শরিফ হাসান, নিউজ৩৯: দোহার (ঢাকা) প্রতিনিধি: ঢাকার দোহার উপজেলায় স্ত্রীকে রামদা দিয়ে কুপিয়ে জখম করে স্বামী পালিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্বজনদের অভিযোগ এটি হত্যাচেষ্টা। স্ত্রী চন্দ্রবান জানান, পালক মেয়ের সাথে অসদাচরণ করতে বাধা দেয়ায়, স্বামী আলী হোসেন ক্ষিপ্ত হয়ে কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে। শুক্রবার (২৭ অক্টোবর) ভোর পাঁচটার দিকে উপজেলার উত্তর জয়পাড়া চৌধুরীপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় আহতের বাবা বাদি হয়ে দোহার থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন।
জানা যায়, আহত স্ত্রী চন্দ্রবান (৪৩) নবাবগঞ্জ উপজেলার আলালপুর গ্রামের শামসুদ্দিনের মেয়ে। তার বিয়ে হয় দোহার উপজেলার উত্তর জয়পাড়া চৌধুরীপাড়া এলাকার মো. শাহজাহানের ছেলে আলী হোসেনের সাথে। সংসার জীবনে তাদের ঔরসজাত কোনো সন্তান হয়নি। আহত চন্দ্রবান বর্তমানে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে।
আহত চন্দ্রবান জানান, আমাদের সংসার জীবনে কোনো সন্তান না হওয়ায় একটি ছেলে ও একটি মেয়ে দত্তক এনে লালন পালন করে আসছিলাম। মেয়ের বয়স বর্তমানে (১৪) আর ছেলের বয়স (৭)। গত ৮/৯ মাস আগে আমার স্বামী আলী হোসেনের কুদৃষ্টি পরে আমার পালিত মেয়ের উপর। বিষয়টি টের পেয়ে মেয়েকে উপজেলার মেঘুলা এলাকার একটি মহিলা মাদ্রাসায় ভর্তি করে দেই। মেয়েকে আর বাসায় আসতে দেই না। গত দুই দিন আগে আমার স্বামী মেয়েকে বাসায় আনতে বলে, আমি ভাবলাম হয়তো সে এখন ভাল হয়ে গেছে।
কিন্তু মেয়েকে বাসায় আনার পরে গত রাতে আবার শুরু হয় তার মেয়ের প্রতি লোলুপ দৃষ্টি। রাতে ঘুম আসে না। আনুমানিক রাত তিনটার দিকে শুরু করে আমার সাথে কথা কাটাকাটি। পরে আমি মেয়ের রুমে ডুকে ছেলে ও মেয়েকে নিয়ে দরজা বন্ধ করে দেই। পরে ভোর পাঁচটার দিকে দরজা ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করে রামদা দিয়ে আমাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে। আমাদের আর্তচিৎকারে এলাকার সবাই এগিয়ে এসে আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে এনে ভর্তি করে। এসময় আলী হোসেন পালিয়ে যায়। আমার মাথায়, দুই হাতে, মুখে ও পিঠে কুপিয়েছে। আমি আইনের কাছে এর বিচার চাই।
চন্দ্রবানের শ্বাশুড়ি ও আলী হোসেনের মা পানু বেগম জানান, মাঝে মাঝেই ছেলে ও ছেলের বউয়ের সাথে ঝগড়া লাগে। বউকে মারে আবার চিকিৎসা করায়। তবে গতকালকে কি নিয়ে ঝগড়া লাগছে তা জানিনা। তবে এই ভাবে কুপানো ঠিক হয়নি।
এবিষয়ে দোহার থানার ডিউটি অফিসার এসআই হাসান মাহমুদ জানান, আমরা এই মর্মে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। ভিকটিম চিকিৎসাধীন রয়েছে। অভিযুক্ত আলী হোসেনকে এখনো পাওয়া যায়নি। তদন্ত চলমান আছে। আমরা তাকে খোঁজ আইনের আওতায় নিয়ে আসবো।
এ বিষয় দোহার উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কত্যবরত ডাক্তার মলিহা পারভিন জানান, সকালে চন্দ্রবান (৪৩) কে হাসপাতালে নিয়ে আসলে তাকে আমরা দ্রুত চিৎসার ব্যবস্থা করি। তার ক্ষত স্থানে প্রায় ৭০-৮০ টি সেলাই দিতে হয়েছে। তবে চন্দ্রবান এখন সুস্থ আছে। আমাদের হাসপাতালে চিৎসাধীন অবস্থায় আছে।