ঢাকার পুরোনো দিনের ছবি: ঢাকা বাংলাদেশের রাজধানী, ১৭শ শতকে মুঘল সাম্রাজ্যের একটি প্রাদেশিক রাজধানী হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে; এবং অতি সূক্ষ্ম কাপড় মসলিন বাণিজ্যের একটি প্রধান কেন্দ্র ছিল।
শহরটির ইতিহাস প্রাচীন হলেও অনেকাংশে অস্পষ্ট। এটি ১৩শ শতকে দিল্লির সুলতানদের দ্বারা প্রথমে ইসলামিক শাসনের অধীনে আসে। তারপর স্বাধীন বাংলার সুলতানদের অধীনে এবং পরে ১৬০৮ সালে মুঘলদের শাসনে আসে।
![](https://news39.net/wp-content/uploads/2024/06/rashed-chokder-adha24-min.jpg)
১৮শ’ শতকে মুর্শিদাবাদের নওয়াবদের অধীনে ঢাকা কিছুটা ম্লান হয়ে পড়ে এবং এর জনসংখ্যা কমে যায়। যখন নওয়াবদের ভাগ্য হারাতে থাকে, তখন ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির ক্ষমতা একটি নতুন ফ্যাক্টর হয়ে ওঠে।
১৮৫৮ সালে রানী ভিক্টোরিয়ার ঘোষণার মাধ্যমে কোম্পানির অধীনে থাকা ঢাকা সহ সকল অঞ্চল ব্রিটিশ শাসনের অধীনে আসে।
ঢাকায় মুঘল আমলের অনেক ভবনের অবশেষ রয়েছে।
![](https://news39.net/wp-content/uploads/2024/06/Chowkbazar-1885w-min.jpg)
এই ছবিটি ১৮৮৫ সালের ঢাকার চকবাজারের একটি সাধারণ দৃশ্য। ছবির কেন্দ্রে রয়েছে একটি পুরানো পিতলের তৈরি কামান, যা বুড়িগঙ্গা নদীর তলদেশ থেকে পাওয়া গেছে। বাম দিকে বড় একটি মসজিদ দেখা যাচ্ছে।
‘ছবির কেন্দ্রে থাকা কামানটির নাম “বিবি মরিয়ম”। একই সময় এটির সাথে “কালে খাঁ জম-জম” নামে আরেকটি কামান তৈরি করা হয়েছিল। মুঘল প্রযুক্তিবিদরা ১৭শ শতকের মাঝামাঝি সময়ে কামানগুলো তৈরি করেছিলেন। মুঘল সম্রাট ঔরঙ্গজেবের সুবেদার বা বাংলার গভর্নর মীর জুমলার আসাম দখল অভিযানে এই কামানগুলো ব্যবহৃত হয়।
সেই অভিযানের পরে, মীর জুমলা এই কামানগুলো ঢাকার নদীবন্দর বুড়িগঙ্গার তীরে সোয়ারিঘাটে বসিয়েছিলেন মগ ও আরাকান জলদস্যুদের ঠেকাতে। “কালি খান” পরে নদীর ক্ষয়ের কারণে হারিয়ে যায়, এবং ১৮৩২ সালে, একজন ব্রিটিশ সংগ্রাহক মি. ওয়াল্টার “বিবি মরিয়ম” কে সরিয়ে চৌকবাজারে স্থাপন করেন, যেখানে এই ছবিটি তোলা হয়েছে। “বিবি মরিয়ম” রমনা পার্কে অবস্থিত ওসমানী উদ্যানে ছিল কিছুকাল। বর্তমানে ঢাকা গেটের সামনে রাখা হয়েছে।
জনস্টন এবং হফম্যানের ছবির এলবাম ‘আর্কিটেকচারাল ভিউস অব ঢাকা’ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। ছবিটি সাদাকালো থেকে রঙিন করা হয়েছে।
![ছবি: বড় কটরা ১৯০৬](https://news39.net/wp-content/uploads/2024/06/Boro-Kotra-1906-min.jpg)
![ছবি: রয়েল ফিল্ড আর্টিলারি চার্চ প্যারেড, হাই কোর্ট](https://news39.net/wp-content/uploads/2024/06/High-Court-Royal-Field-Artillery-Church-ParadeUnknown-min.jpg)
হাই কোর্ট, ফটোগ্রাফার ও ছবি তোলার সময় অজানা
![শাহবাগের নওয়াব ইশরাত মঞ্জিল](https://news39.net/wp-content/uploads/2024/06/Nawabs-Ishrat-Manjil-in-Shahbagh-1880s.jpg)
ঢাকার শাহবাগে অবস্থিত ইশরাত মঞ্জিল ছিল ঢাকার নবাবদের একটি উল্লেখযোগ্য স্থাপনা। এটি বেশ আগেই ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে। এটি ব্রিটিশ ম্যাজিস্ট্রেটের একটি বাড়ি ছিল, পরে ঢাকার নবাবরা কিনে বাগানবাড়িতে পরিণত করেন। তখন এটি নবাবদের নাচঘর ও বলরুম ছিল।
যেখানে ইশরাত মঞ্জিল ছিল, সেখানে বর্তমানে জাতীয় জাদুঘর এবং সাবেক হোটেল শাহবাগের একটি অংশ এখন বিএসএমএমইউ (পূর্বের পিজি হাসপাতাল) অবস্থিত।
![আর্মেনিয়ান জমিদার মানুকের বাড়ি, বাদামতলি ঘাট](https://news39.net/wp-content/uploads/2024/06/House-of-Armenian-Zamindar-Manuk-1880s-min.jpg)
বুড়িগঙ্গার পাড়ে বাদামতলি ঘাটে আর্মেনিয়ান জমিদার মানুকের বাড়ি, ১৮৮০’র দশকে তোলা। বর্তমানে এটি ললিতকলা একাডেমি। ফটোগ্রাফার অজানা। ছবি রিস্টোর করা হয়েছে।
![ছবি: ভুলভুলাইয়া গোলকধাঁধা, দিলকুশা, ঢাকা ১৮৮০'র দশক](https://news39.net/wp-content/uploads/2024/06/Bhulbhuliya-Tower-Maze-Dilkhusha-1880s-min.jpg)
এই ভুলভুলাইয়া ছিল ঢাকার নবাবদের দিলকুশা গার্ডেন প্যালেসের অংশ। ১৮৮৬ সালে ঢাকার নবাব খাজা আবদুল গনি এই যায়গা ও বাগানটি কিনে নেন। সেখানে একটি অনন্য বাগান-প্রাসাদ “দিলখুশা” নির্মাণ করেন। প্রাসাদে একটি বলরুম, একটি বড় পানির আধার এবং বাগানের ভিতরে সুন্দর ফোয়ারা ও একটি হরিণ উদ্যান ছিল।
১৯০০ সালের দিকে একটি টর্নেডোর কারণে এই প্রাসাদটি ধ্বংস হয়ে যায়। বর্তমানে এই স্থানটি দিলকুশা বাণিজ্যিক এলাকা হিসেবে পরিচিত। ফটোগ্রাফার অজানা।
![সেন্ট থমাস গির্জা, ঢাকা](https://news39.net/wp-content/uploads/2024/06/St-Thomass-Church-at-Dhaka-1875-min.jpg)
ঢাকার সেন্ট থমাস সেন্ট থমাস গির্জার ফটোগ্রাফ, ১৮৭০-এর দশকে অজ্ঞাত একজন অজ্ঞাত ফটোগ্রাফারের তোলা। লক্ষ্মীবাজারে বাহাদুর শাহ পার্কের কাছে অবস্থিত। ঢাকার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সড়ক জনসন রোড, গির্জাটিকে আদালত-কোর্টকাচারি ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পৃথক করেছে। এটি ‘চার্চ অব বাংলাদেশ’ নামেও পরিচিত।
ছবিসূত্র: ফিলিপ থর্নটন
নিউজ৩৯.নেট/ছবিঘর/ঢাকার পুরোনো দিনের ছবি
![](https://news39.net/wp-content/uploads/2023/08/protiva-coaching-ad-primary-teacher-2023-min.jpg)