ঢাকার নবাবগঞ্জ ও দোহার উপজেলায় প্রতিনিয়ত হারবাল ও আয়ুর্বেদ চিকিৎসার নামে প্রায় ২৫ থেকে ৩০ টি প্রতিষ্ঠান জনগন ও ঔষুধনীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুল প্রর্দশন করে প্রতারনা মূলক ব্যবসা করে চলেছে। সকল রোগের চিকিৎসায় দিতে প্রস্তুত এসব প্রতিষ্ঠান নিন্মমানের হারবাল ও আয়ুর্বেদ কোম্পানী ট্যালেট, বোতলজাত ঔষুধ অতিরিক্ত দামে বিক্রি করছে চলেছে বছরের পর বছর। প্রশাসন দেখেও নিশ্চুপ অভিযোগ এলাকাবাসীর।
ভোক্তভোগী রোগীদের অভিযোগ,দোহার ও নবাবগঞ্জের স্থানীয় ক্যাবল টিভিতে বিভিন্ন হারবাল প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন প্রচার হচ্ছে প্রতিদিন। প্রতিষ্ঠান গুলোর নামের প্রথম অংশে রয়েছে বাংলাদেশ, ইন্ডিয়া, নেপাল, কোলকাতা,ফ্রান্স. ঢাকা, চট্রগ্রাম,আদি,প্রথম। এসব চটকদারী নাম দেখে বুঝার উপায় নেই যে কোনটা আসল আর কোনটা নকল।
নবাবগঞ্জের আসমা আক্তার (ছদ্দনাম) তিনি মুঠোফোনে বলেন, বেশ কয়েক বছর যাবত শরীরটা ভালো যাচ্ছিলো না দিনে দিনে পাতলা ও চিকোন হয়ে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ ক্যাবল টিভিতে প্রচারিত একটি হারবাল প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দেখে ফোনে তাদের সাথে যোগাযোগ করি। তারা আমাকে তাদের প্রতিষ্ঠানে আসতে বলেন। অমি গিয়ে তাদের কাছ থেকে প্রায় ১২ হাজার টাকার ট্যাবলেট ও বোতলজাত ঔষুধ খাই। কিন্তু শরীরে কোন পরির্বতন হয়নি। তাদের এ বিষয়ে অভিযোগ করলে কোন টাকা পয়সা ফেরত দেয়নি। স্থানীয় মাস্তান দিয়ে আমাকে ধমকায়। মান সম্মানের ভয়ে আমি চুপ হয়ে যাই। আমার মতো অনেক পুরুষ-মহিলা প্রতিদিন এসব প্রতিষ্ঠানে প্রতারিত হলেও কেউ এগিয়ে আসেন না।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলা সদরসহ দোহার ও নবাবগঞ্জের প্রতিটি হাট বাজারে গড়ে উঠেছে বিভিন্ন নামে এসব হারবাল ও আয়ুর্বেদ চিকিৎসা কেন্দ্র। প্রবাসী যুবকরাও বিভিন্ন রোগের ট্যাবলেট ও ঔষুধ খেয়ে প্রতারিত হয়েছেন। বেশ কয়েকটি দোকানে হাকিম বা কবিরাজ সম্পর্কে জানতে চাইলে কোন সঠিক উত্তর পাওয়া যায়নি। অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানে কোন সনদপাপ্ত হেকিম বা কবিরাজ নেই। সবাই বলেন, সে ঢাকা থেকে আসেন। চলে গেছেন। পরে আর একদিন আপনি আসেন। কিছু প্রতিষ্ঠান শক্তি, কুন্ডেশ্বরী ও সাধনা ঔষুধালয়ের বোতলজাত ট্যাবলেট ও ঔষুধ আলমারীতে সাজিয়ে রেখেছে কয়েক বোতল। তাদের এ বিষয়ে জানতে চাইলে বলেন, আমাদের গুদাম ঘরে ট্যালেট ও ঔষদ আছে। খোজ নিয়ে দেখা গেছে, নিন্মামানের ট্যাবলেট ও ঔষুধ প্রশাসনের চোঁখকে ধুলা দিতেই সরিয়ে রাখা হয়। রোগী আসলে ও ফোনে অর্ডার পেলে লোক দিয়ে এনে রোগীকে দেওয়া হচ্ছে। আর এভাবেই দোহার ও নবাবগঞ্জ উপজেলায় প্রতিনিয়ত জনগণকে স্বাস্থ্য সেবার নামে প্রতারনা। সুধু জনগণ নয় চটকদার এসব হারবাল প্রতিষ্ঠানের মালিকগণ সরকারী স্বাস্থ্য ও ঔষুধনীতিতে বৃদ্ধাঙ্গুল প্রর্দশন করে ঔষুধ সংশ্লিষ্ট দপ্তরকেও ধোকা দিচ্ছে বছরের পর বছর। নেই কোনঔষুধ বিক্রির অনুমোদন।
দোহার চরলটাখোলা গ্রামের সৌদি প্রবাসী আলী আজম সম্প্রতি দেশে এসেছেন। তিনি বলেন, আমি সৌদির রিয়াদে থাকি জয়পাড়া বাজারের একটি হারবাল প্রতিষ্ঠানের ফেসবুকে এ্যাড দেখে তাদের সাথে কথাবলি তারা ডাকযোগে ঔষদ পাঠায়। বাংলাদেশী টাকার প্রায় ১৪ হাজার টাকা খরচ। কিছু দিন খাওয়ার আমার শরীর ও মুখে পানি আসে ও শরীর ফুলে যায়। পরে আর ঔষধ খাইনি।
ঢাকা জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ এহসানুল করিম বলেন, এসব প্রতিষ্ঠান দেখভাল করে ইউনানী এন্ড আয়ুর্বেদ বোর্ড। বাংলাদেশ ইউনানী এন্ড আয়ুর্বেদ বোর্ডের চেয়ারম্যান ও রেজিষ্টারের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাদের সংযোগ বন্ধ পাওয়া যায়।