প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেছেন, পরিকল্পনা অনুযায়ীই বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটেছিল। দৈবক্রমে বা দুর্ঘটনাবশত নয়। বাংলাদেশ গত দশ বছরে যে বিস্ময়কর উন্নতি করেছে, তা বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত। এমনি এমনি এই উন্নয়ন হয়নি। ব্যাপক এ উন্নয়ন করা সম্ভব হয়েছে কেবল স্বাধীনতার চেতনা পুনঃপ্রতিষ্ঠার ফলেই।
জুনিয়র চেম্বার ইন্টারন্যাশনাল (জেসিআই) বাংলাদেশ আয়োজিত ‘বাংলাদেশ লিডারশিপ কনক্লেভ ২০১৯- টুগেদার টুয়ার্ডস টুমরো’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। হোটেল লা মেরিডিয়েনে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে তরুণ উদ্যোক্তা, পেশাজীবী ও ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দকে তিনি বাংলাদেশের ইতিহাস ও স্বাধীনতার চেতনা নিয়ে অধ্যয়নের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, সমাজের সুবিধাপ্রাপ্ত শ্রেণির অংশ হিসেবে এ বিষয়ে ভাবা ও অধ্যয়ন করা আপনাদের দায়িত্ব।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্ব, প্রজ্ঞা ও দূরদৃষ্টির কারণেই বাংলাদেশ এতটা এগোতে পেরেছে। যে কোনো জাতির উন্নয়নের প্রথম ও প্রধানতম পূর্বশর্ত হলো নিজের ওপর বিশ্বাস রাখা। প্রধানমন্ত্রী জনগণের মধ্যে এই বিশ্বাস সঞ্চার করেছেন। বর্তমানে দেশ যেখানে এসেছে, সেটি তারই স্বাভাবিক ফলাফল মাত্র। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে কাজটি করেছেন তা হলো জাতীয় মননে স্বাধীনতার প্রকৃত চেতনা প্রোথিত করা। বিশ্বের খুব অল্প কয়েকটি দেশই স্বাধীনতা সংগ্রামের মধ্য দিয়ে স্বাধীন হয়েছে। এটি কোনো ছোটখাটো বিষয় নয়।
সালমান এফ রহমান আরও বলেন, যারা ‘৭৫-এর পর ‘৯৬ পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিল, তারা দেশের সবচেয়ে বড় ক্ষতি করেছে। ওই সময়ের ক্ষমতাসীনরা এই প্রচার চালাতে লাগল যে, বাংলাদেশ আসলে দৈবক্রমে সৃষ্টি হয়ে যায়, পরিকল্পনামাফিক নয়। তারা বলত যে, ভুট্টো যদি ‘৭০-এর নির্বাচনের পরপর পার্লামেন্টের অধিবেশন ডাকতে দিত, তাহলে বাংলাদেশ স্বাধীন হতো না! এতটাই ভয়াবহ ইতিহাস বিকৃতি তারা করেছিল। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সম্পর্কে তৎকালীন পাকিস্তানি গোয়েন্দাদের নথির ভিত্তিতে গ্রন্থিত বই ‘সিক্রেট ডকুমেন্টস অব ইন্টেলিজেন্স ব্রাঞ্চ অন ফাদার অব দ্য নেশন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’-কে উদ্ৃব্দত করে তিনি বলেন, অথচ এই নথিগুলো থেকে দেখা যাচ্ছে যে, বঙ্গবন্ধু সেই তরুণ বয়স থেকে, যখন তিনি একজন ছাত্রনেতা ছিলেন, তখন থেকেই বাংলাদেশের স্বাধীনতা নিয়ে চিন্তা করেছেন। প্রধানমন্ত্রী যেটা করেছেন সেটা হলো তিনি ইতিহাসের বিকৃতি সংশোধন করে দিয়েছেন। আর এ কারণেই বাংলাদেশের এই উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এখন চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সময়। এর ফলে যে চ্যালেঞ্জ বাংলাদেশের সামনে তৈরি হবে, তা হবে ভীষণ কঠিন। এ জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার জন্যও তিনি তরুণদের আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, এফবিসিসিআইর জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম। অনুষ্ঠানে জেসিআইর প্রেসিডেন্ট ইরফান ইসলাম, ভাইস প্রেসিডেন্ট আরমান এ খান ও নির্বাহী ভাইস প্রেসিডেন্ট আমজাদ হোসেন বক্তব্য রাখেন।