দীর্ঘদিন যাবত একটি বিষয়ের উপর লেখার মাধ্যমে যথাযথ কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ ও জনমত গঠনকল্পে আমাদের রাজনৈতিক এবং সামাজিক নেত্রীবৃন্দকে ঐক্যবদ্ধ করার লক্ষ্যে চিন্তাভাবনা করছিলাম। কিন্তু রাজনৈতিক এবং সামাজিক পরিবেশ পরিস্থিতি ও মহামারির এই অস্বাভাবিক সময়ে অনেক কিছু থেকেই বিরত থাকতে বাধ্য হচ্ছিলাম।
প্রকৃতিকে যখন তার স্বাভাবিক গতিপথে প্রাকৃতিক নিয়মকে চলতে বাঁধাগ্রস্থ করা হয়,তখনই পরিবেশ বিপর্যয় ডেকে আনে। আমাদের প্রিয় দোহার উপজেলা প্রকৃতির এক নৈসর্গিক স্নিগ্ধতা ও শুভ্রতায় পূর্ণ সমারোহে দাঁড়িয়ে আছে আমাদের হৃদয়ের মণিকোঠায়। যার পশ্চিমে বয়েচলা উত্তাল পদ্মা নদী আর পূর্ব দিকে অপরূপ আরিয়েল বিল। এই পদ্মা আর আরিয়েল বিলের প্রাকৃতিক সেতুবন্ধনে অসংখ্য খরোস্রতা খাল যার মধ্যে বর্ষায় বয়ে চলা পলি আর মৎস সম্পদের অবাধ বিচরণ। আমি যেহেতু কবি-সাহিত্যক নই তাই প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের চমৎকার বিবরনে আপনাদের মনকে বিমোহিত করতে পারছি না চরম ইচ্ছা সত্যেও।
মূল উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা এবং সর্বোপরি সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ পাশাপাশি জোড়ালো মতামত তুলে ধরা জরুরী এবং সময়ের দাবী বলে মনে করছি। দোহার উপজেলার ভৌগলিক অবস্থান উত্তর ও দক্ষিণে দীর্ঘ যার পূর্ব পশ্চিমে যথাক্রমে আরিয়েল বিলে এবং পদ্মা নদী। আমাদের প্রধান সড়ক (Dhaka to Dohar)মুকসুদপুর থেকে নয়াবাড়ী পর্যন্ত বিস্তৃত এই প্রধান সড়কটিতে একসময় অসংখ্য অগণিত খাল চলমান ছিলো,যাহা পদ্মা আর আরিয়েল বিলের প্রাকৃতিক সেতুবন্ধন হিসেবে গণ্য করা হয়। যায় উপরে ছিলো কাঠের তৈরি অসংখ্য পুল কিছু কিছু জায়গায় ছোট্ট খালগুলিতে বাঁশে সাঁকো আর নৌকায় পারাপার।
পঁচাত্তর এর জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পরে তৎকালিন সরকার ও তাদের রাজনৈতিক ভুল সিদ্ধান্তে এইসব খালগুলি একসময় তথাকথিত উন্নয়নের ধোঁয়া তুলে মাটি ভরাট করে বন্ধ করে দেওয়া হয়। যার ফলস্রতিতে বর্ষা মৌসম এলেই পদ্মার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সাথে সাথে সারা দোহারে প্রধান বড় সড়কের পশ্চিমাঞ্চলের অসংখ্য সাধারণ জনগণের চরম দুর্ভোগ দুঃখ দুর্দশা শুরু হয়ে যায় যাহা অবর্ণনীয় হৃদয়বিদারক কষ্টেরবিষয়। আবার পানি কমার সাথে সাথে শুরু হয়ে যায় পদ্মার নদী ভাঙন।এই চরম দুর্যোগপূর্ণ কঠিন নির্মম নিষ্ঠুর অসহায় মানুষের জন্য সহমর্মিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়া অত্যন্ত জরুরী এবং গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এই সমস্যা হচ্ছে শুধুমাত্র দূরদর্শী অপরিকল্পিত নগরায়ন বা অবৈজ্ঞানিক ভাবে উন্নয়ন আর অগ্রগতি নামে প্রকৃতিকে বাধাদান করার মধ্যেদিয়ে। কারণ এই খালগুলি যদি খোলা থাকতো তবে বর্ষাকালে পূর্ব-পশ্চিমের পানি সমতায় থাকতো,তাহলেই প্রকৃতির ভারসাম্যের কোন সমস্যা সৃষ্টি হতো না। প্রাকৃতিক ভারসাম্য বিনষ্ট হওয়ার কারণেই নদী ভাঙন থেকে দোহারবাসী শতচেষ্টার পরেও রক্ষা পাচ্ছে না।
এই অগণিত খালগুলি খোলা থাকলে প্রাকৃতিক মৎস অবাধ বিচরণের সুযোগ পেত এবং পদ্মা-আরিয়েল বিলের প্রাকৃতিক মৎস সম্পদের অভয়ারণ্য আবার ফিরে পেতে পারতো দোহার নবাবগঞ্জের জনগণ। তাই সুস্থ সুন্দর এবং নিরাপদ আগামীর জন্য নতুন প্রজন্মকে আধুনিক এবং প্রাকৃতিক সুযোগ সুবিধায় সুন্দর ভবিষ্যত ফিরিয়ে দিতে, অনতিবিলম্বে মুকসুদপুর থেকে নয়াবাড়ী পর্যন্ত বিস্তৃত সড়কের প্রধান প্রধান খালগুলি খুলে দিয়ে সময় উপযোগী ব্রীজ কালভার্ট নির্মাণ করে, প্রাকৃতিক পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার মধ্য দিয়ে দোহার উপজেলাকে বাসযোগ্য আধুনিক সুষম উন্নয়নের মহাপরিকল্পা গ্রহণের জন্য প্রিয় নেতা প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা দোহার নবাবগঞ্জের গণমানুষের আশা আকাঙ্খা ও প্রত্যাশার প্রতীক জনাব সালমান এফ রহমান এমপিকে সবিনয়ে অনুরোধ করছি।
পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এবং সমাজের সচেতন নাগরিকদের সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করছি আপনাদের মূল্যবান মতামত প্রদানের মাধ্যদিয়ে জনমত গঠনে।
আহমেদ মাসুদ মোল্লা
সাংগঠনিক সম্পাদক
ঢাকা জেলা যুবলীগ