় করা হয়েছে। এখন আমরা চাই আমাদের এই পাশে যতটুকু রাস্তা আছে সেই টুকুই থাক আমাদের রাস্তা বড় লাগবে না।

কুটি বাড়ির এলাকার হারুন রশীদ (৪৮) বলেন, আমাদের এই রাস্তাটি পায়ে হাটার জন্য আমরা নিজেদের জায়গা দিয়ে তৈরী করেছিলাম। পরবতীতে এই রাস্তাটি নয় ফুট করা হয় যাতায়াতের জন্য। পৌরসভা যখন ড্রেন নেয় তখন আমাদের বলা হয়েছিল রাস্তা বড় হবে না যতটুকু আছে ততোটুকই হবে। পরে তারা বলে রাস্তা বিশ ফুট হবে আমরা আগে জানলে এই রাস্তা দিয়ে ড্রেন নিতে দিতাম না।তাছাড়া যেখানে মেইন রোড ১৩ ফিট রাস্তা সেখানে এই রাস্তা কি করে বিশ ফুট হয় এটাই আমার প্রশ্ন?

অন্য খবর  দোহার পৌরসভার উদ্যোগে প্রথম পিঠা উৎসব অনুষ্ঠিত

আমরা সবাই মিলে এ জন্য কোটে মামলা করেছি যাতে রাস্তা বড় না হয় সে জন্য রাস্তার কাজ বন্ধ হয়ে রয়েছে। এই রাস্তাটি একশত ফুট আর এই একশত ফুট রাস্তায় চওড়া বিশফুট কি করে হয় আপনারাই বলেন?

পৌরসভার ড্রেনেজ ব্যবস্থা কেড়ে নিচ্ছে জনগণের জায়গা

তিনি আরো বলেন, শেখ হাসিনা সরকার অনেক উন্নয়ন করতেছে। এমনকি ভূমি হীনদের ভূমি, আশ্রয় হীনদের আশ্রয় দিচ্ছে। সেই জায়গায় পৌরসভার ড্রেন ও রাস্তার উন্নয়নের জন্য তারা আমাদের ঘরবাড়ি ভেঙে দিয়ে ভূমিহীন করছে। তাই আমরা ঘরবাড়ি বিলিন করে দিয়ে রাস্তা ও ড্রেনের উন্নয়ন চাই না।

এ বিষয় দোহার পৌরসভার পৌর প্রশাসক বলেন, আমি দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে কাজ করে যাচ্ছি এবং আমার মেয়াদ অল্প দিনের জন্য। ড্রেনেজ ব্যবস্থা অনেক দিন ধরে পরে আছে আর এতে কিছু রাজনৈতিক সমস্যা ছিল। তাছাড়া আগের মেয়র অসুস্থ থাকার কারনে ঘটনা স্থানে যেতে পারিনি সে জন্য তদারকি না থাকায় এত দিন ধরে পরে আছে ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন। তবে বর্তমানে সালমান এফ রহমান নিজে পৌরসভার দিকে নজর দিয়েছে পৌরসভার সমস্ত উন্নয়নের কাজ তিনি নিজে করছে।

তিনি আরো বলেন, আমরা টিকাদারদের সাথে কথা বলেছি তারা বলতেছে রাস্তার মধ্যে যে ঘর এসে পরেছে সে ঘরগুলো ভেঙ্গে দিলেই আমরা কাজ দ্রুত করে দিব। রাস্তা যেন বড় না করার হয় সে জন্য জনগণ যে দরখাস্ত দিয়েছে সে বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা আবার সবার সাথে বসবো বসে যেটা ভাল হয় সেটাই করবো।

আপনার মতামত দিন