দোহার-নবাবগঞ্জে ইয়াবার ছড়াছড়ি

698

 

ঢাকার দোহার নবাবগঞ্জ উপজেলায় বর্তমান সময়ে মাদক আসক্ত ব্যক্তিদের কাছে একটি অতিপরিচিত নাম  ইয়াবা যার  কদর  বাড়ছে প্রতিদিন এ অঞ্চলে।  ফলে বৃদ্ধি পাচ্ছে ইয়াবা ব্যবসায়ীর সংখ্যাও। ইয়াবার কারনে যুব সমাজ আজ বিপথগামী। ভালো ভালো ছেলে-মেয়েরা ইয়াবায় আসক্ত হয়ে পড়ছেন শিক্ষার্থী, বেকার যুবক থেকে শুরু করে এ তালিকায় রয়েছেন চাকরীজীবি, রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেনীপেশার মানুষ।

ইয়াবা সেবনকারীরা প্রায় নেশারত অবস্থায় চলাফেরা করে  ফলে অনিচ্ছ সত্বেও অপরাধমূলক কর্মকান্ডের সাথে  জরিয়ে পরে। ইয়াবার বিষাক্ত ছোবলে অকালে ঝরে যাচ্ছে যুবসমাজ। ইয়াবার টাকা জোগাড় করতে কেউ কেউ বেছে নিচ্ছেন চুরি, ছিনতাই মতো কাজও।

আর ইয়াবার জোগান দিতে অন্তত দুই শতাধিক উপর পাইকার ব্যবসায়ী আছেন দু উপজেলায়। পাইকার ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ইয়াবা নিয়ে গ্রাহকের কাছে পৌছে দিচ্ছে খুচরো বিক্রেতারাগণ।

আর এসব অবৈধ মাদক ব্যবসায়ী ও বিক্রেতার কাছ থেকে মাসোয়ারা নিয়ে অবাধে ব্যবসা করার সুযোগ দিচ্ছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কিছু অসাধু সদস্য। আবার ইয়াবা বিক্রেতাকে আটকের পর টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেয়ার ঘটনাও কম ঘটেনি এই দু উপজেলায়। ‘গ্রেফতার বানিজ্য’ করে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়েছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অসাধু সদস্য। টাকা না দিলে তাৎক্ষনিকভাবে ভ্রাম্যমান আদালতে সোপর্দ করে জেল-জরিমানা করে দায়িত্ব শেষ করছে সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তারা।

অন্য খবর  নবাবগঞ্জে ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে চাল ও অর্থ বিতরণ

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক  ইয়াবা ব্যবসায়ী বলেন, দোহার ও নবাবগঞ্জের  খুচরো ইয়াবা ব্যবসায়ী  রয়েছে ২৮০ জন। ইয়াবা বিক্রির নির্দিষ্ট কিছু স্পট থাকলেও বেশিরভাগ খুচরা বিক্রেতা মোবাইলে যোগাযোগের পর নির্দিষ্ট স্থানে ইয়াবা পৌছে দেয়া হয়। ইয়াবার আগ্রাসনরোধে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারছে না আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। নবাবগঞ্জের এক রাজনীতিবিদ বলেন, ইয়াবা সব শ্রেনী পেশার মানুষের মাঝে ছড়িয়ে পড়েছে। ধ্বংশ করে দিচ্ছে তরুন প্রজন্মকে।

অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ভয়াল মাদকের গ্রাসে ধ্বংস-নিঃস্ব হয়ে পড়ছে একেকটি পরিবার। একই সঙ্গে মাদকাসক্তদের অকাল মৃত্যু কিংবা ভয়ানক রোগব্যাধির মাত্রা বেড়েই চলেছে। বিশেষ করে মাদকাসক্ত মানুষের মধ্যে ক্যান্সার, কিডনির রোগ, লিভারের রোগ, হৃদরোগ, শ্বাসকষ্ট, উ”চ রক্তচাপ, মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ, বিকলাঙ্গতার ঝুঁকি সবচেয়ে  বেশি বলে জানান জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

ঢাকা জেলার সহকারী পুলিশ জানান, ইতিমধ্যে অনেক ইয়াবা ব্যবসায়ী ও সেবনকারীকে ধরে ভ্রাম্যমান আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। নিয়মিত মামলাও হরচ্ছ অনেকের বিরুদ্ধে। কোন পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে যদি মাদকের সঙ্গে সংশ্লিষ্ঠতার অভিযোগ পাওয়া যায় বা মাসোয়ারার নেয়ার  অভিযোগ আসে তাকে ছাড় দেয়া হবে না। মাদক পুরোপুরি নির্মূল করা সম্ভব নয়। তবে নিয়ন্ত্রনে রাখা সম্ভব আমরা চেষ্টাই করছি।

আপনার মতামত দিন