বিশ্বব্যাংকের সহজে ব্যবসার সূচকে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো বড় অগ্রগতি অর্জন করলেও তা যথেষ্ট নয় বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। আগামী দুই বছরের মধ্যে এ অবস্থান একশ’র ঘরে নামিয়ে আনার কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। তিনি আশা করেন, ২০২১ সালের মধ্যে অবস্থানের বড় উন্নতি হবে।
সালমান এফ রহমান গতকাল বৃহস্পতিবার বিশ্বব্যাংকের ‘ডুয়িং বিজনেস-২০২০’ প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন এসব কথা বলেন। এ প্রতিবেদনের বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব নজিবুর রহমান, মুখ্য সমন্বয়ক (এসডিজি) আবুল কালাম আজাদ, বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম, লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিভাগের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ শহিদুল হক ও অর্থ সচিব আবদুর রউফ তালুকদার উপস্থিত ছিলেন। এ সময় বিভিন্ন পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ী নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
উপদেষ্টা সহজে ব্যবসা সূচকের সর্বশেষ প্রতিবেদনে বাংলাদেশের আট ধাপ অগ্রগতি হলেও আরও ভালো করার প্রত্যাশার কথা জানান। তিনি বলেন, গত ৩০ বছরে এ সূচকে বাংলাদেশ সব সময় খারাপ অবস্থানে ছিল। সরকার এ বিষয়ে কাজ করছে। তার ফলও এসেছে এবার। আগামীতে আরও অগ্রগতি হবে। এবার আগের সবচেয়ে ভালো অবস্থান ১৭৬তম থেকে ১৬৮তম স্থানে নেমে এসেছে।
সালমান এফ রহমান বলেন, এ সূচকে বাংলাদেশের অবস্থানে উন্নতির প্রচেষ্টা শুরু হয়েছে বেশি দিন হয়নি। এবার আওয়ামী লীগ সরকার পুনরায় ক্ষমতায় আসার পরই এই প্রচেষ্টার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। তবে সূচকের অগ্রগতি বা অবনতি সংক্রান্ত তথ্য নথিবদ্ধ করার শেষ সময় ছিল এপ্রিল মাস পর্যন্ত। এর মধ্যে হাতে বেশি সময় ছিল না। তার পরও প্রত্যাশা আরও বেশি ছিল। সম্পত্তি নিবন্ধন ও এনফোর্সিং কন্টাক্ট মানদণ্ডে সবচেয়ে বেশি পিছিয়ে থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে অনেক পরিবর্তন এসেছে। এর সুফল মাঠপর্যায়ে পুরোপুরি যায়নি। কারণ মধ্যম ও নিচু সারির সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এই পরিবর্তন সম্পর্কে অবহিত হননি বা মানিয়ে নিতে পারেননি। এখন এই পরিবর্তনের প্রায়োগিক বাস্তবায়নের ওপর জোর দিচ্ছে সরকার।
এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক বলেন, বিদ্যুৎসহ কয়েকটি মানদণ্ডে আরও ভালো করতে হবে। তিনি বলেন, ১০টি মানদণ্ডের সবগুলোতে ভালো করতে ১০টি গ্রুপ করে দেওয়া হবে। বিডার চেয়ারম্যান বলেন, এ সূচকে উন্নতি করতে তাদের সংস্থায় একটি টিম কাজ করছে। আগামীতে এর সুফল আসবে।
লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিভাগের সিনিয়র সচিব বলেন, ভূমি নিবন্ধনে সময় কমাতে ডিজিটালাইজ করাসহ অনেক সংস্কার করা হচ্ছে। এখন এ কাজে ২৭১ দিন সময় লাগছে। সংস্কার শেষ হলে ভূমি নিবন্ধনের সময় ২ ঘণ্টা নেমে আসবে। অন্যান্য ক্ষেত্রে আইন সংশোধন হচ্ছে।
অর্থ সচিব বলেন, এখন যেসব সমস্যা রয়েছে তা সংশোধনের কাজ চলছে। বাণিজ্য বিরোধ নিষ্পত্তি বিষয়ক আদালত প্রতিষ্ঠা এবং বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ঝুঁকির প্রোফাইল তৈরির মাধ্যমে বর্ডার কমপ্লায়েন্সে কার্যকর পরিদর্শন ব্যবস্থা প্রণয়ন করা হবে। এগুলো হলে মানদণ্ডে অনেক এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ।