সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জবাব গোপন ব্যালটে দেবেন ভোটাররাঃ সালমা ইসলাম

223
সালমা ইসলাম

ঢাকা-১ আসনের (দোহার-নবাবগঞ্জ) স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম বলেছেন, আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দোহার-নবাবগঞ্জে নৌকার ক্যাডাররা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করে এলাকায় ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা করছে। আগামী ৩০ ডিসেম্বর দোহার-নবাবগঞ্জবাসী গোপন ব্যালটের মাধ্যমে এ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সমুচিত জবাব দেবেন।

তিনি বলেন, এ জন্য ভয়ভীতির ঊর্ধ্বে উঠে সবাইকে ভোট কেন্দ্রে আসার আহ্বান জানাই। শনিবার দোহারের ইউসুফ বাজার ও ধোপাবাড়ি মাঠের নির্বাচনী উঠোন বৈঠকে সালমা ইসলাম বলেন, মটরগাড়ি প্রতীকের প্রচার কাজে নৌকা প্রতীকের কর্মীরা নানাভাবে বাধা দিচ্ছে। মটরগাড়ি প্রতীকের প্রচারে নিয়োজিত দুটি গাড়িতে নৌকা প্রতীকের ক্যাডাররা হামলা করেছে।

অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম বলেন, এক সময় দোহার-নবাবগঞ্জ সন্ত্রাসের জনপদ ছিল। পাঁচ বছরে সেসব সন্ত্রাসী সিন্ডিকেট ভেঙে দিয়েছি। এখন নতুন করে সেসব সন্ত্রাসী আবার মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে। আগামী ৩০ ডিসেম্বরের ভোটে জনগণ আমাকে বিজয়ী করলে সন্ত্রাস নির্মূল করে শান্তির জনপদ তৈরি করব। তিনি বলেন, পাঁচ বছর ধরে দোহার-নবাবগঞ্জের মানুষের জন্য কাজ করেছি।

কখনও কারও সঙ্গে খারাপ আচরণ করেছি এমন কথা কেউ বলতে পারবে না। এলাকার জনগণ যখন কোনো সমস্যার কথা বলেছেন তখন পাশে দাঁড়িয়েছি। এলাকার স্কুল-কলেজ, মসজিদ, মন্দির, গির্জা এবং বিভিন্ন সামাজিক প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নে কাজ করেছি। সেই দাবি থেকে আবারও আপনাদের সেবা করার সুযোগ চাই। আপনাদের পাশে থাকতে চাই।

সাবেক মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী সালমা ইসলাম বলেন, রাজধানী ঢাকার খুব কাছাকাছি অবস্থান করেও দোহার ও নবাবগঞ্জের বাসিন্দারা গ্যাস সুবিধা থেকে বঞ্চিত। সরকারি নিষেধাজ্ঞা থাকায় পাঁচ বছরে গ্যাস সংযোগ দেয়া সম্ভব হয়নি। আগামীতে আবাসিক ভবনে গ্যাস সংযোগ চালু করা হলে এ এলাকার ঘরে ঘরে গ্যাস সংযোগ দেব। উন্নয়নের ধারাবাহিকতা ধরে রাখার সুযোগ দিতে তিনি মটরগাড়ি প্রতীকে ভোট প্রার্থনা করেন।

সালমা ইসলামের মটরগাড়ি প্রতীকের পক্ষে শনিবার নবাবগঞ্জের বান্দুরা বাজার, বাররুয়াখালী, নয়নশ্রীর তাশুল্লা বাঙলা বাজার এলাকায় নির্বাচনী সভা করেন যমুনা গ্রুপের চেয়ারম্যান ও মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম। এ সময় তিনি বলেন, দোহার-নবাবগঞ্জের মানুষ শান্তিপ্রিয়। গোলযোগ এখানকার মানুষ পছন্দ করে না। দেশের অন্যসব আসনে যেমনই ভোট হোক না কেন ঢাকা-১ আসনে ব্যতিক্রমী চিত্র থাকবে।

অন্য খবর  দোহারে আন্তজেলা ডাকাত সর্দার রনি গ্রেপ্তার

এ আসনের ভোট বিশ্ববাসীর কাছে গ্রহণযোগ্য হবে। আমরা প্রশাসনের কাছে ন্যায়সঙ্গত আচরণ দেখতে চাই। কোনো প্রার্থীর পক্ষে প্রশাসনের পক্ষপাতদুষ্ট ভূমিকা জনগণ মেনে নেবে না। এখন প্রতিদিনই প্রশাসনের পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ লক্ষ করা যাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, আগামী ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনে কারও কাছে মাথা নত করবেন না। নির্ভয়ে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেয়ার আহ্বান জানান শিল্পপতি নুরুল ইসলাম।

অ্যাডভোকেট সালমা ইসলামের স্বামী নুরুল ইসলাম আরও বলেন, দোহার-নবাবগঞ্জে পাঁচ বছরে সালমা ইসলাম অনেক উন্নয়ন কাজ করেছেন। আর এলাকাবাসীকে শান্তিতে রেখেছেন। দেশের বিভিন্ন এলাকায় হট্টগোল হলেও এ আসনে তেমন কিছুই হয়নি। দল, মত, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সবাইকে সমান দৃষ্টিতে দেখেছেন। আগামীতেও এলাকার উন্নয়ন ও শান্তির জন্য মটরগাড়ি প্রতীকে ভোট দেয়ার জন্য তিনি অনুরোধ জানান।

দোহার-নবাবগঞ্জে সালমা ইসলামের উন্নয়নযজ্ঞ : ১০ বছরে দোহার-নবাবগঞ্জের দুটি উপজেলায় প্রায় দুই হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ করেছেন অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম। স্বাধীনতার পর এ এলাকায় এত উন্নয়ন কাজ আর কখনও হয়নি। অনেকে মন্ত্রী, এমপি হলেও এলাকার উন্নয়ন করেননি, তবে তাদের ভাগ্যের উন্নয়ন ঠিকই করেছেন। অপরদিকে সালমা ইসলাম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে এলাকাবাসীর পাশে থেকেছেন, এলাকার উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করেছেন।

এলাকাবাসী জানান, ১০ বছর আগে ঢাকার সঙ্গে দোহার ও নবাবগঞ্জের ব্যাপক তফাৎ ছিল। কিন্তু অ্যাডভোকেট সালমা ইসলামের উন্নয়নযজ্ঞের ফলে অনেকাংশে বদলে গেছে এ অঞ্চলের আর্থসামাজিক চিত্র। পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও এখন উপার্জনমুখী কাজে সম্পৃক্ত হচ্ছেন। শিক্ষা ও চিকিৎসাসেবার জন্য এখন আর সব সময় শহরমুখী হতে হয় না। এলাকায় সরকারি স্কুল ও কলেজ হয়েছে।

অন্য খবর  দৌড়ে কখনো দ্বিতীয় না হওয়া এসিল্যান্ড সালমার গল্প

স্বাস্থ্যসেবার মানও বেড়েছে। এই দুই উপজেলায় কর্মসংস্থান বেড়েছে, কৃষি ক্ষেত্রেও বেশ এগিয়েছে। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে আরও জানা গেছে, আগে যেখানে ধান, পাট ও আখ ছাড়া অন্য কোনো ফসল আবাদ করতেন না কৃষকরা; কৃষি সচেতনতা বাড়ায় এখন অধিকাংশ কৃষক পরিবার বাণিজ্যিকভাবে করলা, শসা, লাউ, কুমড়া, বেগুন উৎপাদন করছে।

গ্রাম্য এলাকায় সড়কসহ নদীতে সেতু নির্মাণ হওয়ায় উৎপাদিত পণ্য উপজেলা সদরসহ রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে দ্রুত পাঠাতে পারছেন তারা। ফলে তাদের অর্থনৈতিক সচ্ছলতা ফিরেছে। এ জন্য জনগণ মমতাময়ী, জনদরদি, দোহার-নবাবগঞ্জের মাদার তেরেসাখ্যাত অ্যাডভোকেট সালমা ইসলামের প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞা প্রকাশ করেন

জানা গেছে, ১০ বছরে দোহার-নবাবগঞ্জে উচ্চশিক্ষার প্রসার লাভ করেছে। স্থানীয় সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট সালমা ইসলামের প্রচেষ্টায় ৮৫টি স্কুল-কলেজে ভবন নির্মিত হয়েছে। আরও প্রায় অর্ধশত স্কুল-কলেজে ভবন নির্মাণ টেন্ডার প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। ২২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার ল্যাব স্থাপিত হয়েছে। দোহার-নবাবগঞ্জ কলেজ, নবাবগঞ্জ পাইলট উচ্চবিদ্যালয় এবং জয়পাড়া পাইলট উচ্চবিদ্যালয় সরকারি হয়েছে। এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সরকারীকরণে সালমা ইসলাম ব্যাপক পরিশ্রম করেছেন। এতে করে ছাত্রদের শহরমুখী হওয়ার প্রবণতা কিছুটা হলেও কমতে শুরু করেছে। এ অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের নিজ এলাকায় উচ্চশিক্ষার পথ প্রসারিত হয়েছে। এসব কারণে সালমা ইসলামের প্রতি এলাকাবাসী কৃতজ্ঞ।

জানা গেছে, প্রবাসী অধ্যুষিত দোহার ও নবাবগঞ্জের অধিবাসীদের মধ্যে শহরকেন্দ্রিক চিকিৎসার প্রবণতা দেখা গেলেও এখন কিছু বিভিন্নতা লক্ষ করা যাচ্ছে। কারণ প্রায় এক কোটি টাকা ব্যয়ে নবাবগঞ্জ এবং দোহার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স আধুনিকীকরণ করা হয়েছে।

নবাবগঞ্জ ও দোহার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জন্য দুটি অ্যাম্বুলেন্স কেনা হয়েছে। গ্রাম পর্যায়ে ২২টি কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন, নবাবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডিজিটাল এক্স-রে মেশিন, আলট্রাসনোগ্রাম মেশিন, ডেন্টাল ইউনিট, মুক্তিযোদ্ধা কেবিন ও নতুন পানির পাম্প স্থাপন করা হয়েছে। দোহার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ইসিজি মেশিন, আলট্রাসনোগ্রাম মেশিন ও জেনারেটর স্থাপন করা হয়েছে।

আপনার মতামত দিন