স্টাফ রিপোর্টার, news39.net: একটা সময় বিদায় অনুষ্ঠান মানে ছিলো আনন্দ – বেদনার মিশ্রণ। পরবর্তী নতুন জীবনে পদার্পণের আনন্দ আর বিদায়ী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছেড়ে যাওয়ার বিরহ-বেদনা। বিদায়ের এই দিনে শিক্ষকদের থেকে দোয়া নেয়া, প্রিয় ক্যাম্পাস, শিক্ষক ও বন্ধুদের ক্ষত চোখকে অশ্রসজল করতো। কিন্ত বর্তমানে বিদায় অনুষ্ঠানের নামে র্যাগ ডে প্রচলন করে দোহারে হচ্ছে উচ্ছৃংখলা ও বেহায়াপনা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনার মুখে পড়েছেন আগত অতিথিসহ শিক্ষকেরা।
(দুঃখজনকভাবে কারিগরি ত্রুটির কারণে প্রথম নিউজটি প্রকাশের পর, সেটি আর প্রদর্শন করছে না। একইসাথে বিভিন্ন গ্রুপ ও পেজের লিংক শেয়ার থেকে ভিডিও উঠিয়ে নেয়া হয়েছে; তবুও পাঠকদের স্বার্থে news39.net পুনরায় আপলোড দিয়েছে।)
এক শিক্ষার্থীকে পানিতে ফেলে দেয়া হচ্ছে, তার ভিডিও লিংক।
https://www.facebook.com/groups/239629123806320/permalink/566641387771757/
দোহারে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের মাঝে বিবেকের পরাজয় ও রুচি কতটা নিুগামী হয়ে পড়েছে যে অশ্লীল গালিগালাজ, শব্দ চয়ন, উদ্দাম নৃত্য-ই হয়ে উঠেছে এইদিনের মূল বিষয়।
দেখুনঃ উগ্র গানের সাথে পদ্মা সরকারী কলেজে অশ্লীল নৃত্য।
দেখুনঃ উগ্র গানের সাথে জয়পাড়া কলেজে নৃত্য।https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=660014878490697&id=100034465721971
দেখুন আরেকটি ভিডিও।
https://www.facebook.com/100033152651408/videos/268380045230353/
শিক্ষকদের উপদেশ মূলক বক্তব্য, দোয়া মাহফিলেও তারা হাসি-তামাশায় সময় পার করছে। সরেজমিনে, কয়েকটি কলেজ ও স্কুলের বিদায় অনুষ্ঠানে এসব দৃশ্য দেখা যায়। অবচেতন মনে নতুন শিক্ষার্থীদের প্রতিদ্বন্দ্বী মনে করা। নিজের জীবনের কিছু অতৃপ্ত কামনা-বাসনা, মানসিক ও শারীরিক অতৃপ্তির বহিঃপ্রকাশ ঘটায় নতুনদের প্রতি ভিন্নধর্মী আচরণের মাধ্যমে।
তবে কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শুদ্ধাচার ও সুন্দর অনুষ্ঠানও দেখা গিয়েছে।
অভিভাবকদের মতে, এই যে কিছু বখাটে তরুণ-তরুণী র্যাগিংয়ের নামে কলেজে সবে পা দেয়া সতীর্থদের মধ্যে ভীতি ও ঘৃণা ছড়াচ্ছে, এর পরিণতি কী হচ্ছে? অনেকে এসব দুর্ব্যবহারে মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অনেকে একটি ঘৃণা ও অশ্রদ্ধা নিয়ে শিক্ষাজীবনের দিনগুলো পার করছে।
দেখুনঃ উগ্র গানের সাথে মুকসুদপুর শামসুদ্দিন শিকদার উচ্চ বিদ্যালয়ে নৃত্যঃ
যদিও র্যাগ ডে কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শেষ দিন নয়। তারপরও শেষ দিনটিকেই শিক্ষার্থীরা ‘র্যাগ ডে’ হিসেবে পালন করে। শেষ দিন হলো ‘সমাপনী দিবস বা বিদায়ী দিন’। এক র্যাগ ডেতে দেখা যায়, একজন শিক্ষার্থীর এক চোখে চশমা, অন্য চোখের চশমার গ্লাসটি ভাঙা, গায়ে ছেঁড়া গেঞ্জি, এক পায়ে প্যান্ট, অন্য পায়ের প্যান্ট অর্ধেক ছেঁড়া; তাকে নিয়ে সহপাঠীরা স্লোগান দিচ্ছে ‘স্যাক খেয়েছে আমার ভাই, মাইয়াগো রক্ষা নাই।’
দোহার উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন বলেন, আমি যেসব প্রতিষ্ঠানে গিয়েছি, সেখানে সুন্দর, সাদা-মাটাভাবে হয়েছে। তবে, আমরা অতিথিরা আসার পর যদি কোন উচ্চৃংখলা হয়ে থাকে, তবে এসব র্যাগ ডে আমি বন্ধ করে দিবো। আমি ঘৃণাভরে তা প্রত্যাখান করছি। আমরা এরকম কিছু হলে, তা প্রতিরোধ করবো।
মনোবিজ্ঞানী রহমান সজল বলেন, র্যাগ ডে মানে আনন্দের দিন। হৈ হুল্লোড় করে আনন্দ প্রকাশ করা। যদিও এটি ছিলো চ্যারিটি বা সেবামূলক কার্যক্রম। শিক্ষাজীবন সমাপ্তিতে কিংবা নতুনদের বরণের দিন র্যাগ ডে হিসেবে যেদিনই পালন করা হোক না কেন তা হতে হবে শিক্ষামূলক। সেখানে থাকবে সভ্যতার ছাপ। কিন্তু এর নামে কাউকে জ্বালাতন করা, অত্যাচার করা যা অনেকটাই অপসংস্কৃতির ছায়া। যদি অশ্লীলতামুক্ত র্যাগ ডে পালন করা যায়, তার মধ্য দিয়ে সামাজিক অনাচার ও দুর্বল দিকগুলো হাসি আনন্দের মধ্যে দিয়ে তুলে আনা যায় তাহলে তার মূল্য আছে। এসব বিষয়ে দোহারে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উঠেছে নিন্দার ঝড়।
দোহার – নবাবগঞ্জ সোশ্যাল মুভমেণ্টের সাংগাঠনিক সম্পাদক মাহমুদুল হাসান সুমন তার পেজে লিখেছেন, টি-শার্টগুলো জুম করে পড়ুন। শিক্ষার্থীদের রুচি এতো বিকৃত হয় কি করে? ছাত্র-ছাত্রীদের শাসনেও রয়েছে বিধি-নিষেধ।
রিফাত শেখ নামে একজন লিখেছেন, র্যাগ ডে এর নামে এই বেহায়াপনা অবিলম্বে বন্ধ করা উচিত। নয়তো আমাদের সমাজ ধ্বংসের পথে যাচ্ছে।
দিদার পাঠান লিখেছেন, আগের দিনে এসএসসি পরীক্ষার আগে সব স্কুলে “বিদায় অনুষ্ঠান ও দোয়া মাহফিল” এর আয়োজন করা হতো,,সেখানে উপস্থিত থাকতেন,,সম্মানিত শিক্ষক-শিক্ষিকা মন্ডলী,,ম্যানেজিং কমিটির সম্মানিত সদস্যরা,,এলাকার সম্মানিত মুরুব্বিরা,, স্যারেরা বক্তব্য দিতেন,বিদায়ী ছাত্র-ছাত্রীদের থেকে দুই-তিনজন বক্তব্য দিতো,,জুনিয়র ব্যাচের দুই-একজনও বক্তব্য দিতো,,,পুরাই আবেগঘন পরিবেশ থাকতো,,,সবার মন খারাপ থাকতো,,,১০ বছর এই স্কুলে থাকাকালীন কতো স্মৃতি জড়ানো, এসব ছেড়ে চলে যেতে হচ্ছে!!!! বক্তব্য শেষে,,ধর্মীয় শিক্ষককে দিয়ে মোনাজাত ধরানো হতো,,পরীক্ষার্থীদের জন্য দুয়া করতো সবাই, কিন্তু বিগত ২-৩ বছর ধরে স্কুলে বিদায় অনুষ্ঠান বিলুপ্ত হয়ে গেছে, এখন ডিজিটাল পোলাপান #Rag_Day নামক এক বেহায়াপনা কৃষ্টি চালু করছে!!! সেখানে,,দুয়া করা ত দূরে থাক,,সাউন্ড সিস্টেম এনে ছেলে-মেয়ে একসাথে নাচানাচি,, মনে হয় বিয়ে বাড়ি আবার,,,তারা সাদা টি-শার্ট নিয়ে আসে সবার জন্য,, মার্কার দিয়ে একজন আরেকজনের সেই টি-শার্টে অশ্লীল কথাবার্তা লিখে!!! এগুলো কি স্মার্টনেস??? এগুলো তো,,নৈতিক অবক্ষয় ছাড়া কিছুই না!!! আমার আফসোস একটাই,,, কালের বিবর্তনে কি স্কুলের স্যার-ম্যাডামদের নৈতিকতা লোপ পাচ্ছে??? তা নাহলে,ওনারা কেন এসব করার পারমিশন দেন!!!! আর,,স্কুলের ম্যানেজিং কমিটিইই বা কি করে এসব প্রশ্রয় দেন এখনও সময় আছে,,এসব নোংরামি কালচার বন্ধ করে আগের মতো “বিদায় অনুষ্ঠান ও দোয়ার মাহফিল” এর প্রচলন চালু করেন,,নাহয় ভবিষ্যৎ খুব ভয়াবহ ফলাফল অপেক্ষা করছে।
সচেতন অভিভাবক মহল তাকিয়ে আছে এখন প্রশাসনের দিকে।