বালুর বস্তা ফেটে বালু নদীতে; মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাচ্ছে দোহারের নারিশা

825
নারিশা

৫০ হাজার জিও ব্যাগ ফেলেও রক্ষা করা যাচ্ছে না নারিশা ইউনিয়নকে। পদ্মার স্রোতে ও নিম্নমানের জিও ব্যাগের কারনে বালু বেড়িয়ে যাচ্ছে বস্তা থেকে। ফলে বস্তা ফেলেও রক্ষা করা যাচ্ছে না দোহারের নারিশা ইউনিয়নকে। ভাঙন ঠেকানোর কাজ দেখিয়ে লাখ লাখ টাকা ব্যয়ে বালু ফেলেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। কিন্তু তা কোন কাজেই আসেনি। নদীতেই ভেসে গেছে প্রকল্পের টাকা এমন অভিযোগ এলাকাবাসীসহ জনপ্রতিনিধিদের। কর্তৃপক্ষ বলছে, নদীভাঙন ঠেকাতে সাময়িক ব্যবস্থা নেয়া হয়। আর স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের জন্য প্রকল্প পাঠানো হয়েছে সংশ্লিষ্ট বিভাগে।

অন্য দিকে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ না হওয়ায় দোহারে পদ্মা নদীর ভাঙনে হুমকির মুখে রয়েছে হাজার ঘরবাড়ি, ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন অবকাঠামো।

পাউবো সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ১ মাস আগে পদ্মানদীর ভাঙন থেকে দোহার উপজেলায় নারিশাবাসী গ্রামের ঘরবাড়ি, শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, খেলার মাঠ, কবরস্থান, রাস্তাঘাটসহ বিভিন্ন অবকাঠামো রক্ষার জন্য প্রায় ৫০ হাজার জিও ব্যগ ফেলা হয়। কিন্তু কিছু দিন না যেতেই বস্তা ফেটে বালু নদীতে ভেসে যায়। বর্ষার আগেই আকস্মিকভাবে নদী ভাঙনে নারিশা পশ্চিম চর, মেঘুলা, নারিশা খালপাড় এলাকার হাজার হাজার ঘরবাড়ি, নারিশা ইউনিয়ন পরিষদ, মেঘুলা বাজার, মাদ্রাসা ও মসজিদ, নারিশা উচ্চ বিদ্যালয় ও প্রাথমিক বিদ্যালয়, মালিকান্দা মেঘুলা স্কুল অ্যান্ড কলেজসহ সরকারি, বেসরকারি স্থাপনা বিলীন হয়ে যাবে। নদী ভাঙন প্রতিরোধে ২০১৬-২০১৭ ও ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরে নারিশা পশ্চিমচর এলাকায় অস্থায়ী ভিত্তিতে কিছু কাজ হলেও গত ২০ জুন তারিখে অস্থায়ী কাজের বিভিন্ন স্থানে হঠাৎ পদ্মার গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। দ্রুত নদী ভাঙন রোধে ব্যবস্থা না নেয়ায় জনমনে নতুন করে আতঙ্ক বিরাজ করছে। কিন্তু এই বালু ফেলার প্রকল্পের খরচ হয়ে গেছে প্রায় দুই কোটি টাকা।

অন্য খবর  দোহারে চার ডাকাত আটক

পদ্মানদী ভাঙন কবলিত নারিশা পশ্চিমচর এলাকায় গেলে এলাকাবাসী জানায়, এ বছর বর্ষা শুরু হওয়ার আগ থেকেই তীব্র আকারে ভাঙন শুরু হয়েছে। নারিশায় এখন প্রতিমুহূর্তে সর্বনাশা রাক্ষুসী পদ্মানদী ভাঙন আতঙ্কে দিন কাটছে শত শত পরিবারের। এভাবে পদ্মানদী ভাঙতে থাকলে নারিশার ইউনিয়নের অবশিষ্ট গ্রাম পদ্মানদীর করাল গ্রাসে বিলীন হবে। গত কয়েক বছর ধরে সর্বনাশা পদ্মা ভাঙনের শিকার হলেও নারিশা এলাকার রক্ষায় সরকারের পক্ষ থেকে স্থায়ী কোন প্রকল্প এখন পর্যন্ত গ্রহণ করা হয়নি। অথচ নারিশাবাসী প্রতিনিয়ত তাদের ভিটেমাটি রক্ষার দাবি জানিয়ে আসছে, স্থায়ী প্রকল্প গ্রহণের মাধ্যমে পদ্মা ভাঙন থেকে দোহারের নারিশা পশ্চিমচরবাসীকে দ্রুত রক্ষা করার জন্য। জানা যায়, একনেকের বৈঠকে নয়াবাড়ি, নারিশা এলাকার ভাঙন রক্ষায় ১১৭ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদনের কাজ শেষ না হলেও হঠাৎ তীব্র ভাঙনে নারিশার জনগণ বাঁধ নির্মাণ কাজে রাজনৈতিক বিবেচনায় অর্থ ব্যয় না করে দোহারের বিভিন্ন ইউনিয়নের গ্রামের রক্ষায় সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং তত্ত্বাবধানে কাজ বাস্তবায়নের দাবি জানিয়ে আসছে।

মেঘুলা বাজার ওষুধ ব্যবসায়ী ডা. খালেক একই সুরে অভিযোগ করে বলেন, স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করা না হলে সরকারের টাকা এভাবে লুটপাট হবেই।

অন্য খবর  সদ্য বিদায়ী ইউএনওর সাথে নিউজ৩৯ ও ডিএনএসএমের বিদায়ী সাক্ষাৎ

নদীর ভাঙনের কবল থেকে এই বাঁধ কোন কাজে আসেনি বলে অভিযোগ করেন নারিশা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন দরানী।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগী প্রকৗশলী মো. মঈনুদ্দিন বলেন, ভাঙন ঠেকাতে জরুরিভাবে জিও ব্যাগ ফেলে সাময়িকভাবে বাঁধ দেয়া হয়েছে। স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের জন্য ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকার প্রকল্প প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে সংশ্লিষ্ট দফতরে। অনুমোদন পেলেই কাজ শুরু করা হবে।

আপনার মতামত দিন