দোহার-নবাবগঞ্জ কলেজের অধ্যক্ষকে পেটালেন ছাত্রলীগ

2928
দোহার-নবাবগঞ্জ কলেজের অধ্যক্ষকে পেটালেন ছাত্রলীগ

ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবিতে ঢাকার দোহার-নবাবগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয় অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. আনোয়ার হোসেনকে টেনেহিঁচড়ে বের করে পিটিয়ে আহত করেছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টার দিকে দোহার-নবাবগঞ্জ কলেজে এ ঘটনা ঘটে। একই সঙ্গে অধ্যক্ষের কক্ষে ভাঙচুর করে তাণ্ডব চালায় ছাত্রলীগ। গতকাল কলেজ ছাত্রসংসদ নির্বাচন সাময়িকভাবে স্থগিত করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হলে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে ছাত্রলীগ।

কলেজ সূত্রে জানা যায়, গতকাল কলেজের গভর্নিং বডির সভা ছিল। সভায় উপস্থিত সবার সম্মতিক্রমে আগামী কলেজ ছাত্রসংসদ নির্বাচন সাময়িকভাবে স্থগিত করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সভায় উপস্থিত ছিলেন কলেজ গভর্নিং বডির সভাপতি ও ঢাকা-১ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম, আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির সদস্য আব্দুল বাতেন মিয়া, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নাসির উদ্দিন ঝিলুসহ কমিটির অন্য সদস্যরা।

সভা শেষে সবাই চলে যাওয়ার পর অধ্যক্ষ মো. আনোয়ার হোসেন তাঁর অফিসকক্ষে প্রবেশ করেন। এ সময় অতর্কিতভাবে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাহিদুল আলম নাদিমসহ ২০-২৫ জন ছাত্রলীগ নেতাকর্মী কক্ষে ঢুকে অধ্যক্ষকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে এবং কক্ষে ভাঙচুর চালায়। একপর্যায়ে অধ্যক্ষকে ক্যাম্পাস থেকে টেনেহিঁচড়ে বের করে রাস্তায় নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তিনি দৌড়ে স্থানীয় থানায় আশ্রয় নেন। এরপর পুলিশ প্রহরায় তাঁকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করা হয়।

অন্য খবর  দোহার ও নবাবগঞ্জ আসন পুনরুদ্ধারে লিফলেট বিতরণ

হাসপাতালে আহত মো. আনোয়ার হোসেন জানান, ‘কলেজে ছাত্রসংসদ নির্বাচনের বিষয়ে আমার কোনো ভূমিকাই নেই। সামনে জাতীয় নির্বাচনসহ বিভিন্ন পরিস্থিতি নিয়ে সভায় আলোচনার পর নির্বাচন আপাতত না করার সিদ্ধান্ত নেয় গভর্নিং বডি।’

তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ‘ওরা আমার ছাত্র, আজ ওরাই আমাকে মারল, এর চেয়ে আমার জীবনে কষ্টের আর কী হতে পারে।’

তবে কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাহিদুল আলম নাদিম মারধরের কথা অস্বীকার করে বলেন, ‘তিনি আমার শিক্ষক, তাঁকে মারার প্রশ্নই আসে না। কিছু স্বার্থান্বেষী মহল আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। নির্বাচন কলেজের শিক্ষার্থীদের দাবি। এখানে আমার কোনো হাত নেই।’

নবাবগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মোস্তফা কামাল বলেন, ‘ওই শিক্ষক আহত অবস্থায় আমার থানায় এলে তাঁকে আমি পুলিশ পাহারায় হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠাই। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মামলা প্রক্রিয়াধীন।’

দোহার-নবাবগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ গভর্নিং বডির সভাপতি সালমা ইসলাম এমপি বলেন, ‘আমি মিটিং শেষ করে চলে আসার পর এ রকম একটা ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে জেনে দারুণ কষ্ট পেয়েছি। ঘটনায় অভিযুক্তদের ডাকা হয়েছে। প্রয়োজনে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

অন্য খবর  আসন্ন নির্বাচনে দোহার-নবাবগঞ্জ থেকে আমি নির্বাচন করবো: সালমান এফ রহমান

আপনার মতামত দিন