দোহারে পদ্মার ভাঙনে ছোট হয়ে আসছে স্থলভাগ

930
দোহারে পদ্মার ভাঙনে ছোট হয়ে আসছে স্থলভাগ

প্রতিবছরই পদ্মার স্রোতে ভাঙছে গ্রামের পর গ্রাম। পাঁচ বছরে পদ্মা ঘ্রাস করে নিয়েছে হাতনী, পানকুণ্ড, ধোয়াইর, অরঙ্গাবাদ ও বালেঙ্গাসহ অন্তত ১৫টি গ্রাম। সর্বস্ব হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছে কয়েক হাজার পরিবার। ঝুঁকিতে থাকা বাড়ির লোকজন ভাঙন আতঙ্কে নির্ঘুম রাত পার করছেন। কখন ঘর-বাড়ি নদীগর্ভে চলে যায়।
পদ্মা থেকে একটু দূরত্বে বসবাস করা মানুষের মধ্যেও আতঙ্ক বিরাজ করছে। কারণ পরবর্তী ভাঙন থেকে তারাও যে রক্ষা পাবে না। পদ্মার অব্যাহত ভাঙনে স্থলভাগ দিন দিন ছোট হয়ে আসছে। ভাঙন রোধ করার ব্যবস্থা না নিলে কোনো এক সময় হয়তো ভুখণ্ড থেকে মুছে যেতে পারে উপজেলার স্থলভাগ।
বর্ষা মৌসুম এলেই ভাঙন আতঙ্ক বেড়ে যায় পদ্মা পাড়ের বসতিদের। গত এক সপ্তাহে নারিশা ইউনিয়নের রানীপুর ও মধুরচর গ্রাম সম্পূর্ণ নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। প্রমাণ হিসেবে দৃশ্যমান রানীপুর গ্রামের ব্রিজটির বাকি অংশ ওপরের দিকে দাঁড়িয়ে আছে আর অধিকাংশই পানির নিচে ডুবে রয়েছে।
এ মৌসুমে নদী ভাঙনে নারিশা পশ্চিমচর, মেঘুলা, চর বিলাসপুর, মোকসেদপুর, মোহাম্মদপুর ও বাহাঘাট এলাকাসহ প্রায় পাঁচ শতাধিক বতসবাড়ি নদীগর্ভে চলে যায়। দুই বছরে প্রায় দেড় হাজার পরিবারের বসতভিটে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। ঝুঁকিতে রয়েছে মেঘুলা বাজারসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানও। ভিটে বাড়িহারা অসহায় লোকজনের কারো আশ্রয় মিলেছে আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে কারো বা রাস্তায়।
নারীশা পশ্চিমচর গ্রামের আলতাফ ভূঁইয়া (৬০) বলেন, কয়েকদিন আগে আমার বাড়ি-ঘর পদ্মায় কাইরা নিছে। এভাবে ভাঙতে থাকলে দোহারের নাম মুইছা যাইবো।
এলাকাবাসীর অভিযোগ দোহারের ভাঙন কবলিত এলাকায় সাড়ে তিন কিলোমিটার স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণে বিশ্বব্যাংকের ২১৭ কোটি টাকা বরাদ্দ একনেকে পাস হয়। কিন্তু গত শুষ্ক মৌসুমেও এর কার্যক্রম শুরু না হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কয়েকশ’ পরিবার।
নারিশা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সালাহউদ্দিন দরানী বাংলানিউজকে বলেন, ভাঙনরোধে জিও ব্যাগ ডাম্পিং প্রকল্পের টেন্ডার হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড ভাঙন এলাকা পরিদর্শনও করেছে। শুধু কাজ শুরু বাকী।
দোহার উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শামীম আরা নিপা বাংলানিউজকে জানান, নদী ভাঙনরোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড ১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে জরুরি প্রকল্প হাতে নিয়েছে। কয়েকদিনের মধ্যেই কাজ শুরু করার কথা।

আপনার মতামত দিন