শিরক অর্থ হচ্ছে– অংশীদার, মিশ্রণ, সংমিশ্রণ, একটি বস্তুর মালিকানায় দু’জনার অংশীদারিত্ব প্রতিষ্ঠা করা।
ইসলামী শরিয়তের পরিভাষায়- আল্লাহ তায়ালার সাথে অন্য কাউকে অংশীদার করাকে শিরক বলা হয়। আর মুশরিক অর্থ- যে আল্লাহর ক্ষমতায় অন্য কারো অংশীদারিত্ব সাব্যস্ত করল।
শিরকের বিবরণ
মানুষ বিভিন্ন কথা ও কাজের মাধ্যমে আল্লাহর সঙ্গে শিরক করে ফেলে এমন কিছু কাজ ও কথার বিবরণ তুলে ধরা হলো এখানে-
>> আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে ইবাদতের যোগ্য মনে করে করা।
>> মানুষকে দেখানোর জন্য কোনও ইবাদত করা। যেমন- রিয়া অর্থাৎ লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে কোনো ইবাদত বন্দেগি করা।
>> কোনও বুজুর্গ বা পীর সম্পর্কে এমন বিশ্বাস ও ধারণা রাখা যে তিনি সবসময় আমাদের অবস্থা সম্পর্কে জানেন।
>>জোতির্বিদ, গণক, ঠাকুরদের কাছে অদৃষ্টের কথা জিগেস করা।
>>আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো বা কিছুর নামে শপথ করা।
হজরত সাঈদ ইবনে আবু উবাইদাহ রহ: থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আব্দুল্লাহ ইবনে উমার রা: এক ব্যক্তিকে এভাবে শপথ করতে শুনলেন, ‘না! এ কাবার শপথ।’ তখন ইবনে উমার রা: তাকে বললেন, আমি রাসূলুল্লাহ সা:-কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি আল্লাহ ছাড়া অন্য কিছুর নামে শপথ করল, সে শিরক করল (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস-৩২৫১)।
>>কোনও পীর-বুজুর্গকে দূরদেশ থেকে ডাকা এবং মনে করা যে, তিনি তা শুনতে পেয়েছেন।
>> কোনও পীর বুজুর্গ, জিন-পরী বা ভূতকে লাভ-লোকসানের মালিক মনে করা।
>> কোনও পীর বুজুর্গের কবরের কাছে গিয়ে সন্তান চাওয়া।
>> পীর বুজুর্গের কবরকে সিজদা করা।
পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘তুমি আল্লাহর সাথে অন্য ইলাহকে ডেকো না। তিনি ছাড়া অন্য কোনো ইলাহ নেই। আল্লাহর সত্তা ব্যতীত সব কিছু ধ্বংসশীল। বিধান তাঁরই এবং তাঁরই নিকট তোমরা প্রত্যাবর্তিত হবে (সূরা কাসাস, আয়াত ৮৮)।
>>কোনও পীর বুজুর্গের নামে শিরনি, সদকা বা মানত করা।
>> আল্লাহর আদেশ ছেড়ে অন্য কারো আদেশ বা সামাজিক প্রথা পালন করা।
>> মহররমের তাজিয়া মিছিল করা।
>> কোনও সময়, মুহূর্ত, দিন বা মাসকে অশুভ মনে করা।
>> কোনও ব্যক্তিকে সম্বোধন করে এভাবে বলা যে, উপরে খোদা নিচে আপনি।
>>কারও নামে কসম করা বা জিকির করা।
>> কোনও বুজুর্গের ছবিকে সম্মান করা বা কারো মূর্তি রাখা। (গুনাহের বিবরণ ও মুক্তির পথ, ৪–৫)