মুজাহিদুল ইসলামের মতো শিক্ষকেরাই জীবনবোধ দিয়ে জাতিকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন

90

মোঃ আল-আমিন, স্টাফ রিপোর্টারঃ দোহারের পদ্মা সরকারি কলেজের প্রতিষ্ঠাকালীন শিক্ষক, হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মুজাহিদুল ইসলামের মৃত্যতে স্মৃতিচারণমূলক দোয়া অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে। আবেগঘন পরিবেশে বর্তমান এবং সাবেক শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে এক আবেগময় পরিবেশের সৃষ্টি হয়। প্রত্যেক শিক্ষকেরই এমন বিদায় ও স্মৃতিচারণ নিঃসন্দেহে তার লালায়িত স্বপ্ন।

তত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও বারডেম হাসপাতালের ন্যায়পাল মেজর জেনারেল (অবঃ) ডাঃ এআর খান প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, মুজাহিদুল ইসলামের মত মানুষ সবসময় পাওয়া যায় না। তাকে আমরা স্মরণ করছি। সে ছিলো আদর্শ শিক্ষক। দোহারের পদ্মা কলেজ প্রতিষ্ঠার সাথে তার নাম অংগাগিকভাবে জড়িত। তার যে চেতনা, মুক্ত চিন্তা, আদর্শিক সুশিক্ষার চেতনা নতুন প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের মধ্যে বর্তমান শিক্ষক যারা আছেন তাদের নিয়ে যেতে হবে। তিনি এমন একজন মানুষ, যিনি তার জীবনবোধ দিয়ে জাতিকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন। তিনি ছিলেন এই দোহারে নারিশা, মুকসুদপুর ইউনিয়নের একজন পথনির্দেশক।

সাবেক ইন্সপেক্টর জেনারেল অব রেজিষ্ট্রেশন (আইজিআর) জজ খান মোঃ মান্নান বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বলেন, মুজাহিদুল ইসলাম ছিলেন একজন পরিপূর্ণ আদর্শ শিক্ষক। বর্তমান প্রজন্মের শিক্ষকেরা অনেকেই আজ শিক্ষকতার আদর্শ ভুলে গেছে। তার হাত ধরেই পদ্মা কলেজের অনার্স ডিপার্টমেণ্ট খোলা হয়। আর সেই অনার্স ডিপার্টমেন্টে এইবার ২৫০ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ১২৫ জন প্রথম শ্রেণি পেয়েছে; যা আমাদেরকে গর্বিত করেছে। উচ্চতর শিক্ষার আলো বিকশত হয়েছে দোহার, নবাবগঞ্জ, শ্রীনগর উপজেলায়। তিনি যেমন ছিলেন বিনয়ী আবার তেমনি শিক্ষক – শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে বুক সটান করে দাঁড়িয়ে যেতেন। প্রতিদিন অধ্যবসায় করা, বিশ্ব পরিস্থিতি সম্পর্কে ছিলো সম্যক জ্ঞান।

অন্য খবর  দোহার-নবাবগঞ্জে উন্নয়নে রেকর্ড গড়েছিল জাতীয় পার্টি: সালমা ইসলাম

দোহার উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা এবং পদ্মা সরকারি কলেজের সভাপতি মোবাশ্বের আলম সভাপতির বক্তব্যে বলেন, একজন আদর্শিক, আধুনিক এবং শিক্ষা ও শিক্ষার্থীবান্ধব হিসেবে মুজাহিদুল ইসলাম যে শিক্ষকতা করে গেছেন, তা শিক্ষণীয় হয়ে আছে আমাদের জন্য।

পদ্মা সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জালাল হোসেন বলেন, আজ আমার ডান হাত ভেংগে গিয়েছে। আমি একজন অভিভাবক হারিয়েছি। মুজাহিদুল ইসলাম স্যার ছিলেন জ্ঞানতাপস। তিনি ছিলেন প্রাতিষ্ঠানিক, সামাজিক ও জাতির শিক্ষক। তিনি আমাদের বোধে, মর্মে ও স্মরণে সব সময় আছেন। তিনি ছোট বড় সব মানুষকে সম্মান দিয়েছেন। আর তাই সারাজীবন সম্মান পেয়েছেন। তার সৌন্দর্য হচ্ছে সরলতা। তিনি নিত্যনতুন জ্ঞান ও তথ্য দিয়ে আমাদেরকে অবাক করে দিতেন। আজকের এই দোয়াদিবসে তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। দোয়া করছি আল্লাহ তাকে জান্নাতুল ফেরদৌসের অধিকারী করুন।

উপস্থিত আছেন ১৯৯৬সালের তত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও বারডেম হাসপাতালের ন্যায়পাল মেজর জেনারেল (অবঃ) এ আর খান, সাবেক ইন্সপেক্টর জেনারেল অব রেজিষ্ট্রেশন (আইজিআর) জজ খান মোঃ মান্নান, দোহার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোবাশ্বের আলম, বাংলাদেশ ট্যাক্সেস বার এসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি এডভোকেট আজিজুর রহমান বাবুল, ঢাকা জেলা দক্ষিণ ছাত্রলীগের সভাপতি গিয়াসউদ্দিন সোহাগ, পদ্মা সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল জালাল হোসেন, আয়োজক কমিটির প্রধান সহকারী অধ্যাপক লুতফর রহমান, অনুষ্ঠানের সঞ্চালক ও হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক আলমগীর হোসেনসহ সকল শিক্ষক-কর্মচারি ও অসংখ্য শিক্ষার্থী এবং গুণগ্রাহী।

আপনার মতামত দিন