সালমান এফ রহমানঃ আধুনিক দোহারের স্বপ্নদ্রষ্টা

2177

রোমান সম্রাট জুলিয়াস সিজার গ্রীক বিজয়ের পর লিখেছিলেন, “Veni, vidi, vici” অর্থাৎ আসলাম, দেখলাম এবং জয় করলাম। দোহারের রাজনীতি ও সামাজিক ক্ষেত্রে সালমান এফ রহমানের অবস্থানও এরকম। ছাত্রজীবনে Stephen Hawking এর বন্ধু আর রুমমেট, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর জামাল নজরুল ইসলাম কেন ক্যামব্রিজ থেকে দেশে ফিরে এসেছিলেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছিলেন, “আমি নিজ দেশকে ভালোবাসি, এ জন্য এখানে চলে এসেছি। আমি আমার দেশকে ভালোবাসি, আমি এখান থেকে নিতে আসিনি, আমি দিতে এসেছি।”

সালমান এফ রহমান ২০০১ সালে যেমন দোহারের মানুষের সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়ে ছিলেন আধুনিক জীবন ধারার।  মানুষের মাঝে সৃষ্টি করতে পেরেছিলেন আর্সেনিক নিয়ে সচেতনতা। পুরো দোহারে এসময় ফজলুর রহমান ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে ২৩৮টি আরসেনিকমুক্ত টিউবওয়েল প্রদান করেছিলেন। ১৭টি স্কুলে কম্পিউটার প্রদান, ৭০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান, ১৫টি মাদ্রাসাকে অর্থ সহায়তা, প্রায় ১০০টি কাঁচা টয়লেটকে পাকা টয়লেটে পরিণতকরণ, ৩০০ মেয়েকে বিয়েতে সাহায্য প্রদান,  , ৫০০ জনকে সরাসরি মেডিক্যাল সহায়তা প্রদানসহ, গরীব-নিঃস্বদের মাঝে স্বাবলম্বী করতে ৮৫টি রিকশা বিনামূল্যে প্রদান করেন।

এবারো দোহারে তিনি আসলেন একরাশ আশা ও স্বপ্ন নিয়ে। পদ্মার কড়াল গ্রাসে ক্ষতবিক্ষত দোহার যখন অস্তিত্ব হারানোর মুখে, যখন নিজেদের বাঁচাতে, ভিটে-মাটি রক্ষা করতে আন্দোলনে মুখর তরুণদের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার সংগঠন DNSM, যখন পদ্মা বাঁধ শুধুই রাজনৈতিক নেতাদের নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়ার উপলক্ষ, তখনই দোহারের সব হারানোর মানুষের পাশে এসে আবার উপস্থিত সালমান এফ রহমান। উপজেলা নির্বাচনে দোহারের মানুষের কাছে তার দলীয় প্রার্থী আলমগীর হোসেনকে নিয়ে চষে বেড়ালেন দোহারের এই প্রান্ত থেকে সেই প্রান্ত। দোহারের পদ্মা পাড়ের সর্বশান্ত  মানুষকে দিলেন পদ্মা বাঁধের প্রতিশ্রুতি।

অন্য খবর  কৈলাইলে মসজিদ কমিটি নিয়ে সংঘর্ষ; র‌্যাবের অভিযানে টেঁটা জুতি রামদা উদ্ধার

নির্বাচিত হলেন আলমগীর হোসেন। এবার পালা তার প্রতিশ্রুতি পূরণের। নির্বাচনের পর  ঝটিকা সফরে বাহ্রা ঘাটে উপস্থিত হন পরিকল্পনা মন্ত্রী মোস্তফা কামালকে সাথে নিয়ে। বাহ্রা ঘাটে এসে বাধ নির্মাণের জন্য ১০০০ কোটি টাকা বরাদ্দের ঘোষনা দিয়ে যান মোস্তফা কামাল। এর পরের দিনই বাহ্রা অরঙ্গাবাদ বাঁধের জন্য প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে একনেকে ১ম ধাপে পাশ হয় ২১৭ কোটি টাকা। যার টেন্ডার প্রক্রিয়াধীন। এতে ভাঙ্গন থেকে রক্ষা পাবে দোহারের নয়াবাড়িসহ বিস্তৃন অঞ্চল। কর্মসংস্থানসহ জীবিন মান উন্নয়ন হবে ঢাকা দক্ষিণের।

এরপর সালমান দোহারকে একটি আধুনিক উপজেলা হিসাবে পরিণত করার জন্য সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন মুলক কর্মসূচি নিয়ে নিয়মিত হাজির হতে থাকেন। কার্তিকপুরের মৈনট ঘাটে জাপানি / কোরিয়ান ইপিজেড তৈরি করার সম্ভাবতা যাচাই করার জন্য বিদেশী ব্যবসায়ীদের নিয়ে হেলিকপ্টারে চলে আসলেন দোহারে। ২৩শে অক্টোবর, ২০১৫ সালমান এফ রহমান হটাৎ – ই  ২ জন বিদেশী বিনিয়োগকারী নিয়ে দোহারের মৈনটঘাটে আসেন। সেখানে ২০ মিনিট অবস্থানের পর তিনি আবার ঢাকার উদেশ্যে দোহার ত্যাগ করেন।

এসময় তিনি বলেন, “আমি উপজেলা নির্বাচনের সময় বলেছিলাম পদ্মাপাড়ে পর্যটন পল্লী গড়ে তোলা হবে। তাই আমার সাথে করে আমি দুজন বিদেশী বিনিয়োগকারী নিয়ে এসেছি। তারা দোহারের পদ্মাপাড় দেখে বিনিয়োগ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। আর আমাদের সরকারও এখানে পর্যটন পল্লী গড়ে তুলতে আগ্রহী। তাই আমরা খুব তাড়াতাড়ি এটা সম্পূর্ন করতে পারব।“

এছাড়া এই গ্রুপটি সাথে নিয়ে তিনি সেখানে J-EPZ  করবেন বলেও জনশ্রুতি রয়েছে। ফলে দোহার হয়ে ঊঠবে আধুনিক সিঙ্গাপুরের আদলে এক আধুনিক পরিকল্পিত পর্যটন কিন্তু শিল্প অঞ্চল। এছাড়া অপার সম্ভাবনা নিয়ে রয়েছে বঙ্গবন্ধু বিমানবন্দর ও স্যাটেলাইট শহর। এছাড়া মৈনটে হবে ‘বনভোজন পার্ক”। ফলে আর হয়তো বিদেশ নয় ; হাজার হাজার মানুষের কর্মসংস্থানে মুখর হয়ে উঠেবে দোহার, সমৃদ্ধ হয়ে উঠবে ইতিহাসের শেরশাহের “গ্র্যান্ড ট্রাংক” রোড খ্যাত দোহার-নবাবগঞ্জ জনপদ। প্রায় ৩০০০ বিঘা জমির উপর গড়ে উঠবে এই EPZ  ও ‘বনভোজন পার্ক”।

অন্য খবর  অগ্রগতির পথ এত মসৃণ ছিল নাঃ সালমান এফ রহমান

এবার দোহার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সফরে এসে বললেন, “দোহারের মানুষের স্বাস্থ্য সেবা আরো সহজলভ্য করার জন্য ও সরকারি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স যেন দরিদ্র মানুষের জন্য আরো উন্মুক্ত ও আরো বেশি স্বাস্থ্য সেবা পাওয়া যায় সেজন্য দোহার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ৫০ শয্যা থেকে ১০০ শয্যায় উন্নত করার কাজ চলছে।“ এসময় সকল চিকিৎসকের উপস্থিতি দেখে তিনি বলেন, আজকের মতো যদি প্রতিদিন সব চিকিৎসক উপস্থিত থাকতো তবে দোহারের কাউকে বিনা চিকিৎসায় মরতে হতো না। আমি বুঝি আজ আমি দোহারে আর তাই সবাই উপস্থিত। এ সময় উপস্থিত ছিল ঢাকা জেলা ডিসি, ঢাকা জেলা সিভিল সার্জন। দোহার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অনুষ্ঠিত মিটিং এ তিনি ঘোষনা দিয়ে গেছেন অচিরেই শুরু হবে দোহার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কাজ। আরো বেশি ডাক্তার, নার্স নিয়োগ দিয়ে দোহার উপজেলার দরিদ্র মানুষের আরো কাছে স্বাস্থ্য সেবা পৌছে যাবে এর ফলে।

দোহারের মানুষের জন্য সালমান এফ রহমান যখনই এসেছেন কিছু নিয়ে এসেছেন, কিছু পরিস্থিতি বদলে দিয়ে গেছেন। এবারো তার ব্যতিক্রম হয় নি। দোহারের মানুষ তাদের অন্যতম প্রিয় মানুষকে মনে রাখবে কাজের মাধ্যমে, এটাই সালমানের প্রত্যাশা।

আপনার মতামত দিন