তালাক হয়েছে দুই বছর; তবুও স্বামীর বাড়ি ছাড়ছেন না স্ত্রী

446
তালাক হয়েছে দুই বছর; তবুও স্বামীর বাড়ি ছাড়ছেন না স্ত্রী

বাবুল হোসেন, বিগত ২১ বছর ধরে নিজের পরিবারের সুখের কথা চিন্তা করে কাটিয়ে দিয়েছেন প্রবাসে। নিজের কাছে কোন সঞ্চয় না রেখে টাকা পাঠিয়ে দিয়েছেন পরিবারে উদেশ্যে। কিন্তু ফলাফল কি পেয়েছেন? অপব্যয়ী স্ত্রী ও তার পরিবারের কাছে অনেকটা জিম্মি হয়ে পড়েছে বাবুল হোসেন এবং তার পরিবার। ঘটনাটি ঘটেছে ঢাকা জেলার দোহার উপজেলার মালিকান্দা গ্রামে।

২০০৫ সালের মে মাসের ২৭ তারিখে দোহার উপজেলার মালিকান্দা গ্রামের চাঁন মিয়ার ছেলে বাবুল হোসেনের সাথে বিয়ে হয় একই উপজেলার নারিশা পশ্চিম চর গ্রামের মজিনুর রহমানের মেয়ে সূবর্না আক্তারের সাথে। বিয়ের পর আবার প্রবাসে পারি জমান বাবুল হোসেন। এর মাঝে দেশে এসেছেন, হয়েছেন সন্তানের বাবা। কিন্তু স্ত্রীর অপব্যয়ের কারনে কোন কিছুই ঠিক ঠাক মতো করতে পারছিলেন না বাবুল হোসেন। সূবর্না আক্তারের অতিরিক্ত খরচের কারনে বাবুল হোসেনের ভাষ্যমতে সে বিপুল টাকার ঋণের বোঝায় চাপা পড়েছে। একদিকে যেমন তার নিজের কোন সঞ্চয় না থাকায় এই ঋণ পরিশোধ করা সম্ভব হচ্ছে না ঠিক একই ভাবে স্ত্রী সূবর্না আক্তার সংশোধন না হওয়ায় তাকে নিয়ে সংসার করাটা একেবারেই অসম্ভব হয়ে পড়েছে বাবুল হোসেনের জন্য। এরই মাঝে বাবুল হোসেন অভিযোগ করেন, তার স্ত্রীর আচরণও সংসারী নয়। ফলে দীর্ঘ ১৫ বছরের দাম্পত্ব্য জীবনের অবসান ঘটিয়ে বাবুল হোসেন ২০১৯ সালের আগস্ট মাসের ২০ তারিখে তালাক নামায় সই করে সে পুনরায় সৌদি আরব চলে যায়। এই তালাক নামা নিয়েই সমস্যা তৈরি হয়েছে পরিবার দুইটির মাঝে।

অন্য খবর  দোহার-নবাবগঞ্জে এসএসসি ফরম পূরণে বাড়তি অর্থ আদায়ের অভিযোগ

বাবুল হোসেনের স্ত্রী সূবর্না আক্তারের সাথে কথা না বলে তালাক নামা পাঠানোর কারনে বাবুল হোসেনের দুই সন্তান নিয়ে বাবুল হোসেনের বাসায় এসে হাজির হন তার তালাক প্রাপ্ত স্ত্রী সূবর্না আক্তার। দুই সন্তানের অধিকার দাবি করে সেই বাসাতেই অবস্থান নেন সূবর্না আক্তার। এই সময় বাবুল হোসেনের পরিবার তার অবস্থান করার ব্যাপারে বাধা দিলে সূবর্না আক্তারের সাথে আসা মানুষের হাতে আহত হন বাবুল হোসেনের পিতা চাঁন মিয়া। এই হামলায় আহত চাঁন মিয়া দুই দিন ভর্তি ছিলেন দোহার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। একই সাথে বাবুল হোসেনের সদ্য তালাক প্রাপ্ত স্ত্রী অবস্থান গ্রহন করেন বাবুল হোসেনের বাসায়। এই ঘটনায় দোহার থানায় ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসের ৬ তারিখে সাধারন ডায়রি করেন চাঁন মিয়া।

বিষয়টি এই জায়গায় থেমে না থেকে নারিশা ইউনিয়ন পরিষদ পর্যন্ত পৌছায়। নারিশা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন দ্বরানী বিষয়টি নিয়ে বিচার বসলে তালাকের সত্যতা নিশ্চিত করে সূবর্না আক্তারকে বাবুল হোসেনের বাড়ি ছাড়তে নির্দেশ দেন। কিন্তু সেই নির্দেশ অম্যান্য করে বাড়িতেই অবস্থান গ্রহন করেন সূবর্না আক্তার।

অন্য খবর  দোহারে শিশু ধর্ষনঃ সামাজিক ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত পরিবার

এই ব্যাপারে নারিশা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন দ্বরানী নিউজ৩৯কে বলেন, সূবর্নাকে প্রশাসনিক ভাবে অনেকবার বাড়ি ছাড়তে বলা হলেও সে বাড়ি ছাড়ছে না। এই ব্যাপারে তিনি দোহার উপজেলা প্রশাসন ও দোহার পুলিশের দৃষ্টি আকর্ষন করে অতি দ্রুত তাকে বাড়ি ছাড়তে বাধ্য করার ব্যবস্থা নিতে বলেন।

এই ব্যাপারে নিউজ৩৯ এর সাথে যোগাযোগ করেন সৌদি আরব প্রবাসী বাবুল হোসেন। বাবুল হোসেন নিউজ৩৯কে বলেন, তার স্ত্রীর কারনে তিনি যেমন মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ঠিক একই ভাবে অর্থনৈতিকভাবে পঙ্গু। আমার সাবেক স্ত্রীর কারনে আমরা পারিবারিক ভাবে যেমন অসহায় অবস্থায় আছি ঠিক একইভাবে সামাজিক ভাবে আমাদের মানসম্মানের হানিও ঘটেছে। আমার সন্তানদের দায়িত্ব আমি নিতে চাই। কিন্তু তার সাথে আমার ঘর সংসার করা সম্ভব না।

এই ব্যাপারে নিউজ৩৯ এর সাথে কথা হয় বাবুল হোসেনের সাবেক স্ত্রী সূবর্না আক্তারের সাথে। তিনি বলেন, তিনি তার বাচ্চাদের জন্য বাবুল হোসেনের বাসায় অবস্থান করছেন। তিনি আমাকে না জানিয়ে তালাক দিয়ে বিদেশ চলে যান। আমার দুই সন্তান ও বাচ্চাদের কোন ব্যবস্থা না করা পর্যন্ত আমি এই বাসা থেকে কোথাও যাবো না।

আপনার মতামত দিন