ঢাকার নবাবগঞ্জের চুড়াইন ও মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগরের খাহ্রা এবং মদনখালী এলাকায় ৫ শতাধিক ক্ষুধার্ত বানরের উৎপাতে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে ওই অঞ্চলের মানুষ। ক্ষুধার জ্বালায় বানর গুলো হিংস্র হয়ে উঠেছে। বানরের কামড়ে সম্প্রতি মারা গেছে মদনখালী গ্রামের বাবুল (৩৫) নামে এক ভ্যান চালক। আহত হয়েছেন ঐ এলাকার অন্তত ২৫ জন নারী-পুরুষ।
এলাকাবাসী জানিয়েছে, ২ শতাধিক বছর আগে থেকে এ অঞ্চলে বানরের বসবাস। ঘণ জঙ্গলে নানা প্রজাতির ফলদ ও বনজ খাবার খেয়ে তারা বসবাস করতো। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে দর্শনার্থীরা বানর দেখতে আসতেন এখানে। অনেকে খাবার নিয়েও আসতেন। এলাকায় দিন দিন মানুষের আবাস বেড়ে যাওয়ায় গাছপালাও অনেক কমে গেছে। এতে দেখা দিয়েছে খাদ্য সংকট। আক্রমণের ভয় দেখিয়ে পথিকের খাবার সামগ্রী কেড়ে নিচ্ছে বানরগুলো। গত ৫ বছরে এবারই প্রথম তাদের মধ্যে হিংস্রতা দেখা দিয়েছে। ৫০/৬০টি বানরের দল বেঁধে বাড়িতে বাড়িতে হানা দিচ্ছে। জমিতে রোপণ করা ফসল নষ্ট করছে। মানুষ প্রতিরোধ করলে ২শ’ থেকে আড়াইশ বানর সংঘবদ্ধ হয়ে আক্রমণ করছে। কামড়ে আহত করছে পথচারীদের।
চুড়াইনের বাসিন্দা ও নবাবগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এসএস সাইফুল ইসলাম বলেন, এখনো এ অঞ্চলের বয়োজেষ্ঠ্যরা দুষ্টু ছেলেদের ‘চুড়াইনের বানর’ নামে অভিহিত করেন। এক সময়ে বানরের অবাধ বিচরণ ছিল ওই এলাকা। তিনি জানান, ক্ষুধার্ত বানরের জন্য স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে কিছু চাল দেয়া হয়েছে। যা ৫’শতাধিক বানরের জন্য একদিনের খাবারও নয়।
মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেন মোড়ল জানান, গাছের পেঁপে, নারিকেল, কলা কিছুই রাখছে না। লাউয়ের ডগা ভাঙছে। ফুল খেয়ে সাবার করছে। কোন ফসল ফলিয়ে খেতে পাড়ছে না এলাকার মানুষ। বন্যপ্রাণী অধিদপ্তর জরুরি ব্যবস্থা না নিলে আমাদের বসবাস কঠিন হয়ে পড়বে। তাছাড়া, বানরগুলোর খাদ্যের ব্যবস্থা না করলে নির্ঘাত মারা যাবে।
এ ব্যাপারে নবাবগঞ্জ প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. নারায়ণ চন্দ্র সরকার জানান, এটি তার দপ্তরের কাজ নয়। বিষয়টি বন বিভাগের।
উপজেলা বন কর্মকর্তা এসএম মাহবুবুল আলম বলেন, সরকারিভাবে আমাদের এরকমের কোন বরাদ্দ দেয়া হয় না। তবুও বিষয়টি উচ্চ পর্যায়ে জানানো হবে।
নবাবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাকিল আহমেদ বলেন, এর আগে বিষয়টি কেউ জানায়নি। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাকে বলা হচ্ছে।