নবাবগঞ্জে বোরখা পড়ে স্কুলে আসায় শিক্ষকের হেনস্তার শিকার ছাত্রীরা

737

ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার শিকারীপাড়ার টিকেএম উচ্চ বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের হেনস্তা করার অভিযোগ উঠেছে। ছাত্রীরা বোরখা পড়ে স্কুলে আসার কারণে দীর্ঘদিন যাবত ছাত্রীদের নানা রকম কথা, বাজে ব্যবহার, গালাগালি, প্রহারের হুমকি ও বিদ্যালয় থেকে বের করে দেয়ার হুমকি দিয়ে আসছে স্কুলের ভারপ্রাপ্ত সহকারী প্রধান শিক্ষক কাজী আব্দুল মুন্নাফ।

একাধিক ছাত্রীর সাথে কথা বলে জানা যায় ছাত্রীদের নানাভাবে বিরক্ত করে আসছেন তিনি। ছাত্রীদের হাতধরা ও চুলে হাত দেয়া থেকে শুরু করে নানা ভাবে হেনস্তা করছেন তিনি। তিনি স্থানীয় আওয়ামী লীগ প্রভাবশালী চেয়ারম্যান সাহেবের বোনের জামাতা হওয়ার কারণে অবিভাবক ও ছাত্রছাত্রীরা ভয়ে এতদিন কিছুই বলেননি। তারা কেউ ঝামেলায় পরতে চাননি বলে জানা যাচ্ছে। এলাকায় ইতোমধ্যে ব্যাপক কথা চলছে বিষয়টি নিয়ে। একাধিক ছাত্রী বলেছে এই টিচার স্কুলে থাকলে তারা আর স্কুলে যাবে না। কারণ প্রতি সপ্তাহে যখন ছাত্রীরা স্কুলে যায় তিনি অনেক ঝামেলা করেন যা ছাত্রীরা লজ্জায় কিছু বলতে পারে না।

কয়েকজন অভিভাবক বলেন, আমাদের হাতপা বাঁধা। তারা প্রভাবশালী, এজন্য কিছু বলতে সাহস পাই না। অভিযুক্ত শিক্ষক কাজী আব্দুল মুন্নাফ ছাত্রীদের বলেন, বোরখা পড়ে আসতে চাইলে একটা স্কুল বানিয়ে তারপর সেই স্কুলে বোরখা পড়ে যেতে। তিনি আরো বলেন, প্রয়োজনে চাকরি ছেড়ে দেবো তবুও তোদের বোরখা পড়ে ক্লাসে ঢুকতে দেবো না। ছাত্রীরা ভয় পাচ্ছে যদি টেস্ট পরিক্ষায় তাদের আটকে দেয়া হয় এজন্য তারা এতদিন কিছু বলে নি বলেও জানা যায়। বোরখা পড়ে যারা আসবে তাদের নামের তালিকায় লাল চিহ্ন দিয়ে রাখবে বলে হুশিয়ারি দেন উক্ত শিক্ষক। তিনি ছাত্রীদের আরো বলেন, বোরখা পড়ে আসলে ছাত্রদের সামনে দাঁড় করিয়ে রাখবেন।

অন্য খবর  আইটি ফ্রিল্যান্সাররা রেজিস্ট্রেশনের আওতায় আসছেন: সালমান এফ রহমান

ছাত্রীরা একটা রুমে গিয়ে বোরখা খোলারঅনুমতি চাইলে তার সামনেই খোলার নির্দেশ দেন। অন্যদিকে সরেজমিনে দেখা গেছে, ছাত্ররা প্রতিদিন স্কুল ড্রেস ছাড়া স্কুলে আসলেও তাদের কিছু বলা হয় না। উক্ত শিক্ষকের নজর শুধু মেয়েদের দিকে। যেখানে শুধু এসাইনমেন্ট জমা নেয়া হয় কোভিড ১৯ এর কারণে।
গতকাল মঙ্গলবার উক্ত শিক্ষক নিজ হাতে ছাত্রীদের বোরখা খোলতে যায় ও মীম নামের এক ছাত্রীকে থাপ্পড় দিতে এগিয়ে যায়। ছাত্রীরা ব্যাপক উৎকন্ঠিত হয়ে পড়েছে শিক্ষকের এমন খারাপ আচরণের কারণে। তারা তাদের নিরাপত্তা নিয়ে শংকা প্রকাশ করছে। একাধিক ছাত্রছাত্রী তার এই আচরণের বিচার দাবি করছেন।

নবাবগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সিদ্দিক নূরে আলম গণমাধ্যমকে বলেন, অভিযোগ আসা ওই শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি এ ঘটনার জন্য অনুতপ্ত হয়েছেন। তারপরেও আমরা এ ঘটনার তদন্ত করব এবং শিক্ষক মোন্নাফের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আপনার মতামত দিন