দোহার ও নবাবগঞ্জ উপজেলার তাঁতে বোনা লুঙ্গির সুনাম দেশজুড়ে, আর এই সুনামে ভর করে দোহারের লুঙ্গি রপ্তানী হচ্ছে বিদেশে। আনুমানিক ১শ’ বছর আগে তাঁতে বোনা লুঙ্গির গোড়াপত্তন হয়েছিল এখানে। সেই থেকে নানা প্রতিকূলতা উপেক্ষা করে পূর্বপুরুষদের ঐতিহ্যকে ধরে রেখে লুঙ্গি তৈরি করে চলেছেন তাঁতীরা।

একসময় খুবই জমজমাট ছিল দোহারের জয়পাড়া লুঙ্গির হাট। তবে আধুনিক মেশিনে প্রস্তুত লুঙ্গির সঙ্গে হাতে বোনা লুঙ্গি প্রতিযোগিতায় টিকতে না পারায় দিন দিন লোকসানী প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে তাঁত শিল্প। ফলে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন দোহারের তাঁতীরা। প্রায় চারদিন অক্লান্ত পরিশ্রমের পর তৈরি হয় এক ভিম (ছয়টি) লুঙ্গি। প্রতিটি ভিমের দাম পাইকারী মূল্যে ২৪শ’ থেকে প্রায় ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত।

একসময় জয়পাড়া লুঙ্গির হাটকে কেন্দ্র করে উৎসবে পরিণত হতো। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা পাইকারদের ভিড়ে সরগরম থাকতো সপ্তাহের সোম ও বৃহস্পতিবার বিকেলটা। সারা দেশে লুঙ্গির যে ক’টি হাট রয়েছে তার মধ্যে জয়পাড়ার লুঙ্গির হাট প্রসিদ্ধ। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পাইকাররা লুঙ্গি কিনতে ছুটে আসেন এই হাটে।

অন্য খবর  দোহারে বিড়ি ভোক্তাদের মানববন্ধন

দেশের গণ্ডি পেরিয়ে দোহারের লুঙ্গি রপ্তানী হচ্ছে এখন ভারত, মালয়েশিয়া, সৌদি আরব, কাতার, ওমান, বাহারাইন, দুবাই, ইরাক, কুয়েত, লিবিয়া, ইন্দোনেশিয়া, কানাডা, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্রসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে যাছে। প্রতি বছর বিশ্বের ২৫টি দেশে পাওয়ারলুম ও হ্যান্ডলুম মিলিয়ে প্রায় দুই কোটি পিস লুঙ্গি রপ্তানি হচ্ছে, এর মধ্যে অবশ্য পাওয়ারলুমের লুঙ্গির পরিমানই বেশি।

বিদেশে বসবাসকারী বাঙালিরাই মূলত এই লুঙ্গির ক্রেতা। এছাড়াও ইন্দোনেশিয়াসহ অনেক দেশের লোকজন শখ করে বাংলাদেশী লুঙ্গি কেনেন।

আপনার মতামত দিন