আমি বধু সেজে থাকবো তুমি পালকি নিয়ে এসো এ গানটির কথা ও সুর বিভিন্ন সময় বেঁজে উঠলেও এখন আর কেউ বরযাত্রী ও বরের সাথে পায়ে হেঁটে নবাবগঞ্জ দোহারের কোন গ্রামে নববধূকে নিয়ে আসার জন্য যায় না । রাস্তাঘাট ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি এবং পরিবর্তনের ফলে মানুষ পালকির ব্যাবহার ছেড়ে দিয়েছে এর ফলে পালকি কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে ।
বাঙ্গালির বহুদিনের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির এ পালকি বাহন।এক সময় বিয়ে বাড়িতে বিবাহের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হলে পালকিতে করে বর ও নববধূকে নিয়ে আসা হতো ছেলের বাড়িতে। পালকি ছিল গ্রামের ছেলে ও মেয়েদের বহুদিনের লালায়িত প্রেম, প্রীতি আর অমোঘ ভালবাসা বাস্তবায়নের চির সঙ্গি।গ্রামের মেয়েরা মনের অজান্তে গাইতো বধু সেজে থাকবো তুমি, পালকি নিয়ে এসো গান । পালকি বাহনের পেশাকে ঘিরে বেয়ারা সম্প্রদায় নামে আলাদা একটা সম্প্রদায়ও গড়ে উঠেছিল। হেলে-দুলে পালকি নিয়ে চলতে বেয়ারারা ‘হেইয়াহ হেইয়াহ’ রব তুলে পথিকের দৃষ্টি আকর্ষণ করতো। মাত্র কয়েক বছর পূর্বে গ্রামের বিয়ের বর-বধুকে বাহনের অন্যতম বাহন ছিল এই পালকি। পালকির সঙ্গে মিশে ছিল মধুময় এক স্বপ্ন। গায়ের পথে পালকি করে নববধুকে নিয়ে যাওয়ার দৃশ্য দেখতে গ্রামের ছেলে-মেয়েরা রাস্তায় আর বৌ-ঝিয়ের বাড়ির ভিতর থেকে উঁকি-ঝুকি মারত। পালকির মধ্যে বসা বৌকে দেখে তারাও হারিয়ে যেত কল্পনার রাজ্যে।
বর্তমানে পালকি নবাবগঞ্জ উপজেলার বারুয়াখালী ছাড়া অন্য কোথাও এখন আর দেখা যায় না। বর্তমানে পালকির প্রচলন না থাকায় এ পেশার সাথে জড়িত বারুয়াখালীর মোঃ ফজল বলেন একসময় আমাদের কদর ছিল অর্থ ও ছিল আজ শুধু ইতিহাস তাই জীবন-জীবিকার তাগিদে অন্যান্য পেশা বেছে নিয়েছি আমরা।