নবাবগঞ্জে ভন্ড ফকিরের অপচিকিৎসায় প্রবাসীর মৃত্যু

1266

নবাবগঞ্জের টুকনীকান্দা গ্রামে জব্বর মোল্লা নামে এক ভন্ড ফকিরের অপচিকিৎসায় সুক্কু মোল্লা (৫০) নামে এক প্রবাসীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল বুধবার সকাল ১০টার দিকে রাজধানীর স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। ঘটনার পর থেকে জব্বর মোল্লা পলাতক রয়েছে।

নিহত সুক্কু মোল্লা বালুরচর গ্রামের মৃত ওয়াজ উদ্দিন মোল্লার ছেলে। তিনি হৃদরোগে ভোগছিলেন। গত আড়াই মাস পূর্বে সৌদি আরব থেকে তিনি দেশে আসেন। জব্বর মোল্লা টুকনীকান্দা গ্রামের মৃত হাসু ফকিরের ছেলে।

নিহত সুক্কু মোল্লার স্ত্রী সালমা বেগম জানান, গত আড়াই মাস পূর্বে সৌদি আরবে হৃদরোগে আক্রান্ত হন সুক্কু মোল্লা। সেখানে চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরেন। ৬/৭ বছর আগে সৌদিতে এক সাথে কাজ করতেন জব্বর মোল্লা ও সুক্কু মোল্লা। খবর পেয়ে প্রবাসী বন্ধুর বাড়িতে যায় ভন্ড কবিরাজ। সে হৃদরোগ সহ নানা রোগের চিকিৎসা দেন বলে তাকে আশ^স্ত করেন। কথায় বিশ^াস করে মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর কবিরাজের কাছে যায় সে।

সালমা বেগম অভিযোগ করেন, সেখানে সুক্কু মোল্লাকে পায়ের নিচ দিয়ে হাত দিয়ে মাথা উঁচু করতে বলা হয়। এসময় ঘাড় বাঁকা করে জোরপূর্বক ধরে রাখে জব্বর ফকির। পরে ঐ অবস্থাতেই মাথায় তেল দিয়ে তিন ঘন্টা মালিশ করে। এক পর্যায়ে বুকে ব্যাথা অনুভব করে সুক্কু মোল্লা অসুস্থ হয়ে পড়ে। অসুস্থ অবস্থায় তাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে চাইলে ফকির বাঁধা দেয়। পরে স্বজনরা তাকে বাড়িতে নিয়ে যান। অবস্থার অবনতি ঘটলে রাত ৩টার দিকে তাকে নবাবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায় স্বজনরা। ঐসময় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। বুধবার সকাল ১০টায় সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সুক্কু মোল্লার মৃত্যু হয়।

অন্য খবর  নবাবগঞ্জের সড়কের কাজ পরিদর্শন করলেন উপজেলা চেয়ারম্যান

টুকনীকান্দা গ্রামের বাসিন্দা ময়না বেগম অভিযোগ করেন, গত বছর তার মেয়ের জামাইকে চিকিৎসার জন্য এনেছিলেন। ১০ মাসে ১০হাজার টাকা হাদিয়া দিলেও সুফল পাওয়া যায়নি। জব্বর মোল্লা একজন ভন্ড ফকির।

বালুরচর গ্রামের উজ্জল মামুন শিপু জানান, গত ৬মাস আগে হৃদরোগের চিকিৎসার নিতে জব্বর মোল্লার কাছে যাই। চিকিৎসার শুরুতেই ৫০৫ টাকা, দেড় কেজি করে ৫ রকমের ফল ও মিষ্টি, আগর বাতি দিয়েছি। আমাকেও একই পদ্ধতিতে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। অসুস্থ অনুভব করার পর থেকে আর সেখানে যাইনি।

এদিকে, দুপুর ১টার দিকে নিহতের লাশ গ্রামে আসে। খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। ঘটনার পর থেকে ভন্ড ফকির জব্বর মোল্লা পলাতক রয়েছে।

এ ব্যাপারে নবাবগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক কামরুল হাসান বলেন, নিহতের পরিবার কোন অভিযোগ করেনি। তবে ভন্ড ফকিরের বিরুদ্ধে এলাকাবাসী নানা অভিযোগ করেছেন। সেই বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আপনার মতামত দিন