ঢাকা জেলার দোহার উপজেলার নারিশা ইউনিয়নের নারিশা জোয়ার এলাকায় যাত্রার অনুমতি দেয়ায় সংকটে পড়েছে প্রশাসন। যাত্রা্য় অশ্লীল নৃত্য ও অভিনয় হচ্ছে অভিযোগ করে স্থানীয় মুসল্লীরা স্মারকলিপি দিয়েছে, মিছিল করেছে, একই সাথে ২৪ ঘণ্টা তথা ১দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছে যাত্রা উচ্ছেদে।শুক্রবার নারিশা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে নারিশা গার্লস স্কুল প্রদক্ষিণ করে, আবার নারিশা ইউনিয়ন পরিষদের মাঠে ঘুরে আসে।
চিত্রঃ বিক্ষোভ মিছিল।
চিত্রঃ আবুল কালাম হাওলাদার, সভাপতি – একতা সংঘ; যার বিরুদ্ধে অভিযোগ।
শুক্রবার বিকালে নারিশা ইউনিয়ন পরিষদের মাঠে আয়োজিত এক সাধারন সমাবেশে সাবেক ছাত্রনেতা আলমগির হোসেন বলেন, প্রশাসনকে অনুরোধ করছি, যাত্রা উচ্ছ্বেদ করতে। প্রশাসনকে আহবান করছি জনসাধারণের সেণ্টিমেণ্ট অনুধাবন করতে। তিনি বলেন, ২৪ঘণটা সময় দেয়া হলো উচ্ছ্বেদ করতে, যাত্রাপালা নামের এই অশ্লীলতা, মাদক বিক্রি উচ্ছ্বেদ না করে আমরা ঘরে ফিরে যাবো না।
ফাত্রাদের যাত্রাপালাকে রুখে দিতে সাবেক দোহার থানা ছাত্রলীগ এর আহবায়ক,নিরন্ন মানুষের ভবিষৎ নেতৃত্ব আলমগীর হোসেনের বজ্র কন্ঠের এই প্রতিবাদকে স্বাগত জানাই।বিশ্বাস করি,তার এই অগ্নিগর্ভ বক্তৃতা মানুষকে অন্যায় ও অশ্লিলতার বিরদ্ধে দাড়াতে মনোবল জোগার করবে।আমরা সবাই ধন্যবাদ জানাই বীর মুক্তিযাদ্ধা ডা:কালাম সাহেবকেও যার আহবানে সাড়া দিয়ে সাধারন মানুষ যাত্রাপালার বিরদ্ধে রুখে দাড়িয়েছে।
Posted by Shahabuddin Biswas on Friday, January 5, 2018
(আলমগির হোসেনের বক্তব্যের ভিডিও লিংক)
নারিশা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা ডাঃ আবু কালাম বলেন, আজ এই সামাজিক দাবীর প্রতি প্রশাসনকে অনুরোধ করছি, সমাজকে এও অবক্ষয় থেকে রক্ষা করুন। যাত্রাপালা বন্ধ করুন। যুব সমাজকে রক্ষা করুন। এই দেশের তৌহিদি ইসলামী জনতাসহ এটা আজ সমগ্র দোহারবাসীর সম্মিলিত দাবী। আপনারা অতি দ্রুত পদক্ষেপ নিন, তা না হলে সাধারণ জনতা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠতে পারে; এই যাত্রাপালাকে কেন্দ্র করে সামাজিক ও ধর্মীয় অবক্ষয়সহ আইন শৃংখলা পরিস্থিতি’র অবনতির আশংকা করছি। তাই প্রশাসনের কাছে আমাদের বিনীত অনুরোধ করছি, আপনারা এই অবৈধ যাত্রাপালা বন্ধ করুন।
এদিকে নারিশা ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান ও ঢাকা জেলা যুবলীগের সিনিয়ির সহ-সভাপতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক থেকে জানতে পারলাম, ডিসী মহোদয় নারিশা ইউনিয়নের আবুল হাওলাদার গং এর নামে আনন্দ মেলার নামে যাত্রাপালার অনুমতি দিয়াছেন। কিন্তু এই কুচক্রী মহল অশ্লীল যাত্রাপালা, বেহায়াপানা, উচ্ছৃংখলা, নষ্টামী, জুয়া, মাদক, ইত্যাদির জমজমাট বাজার বসিয়েছে। নারিশা ইউনিয়ন চেয়ারম্যান হিসাবে এই অপকর্মের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এই অপকর্ম উচ্ছ্বেদের জন্য সর্ব মহলের সহযোগিতা কামনা করছি।
চিত্রঃসালাহ উদ্দিন দরানীর প্রেস বিজ্ঞপ্তি
এলাকাবাসীর অভিযোগ, শর্ত সাপেক্ষে যে অনুমতি দেয়া হয়েছে, সেসব শর্তের উল্লেখিত শর্ত সমূহের ৫,৬,৭ নাম্বার শর্ত লঙ্ঘনের দায়ে অভিযুক্তদের বিরদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যায়।
জানা যায়, ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে নদীভাংগন কবলিত ক্ষতিগ্রস্থদের সহায়তায় মাসব্যাপী আনন্দমেলা ও ঐতিহ্যবাহী যাত্রাপালা আয়োজনের জন্য আবেদন করেন “একতা সমিতির” সভাপতি, মেঘুলা ওয়ার্ড আওয়ামিলীগের সভাপতি আবুল কালাম হাওলাদার। এই আবেদনের প্রেক্ষিতে ২৭/১২/২০১৭ তারিখে অফিসার ইনচার্জ, দোহার থানা, ঢাকা এর উত্থাপিত শর্ত ও প্রদত্ত মতামতের উপর ভিত্তি করে প্রস্তাবিত মেলা আয়োজন করাযেতে পারে বলে মতামত দেন পুলিশ সুপার, ঢাকা জেলা বিশেষ শাখা। এমতাবস্থায়, পরিস্থিতি বিবেচনা করে, ২রা জানুয়ারি-২০১৮ ঢাকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ব্যবসা বাণিজ্য শাখা থেকে সিনিয়র সহকারি কমিশনার কাজী হাফিজুল আমিন ৫জানুয়ারি,২০১৮ থেকে ৪ঠা ফেব্রুয়ারি,২০১৮ পর্যন্ত আনন্দ মেলা ও যাত্রাপালা আয়োজনের অনুমতি প্রদান করেন।
এদিকে ডাঃ আবু কালামের নেতৃত্বে ৪ঠা জানুয়ারি এলাকাবাসী দোহার উপজেলা চেয়ারম্যান আলমগির হোসেনের সাথে দেখা করে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে উপজেলা চেয়ারম্যান ও দোহার উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগাঠনিক সম্পাদক আলমগির হোসেন – আনন্দমেলা ও যাত্রাপালা বন্ধে ঢাকা জেলা প্রশাসকের নিকট আবেদন করেছেন। আর এই আবেদনের সদয় অবগতি ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য অনুলিপি প্রেরণ করা হয়েছে, পুলিশ সুপার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, দোহার উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা, সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (দোহার সার্কেল), অফিসার ইনচার্জ দোহার থানা, ডিআইও- ডিএসবি।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরব হয়ে উঠেছে ব্যাপারটি। একদিকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের অনুমতি প্রদান আবার অন্যদিকে উপজেলা চেয়ারম্যানের যাত্রাবন্ধের আবেদন,মুসল্লীসহ এলাকাবাসীর বিক্ষোভে এক ধরনের চাপা উত্তেজনা রয়েছে । ঘটতে পারে যে কোন প্রকার অনাকাংখিত ঘটনা।
চিত্রঃঅনুমতি প্রদান প্রসংগে মতামত।
চিত্রঃ উপজেলা চেয়ারম্যান আলমগির হোসেনের পত্র।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যেমনটি লিখেছেন – নিয়মিত লেখক সাহাবুদ্দিন বিশ্বাস। তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার মত প্রকাশ করে লিখেছেন, ফাত্রাদের যাত্রাপালার মূল হুতা “একতা সমিতির”সভাপতি,মেঘুলা ওয়ার্ড আওয়ামিলীগের সভাপতি আবুল কালাম হাওলাদারের নামে “আনন্দ মেলা এবং যাত্রাপালা”র অনুমতি প্রদান করেন ঢাকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়। উল্লেখিত শর্ত সমূহের ৫,৬,৭ নাম্বার শর্ত লঙ্ঘনের দায়ে একতা সমিতির সভাপতির বিরদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যায়।দোহার উপজেলা প্রশাসন ও দোহার থানা পুলিশের উচিত ছিলো উল্লেখিত শর্ত সমূহের লঙ্ঘনের দায়ে কালাম হাওলাদারের বিরদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা।
মেঘুলা ওয়ার্ড আওয়ামিলীগের সভাপতির নাম ব্যবহার করে যারা অন্তরালে থেকে দোহার থানায় উলঙ্গপনাকে স্থায়ী রুপ দিতে চাইতাছেন তাদেরকে সবাই চিনে এবং ঘৃনা করে।নেতার ছত্রছায়ায় থেকে সামাজিক মূল্যবোধকে ধ্বংশের এই পায়তারা ধর্মপ্রীয় মানুষরা মেনে নিবেনা এবং তারা প্রতিবাদী হয়ে উঠবে।প্রশাসন যদি যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন করতে ব্যর্থ হয় তাহলে এর প্রতিবাদে সাধারন জনগনকে রাস্তায় নেমে আসতে হবে।ভেঙে দিতে হবে নষ্টামীর আখরা।
ধন্যবাদ জানাই দোহার উপজেলা চেয়ারম্যান আলমগির হোসেন কে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ বরাবর স্বারক লিপি দেওয়ার জন্য ,যাতে যাত্রাপালা নামের নষ্টামী বন্ধ করা যায়।আওয়ামিলীগের নাম ব্যবহার করে ক্ষমতার অপব্যবহারের জন্য মেঘুলা ওয়ার্ড আওয়ামিলীগের সভাপতি আবুল কালাম হাওলাদারকে দল থেকে বহিস্কার করার দাবী জানাই দোহার উপজেলা আওয়ামিলীগের কাছে।