পরে পেছনে তাকিয়ে দেখি শেখ কামাল নেই – সালমান এফ রহমান এমপি

    167

    শুক্রবার (৫ আগস্ট) শেখ কামালের ৭৩তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।

    শেখ কামালের বিয়ের গল্প করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘‘তার বিয়ের সময়ে গায়ে হলুদ করবো। এখন যেটি গণভবন ওই সময়ে বঙ্গবন্ধু সেখানে অফিস করতেন। কামাল তখন আমাদেরকে বললো— ‘তোমরা এক বালতি রঙ রেডি রাখো এবং আব্বা যখন বের হবে, তখন তাঁর ওপর রঙ ঢেলে দেবে।’ আমাদের তো সাহস নাই। আমরা তখন বললাম— তুমিও আমাদের সঙ্গে আসো এবং তখন সে বললো— ‘ঠিক আছে, আমিও তোমাদের সঙ্গে যাবো।’ আমরা সবাই রঙ নিয়ে রেডি আছি এবং বঙ্গবন্ধু যখন বের হয়েছেন, তখন আমরা সবাই রঙ ঢেলে দিয়েছি। পরে পেছনে তাকিয়ে দেখি শেখ কামাল নেই।’’

    প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেন, আমরা শোকের মাসে শেখ কামালের জন্মদিন পালন করছি, তবে ১৫ আগস্টের কারণে উদযাপন করতে পারছি না। শেখ কামাল ঢাকা কলেজে আর আমি নটরডেমে পড়তাম। আমরা ধানমন্ডিতে থাকতাম। সে কারণে সব সময় আমাদের দেখা হতো।

    অন্য খবর  আবারো দোহারের পদ্মায় ২ কিশোর নিখোজ

    তিনি বলেন, শেখ কামাল রাজনৈতিকভাবে সক্রিয় ছিলেন। ১৯৬৭-৬৮ সাল আন্দোলনের সময় ছিলো। তখন ঘটনা বোঝার জন্য আমরা বন্ধুরা শেখ কামালের দিকে তাকিয়ে থাকতাম। তবে ৭ মার্চের ভাষণের পর ২২ -২৩ মার্চের দিকে আমরা বুঝতে পারলাম কি ঘটতে যাচ্ছে।

    এর পরেই সালমান এফ রহমানের স্মৃতিতে উঠে আসে আবাহনীর শুরুর দিকের কথা। কীভাবে ক্লাবটি গড়ে উঠলো মোহামেডান নামক বড় ক্লাব থাকার পরেও আবাহনী ক্লাব গড়ে তুলেন।

    তিনি বলেন, ‘আমার মনে আছে কেন তিনি আবাহনী করতে চাইতেন। তখন ফুটবল ক্লাব একটাই ছিল-মোহামেডান। খেলার মান বাড়াতে প্রতিযোগিতার জন্যই মোহামেডানের মানের আরেকটা ক্লাব তিনি তৈরি করতে চেয়েছিলেন। সে শুধু তৈরি-ই করেননি। এর ফলে আবাহনী – মোহামেডানের প্রতিদ্বন্দ্বিতাও বছরের পর বছর রয়ে গেছে।’

    তিনি আরও যোগ করেছেন, ‘কামালের অনেক গুণ ছিল। দুটো জিনিস বলতেই হয়, শুধু খেলোয়াড়দের জন্যই না, অনেকের চাকরির জন্যও তদবির করতেন। সবাইকে সাহায্য করার অনুভূতি কাজ করতো। আমি সব সময়ই বলে এসেছি, যেটা নতুন প্রজন্মের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।’

    প্রধানমন্ত্রীর ছেলে হওয়ার পরেও শেখ কামাল বিভিন্ন প্রলোভনে পড়তেন না। এমনকি ভাবতেন না নিজের কথাও। বেশ কিছু ঘটনার উল্লেখ করে সালমান এফ রহমান আরও বলেছেন, ‘ওই সময় নতুন দেশ, অনেক ব্যবসায়ীই আমার সামনে তাকে অনেক প্রস্তাব দিয়েছেন। কমিশনের লোভ দিয়েছেন। কিন্তু কেউ বলতে পারবে না কোনও কিছুর সঙ্গে তিনি জড়িত ছিলেন। আমরা কিন্তু এর পরে, কত বড় বড় প্রধানমন্ত্রী এসেছেন, তাদের পরিবারের ছেলেরা কী কী করেছেন, সবই জানি।’

    অন্য খবর  বালু উত্তলন, জনসাধারনের অসেচতনতায় আজ হুমকির মুখে পদ্মা বাঁধ

    ‘‘একবার লন্ডন যাচ্ছিলাম, কামালকে বলেছিলাম তোমার জন্য কী আনবো? ওই সময় যে কেউ বলতো শার্ট আনো, কলম আনো। কিন্তু তিনি বললেন না, আমার আবাহনীর ছেলেদের জন্য কেডস আনতে হবে। জাপান যাচ্ছিলাম, তখন স্পন্দনের জন্য ইলেক্ট্রিক অর্গানও আনতে বলেছিলেন’।”

    সর্বশেষ তিনি বলেন, আজ বিশ্বংগনে বাংলাদেশ সর্বক্ষেত্রেই প্রতিনিধিত্ব করতেন যদি আমার বন্ধু শেখ কামাল বেচে থাকতেন।”

     অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম ও পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বক্তব্য রাখেন।

    আপনার মতামত দিন