নবাবগঞ্জে খালের মাটি যাচ্ছে অবৈধ ইটভাটায়

362

ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার কলাকোপা ইউনিয়নের মাধবপুর মৌজায় গড়ে উঠেছে অবৈধ ইটভাটা। সেই ভাটার ইট তৈরিতেও ব্যবহার করা হচ্ছে সরকারি খালের মাটি। মাটি কাটার কোনো অনুমতি নেই। সেই সঙ্গে বেশ কয়েকটি ইটভাটার নেই পরিবেশ অধিদফতরের কোনো ছাড়পত্র। কোনো কিছুর তোয়াক্কা না করেই নিত্য ইট তৈরির কাজ চলছে। ভাটার কালো ধোঁয়ায় পরিবেশ ধূষণ হচ্ছে। এ বিষয়ে প্রশাসনের কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই বলে জানান স্থানীয়রা।

বৃহস্পতিবার সরেজমিনে ইটভাটা এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, দোহারের পদ্মা নদী থেকে বইছে সাহেবখালী খাল। এক সময়ে বর্ষা মৌসুমে এই খালে নৌকা চলতো। এখন যেন তা পরিত্যক্ত ডোবায় পরিণত হয়েছে। এ খালের পানি প্রবাহের কারণে পলিমাটিতে বড়রাজপাড়া, আরিয়াল বিল এলাকাসহ শত শত একর ফসলি জমি উর্বরা শক্তি যোগান পেতো। খালটির কিছু স্থানে মাটি আটকে ভরাট করা হয়েছে। খাল জুড়েই ক্ষতবিক্ষত করে মাটি কেটে নেয়া হচ্ছে। এই মাটি যাচ্ছে দোহার-নবাবগঞ্জের ইটভাটাগুলোতে। চিত্র দেখে মনে হয়েছে প্রশাসন যেন এসবের খবরই রাখছে না। তবে কিছু নির্ভরশীল সূত্র দাবি করেছে, পার্শ্ববর্তী এলাকা দোহারের ইটভাটাগুলো থেকে উপজেলা প্রশাসন মোটা অংকের মাসোয়ারা পাচ্ছে। তাই বৈধ-অবৈধতার দিকে নজর নেই। এদিকে এসব ভাটার ইট বহনে নসিমন-করিমন যত্রতত্র রাস্তায় চলছে। ধুলিবালু আর কালো ধোয়ায় কয়েকটি গ্রামের সবুজ গাছপালার যেন রং বদলে গেছে। সবুজ পাতায় ধুলিকনার সাদা প্রলেপ পড়েছে। কোথাও পুড়ে গেছে বলেও মনে হয়। আর ধুলিবালির কারণে রাস্তায় হাঁটার জো নেই। নাক-মুখ চেপে হাঁটতে হয়। কিন্তু এ বিষয়ে নবাবগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন কোনো খবরই রাখছে না বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

অন্য খবর  দারিদ্র্য বিমোচন ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে কাজ করতে চাই: সালমা ইসলাম

ভাটাগুলোর মধ্যে জেবিসি ইটভাটার নেই কোনো বৈধ কাগজপত্র। সরকারি মাটি দিয়েই কাজ চলছে। ইটভাটা মালিকদের কাছে এসব অনিয়মই যেন নিয়মে পরিণত হয়েছে। সাহেবখালী এলাকার আবদুল কুদ্দুস ক্ষোভের সঙ্গে জানান, ক্ষমতার জোরে ভাটার মালিকরা সবাইকেই ম্যানেজ করে অবৈধ পন্থায় ব্যবসা করে যাচ্ছে। নিষিদ্ধ নসিমন-করিমনের ধোয়া ও বিকট শব্দে পরিবেশে দূষণ ঘটছে। এতে আশপাশের কয়েকটি গ্রামের মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাপনে কষ্ট হচ্ছে।

জনতা ব্রিক কনস্ট্রাকশনের (জেবিসি) অংশীদার নয়ন শিকদার এ বিষয়ে বলেন, তারা পরিবেশের ছাড়পত্রের জন্য আবেদন করেছেন। কয়েক বছর ধরে ইট পোড়ালেও কোনো ছাড়পত্র প্রয়োজন হয়নি কেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের ভুল হয়েছে। আর মাটি অন্যরা কাটছে। আমরা তাদের কাছ থেকে কিনে নিচ্ছি।

ভাটার আরেক মালিক জালাল উদ্দিন দাবি করেন, সাহেবখালী কোনো খাল নয়। তাদের নিজস্ব জমি। উল্লেখ্য, এই খালটি কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের অর্থায়নে ২০১২-১৩ অর্থবছরে কিছু অংশ খননও করা হয়। যাতে বর্ষা মৌসুমে পানি প্রবেশের সুযোগ পায়।

জানতে চাইলে এ বিষয়ে নবাবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আলমগীর হোসেন বলেন, বিষয়টি তার জানা ছিল না। খোঁজ নিয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া হবে।

আপনার মতামত দিন