তরুনদের ভাবনাঃ সচেতনতা ও করোনার সাথে মানিয়ে নেয়া ছাড়া কোন বিকল্প নেই

229

কভিড-১৯ এর ইতিহাস কয়েকমাস এর হলেও এই ভাইরাস এর তথ্য এখন পৃথিবীর কারও- ই অজানা নয়। বর্তমানে এর ব্যাপক ভয়াবহতা থাকলেও একজন তরুন হিসেবে এই কভিড-১৯ কে আমি ভয়ানক কিছু মনে করছি না। আসলে আমরা নিজেরাই এটাকে দিন দিন ভয়ানক করে তুলছি। কেননা বাংলাদেশে মৃত্যুর ১.৩৫%(প্রায়), অর্থাৎ ১০০ তে ১জন+ মারা যাচ্ছে তবুও খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বার্ধক্যজনিত কারন সহ বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরাই করোনায় বেশি মারা যাচ্ছে।

বর্তমান পরিস্থিতিতে দোহার-নবাবগঞ্জ করোনা কূপে পরিণত হচ্ছে। প্রশাসন তাদের রুটিন ডিউটি পালন করছে ঠিকই কিন্তু স্থানীয় অঞ্চলের মানুষ কিন্তু স্বাস্থ্য বিধি মেনে কেউই চলাফেরা করছে না। লকডাউন তুলে দেওয়ায় বর্তমান পরিস্থিতে নিজেরা নিজেদের সুরক্ষিত রাখাই একমাত্র উপায় বলে মনে করছি। পরিবার, সমাজ ও ইউনিয়ন পর্যায়ে সচেতন অভিভাবক ও গণ্যমান্য ব্যক্তিরা নিজেদের পরিবার, সমাজ ও এলাকা সুরক্ষায় কাজ করবে। বাড়ি থেকে বের হতে নিরুৎসাহিত করার পাশাপাশি স্বচ্ছল ব্যক্তিরা সীমিত আয়ের পরিবারের পাশে থাকবে।

দোহার-নবাবগঞ্জ- কেরানীগঞ্জ এর কথাই যদি বলি, এই অঞ্চলে রুটিন অনুযায়ী সরকারি টেলিভিশন থেকে শ্রেনীর পাঠে অংশ নেওয়ার মানসিকতা খুবই কম, নিজে যতটুকু প্রত্যক্ষ করেছি এই সময়টাতে স্কুলের বাচ্চারা অবকাশ যাবন করছে। টেলিভিশন/ইউটিউব, খেলাধুলা খাওয়া আর ঘুমই যেন তাদের নিত্যনৈমিত্তিক রুটিন হয়ে দাড়িয়েছে। আর এতে করে বাচ্চাদের পড়াশুনা করার মানসিকতাও দিন দিন লোপ পাচ্ছে। এ ক্ষেত্র আমার আহ্বান হলো বর্তমানে পাবলিক বাস এ যেমন প্রতি দুজনের আসনে একজন যাত্রী বসে চলাচল করছে তেমন শর্তে স্কুল গুলো খুলে দেওয়া যেতে পারে, শিক্ষার্থীরা মুখে মাস্ক ব্যবহার করে স্কুলে আসবে, সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে শ্রেনীকক্ষে প্রবেশ করে প্রতি বেঞ্চ এ একজন বা দূরত্ব বজায় রেখে সর্বোচ্চ দুজন বসে পাঠ গ্রহন করবে। শিক্ষক ও অভিভাবকরা এক্ষেত্রে বাচ্চাদের গাইড করতে পারে।

অন্য খবর  নিজেকে জানো

পরিশেষে নিজের অভিজ্ঞতা থেকে নিউজ৩৯ এর মাধ্যমে শেয়ার করতে চাই, বাংলাদেশের জনসংখ্যার হিসেবে করোনা সনাক্তকরন এর পরীক্ষা খুবই কম। দোহার-নবাবগঞ্জ এ দেখেছি নমুনা পাঠানোর পরেও কারও রিপোর্ট পেতে ১৭দিন পর্যন্ত সময় লেগেছে। এবং করোনা সনাক্তও হয়েছে কিন্তু তত দিন এ সে ব্যক্তি হয়তো অনেককেই সংক্রমিত করে ফেলেছে। লকডাউন খুলে দেওয়ার পর আমি দোহার-নবাবগঞ্জ এর বাইরে বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে দেখেছি অনেক সচেতন তরুনরা আছে যাদের নিজেদের শরীরে জ্বর,গলাব্যাথা, পাতলা পায়খানা অথবা করোনার সামান্য কোন লক্ষন অনুভব করা মাত্রই তারা তাদের কর্মস্থল ত্যাগ করে সেচ্ছায় হোম কোয়ারেন্টাই এ যাচ্ছে, এবং একাকী থাকছে। নাপা বা প্যানাসিটামল সেবন করছে, গরম পানির সাথে লেবু, লবঙ্গ, দারুচিনির মিশ্রন বা রং চা বানিয়ে বার বার সেবন করছে। এবং অনেকেই ভাল ফলাফল পাচ্ছে। আমি চাকুরীসূত্রে কয়েকদিন পূর্বে নোয়াখালী এসেছি, করোনার কোন উপসর্গ না থাকলেও এখানে পৌছে কর্মস্থল এ যোগদান না করে কিছুদের জন্য হোম কোয়ারেন্টাইন এ আছি। তাই আমি মনে করি কোন এলাকায় প্রবেশ করলে বা নিজেদের মধ্যে করোনার কোন উপসর্গ অনুভব করলে সেচ্ছায় হোম কোয়ারেন্টাইন এ থাকার প্র্যাকটিসটা তৈরি করা খুব বেশি জরুরী। বর্তমান পরিস্থিতিতে নিজেদের সুরক্ষায় নিজেদেরই দায়িত্ব নেওয়া ছাড়া বিকল্প কোন পন্থা আমার চোখে পরছে না।

অন্য খবর  দোহারে ১৬ জনের করোনা শনাক্ত

ধন্যবাদ-

কাজী জিয়াদ

ট্রেইনি এ্যাসিস্ট্যান্ট অফিসার

আইএফআইসি ব্যাংক।

আপনার মতামত দিন