তুরস্কের সবচেয়ে বড় নগরী ইস্তানবুলের ঐতিহাসিক হাজিয়া সোফিয়ায় কোরআন তিলাওয়াত ও মোনাজাত করেছেন প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান।
শনিবার একটি উৎসবের উদ্বোধনী বক্তব্য দেয়ার সময় এরদোগান প্রথম কোরআনের কয়েকটি আয়াত তিলাওয়াত করেন। পরবর্তী সময় পূর্বপুরুষদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে মোনাজাত করেন। বিশেষ করে ইস্তানবুল বিজয়ীদের জন্য তিনি দোয়া করেন।
স্থানটি আন্তঃধর্মীয় ও কূটনৈতিক উত্তেজনার প্রতীক হিসেবে পরিচিত। ষষ্ঠ শতকে খ্রিস্টান বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের শাসনামলে হাজিয়া সোফিয়া নির্মাণ করা হয়েছিল। তখন এটি গ্রিক অর্থোডক্স গির্জা হিসেবে ব্যবহার করা হতো।-খবর ইন্ডিপেন্ডেন্ট ও নিউ ইয়র্ক টাইমসের।
কিন্তু ১৪৫৩ সালে উসমানীয় খলিফাদের কাছে কনস্টান্টিনোপেলের পতন ঘটলে সেটিকে মসজিদে রূপান্তরিত করা হয়।
১৯৩৫ সালে তুর্কি ধর্মনিরপেক্ষতাবাদের প্রতিষ্ঠাতা মসজিদটিকে জাদুঘর বানিয়ে ফেলেন।বর্তমান এরদোগান সরকারের আমলে সেটিকে ফের মসজিদের রূপে ফিরিয়ে আনা নিয়ে আলোচনা চলছে।
গত কয়েক বছর ধরে তুর্কি মুসলমানরা সেখানে নামাজ আদায় করছেন। তারা জাদুঘরটিকে মসজিদে রূপান্তরিত করার দাবি জানিয়ে আসছেন।
ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্যের স্বীকৃতিপ্রাপ্ত হাজিয়া সোফিয়ায় গেল ৮৫ বছরের মধ্যে ২০১৫ সালেই প্রথমবারের মতো একজন আলেম কোরআন পাঠ করেন।
এর পর থেকে তুরস্কের ধর্মীয় কর্তৃপক্ষ প্রতি বছর রমজানে সেখানে কোরআন পাঠ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেন।
এরদোগান বলেন, হাজিয়া সোফিয়ায় বক্তৃতা দেয়া খুবই কঠিন। এটি আমাদের আবেগের জায়গা। এটি আমাদের পবিত্র স্থান।
জায়গাটিকে ধর্মীয় কাজে ব্যবহার করায় গত গ্রীষ্মে প্রতিবাদ জানিয়ে গ্রিস বলেছে, এটি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবমাননা করার শামিল।
তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী গ্রিসের এই প্রতিবাদের নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, গ্রিস ঘটনাকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করছে।দেশটি মুসলমানদের ধর্ম পালনকে কঠিন করে তুলেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হিদার নুয়ার্ট বলেন, অন্য ধর্মাবলম্বীদের জন্যও হাজিয়া সোফিয়া তাৎপর্যপূর্ণ স্থান। জায়গাটির ঐতিহাসিক মর্যাদা রক্ষার জন্য তিনি তুরস্কের কাছে আহ্বান জানিয়েছেন।