ঢাকার পার্শ্ববর্তী নবাবগঞ্জ উপজেলা অফিসে ঢুকতেই চোখে পড়বে গ্রামের সাধারণ মানুষকে সচেতন করার নানান উদ্যোগ। দালাল থেকে দূরে থাকুন, নামজারির ক্ষেত্রে সরকারি ফি সাড়ে ১১শ’ টাকার বেশি কাউকে দিবেন না। রসিদ বুঝে টাকা জমা দিন ইত্যাদি। কিন্তু ভূমি অফিসটির ভেতরের চিত্র একেবারেই উল্টো। বাস্তবতা হল এখানে প্রতিদিন রীতিমতো ঘুষের হাট বসে। প্রকাশ্যে চলে ঘুষ লেনদেন। দালাল ছাড়া রেকর্ড সংশোধনের কোনো ফাইল জমা হয় না। খোদ এসি ল্যান্ড (সহকারী কমিশনার, ভূমি) শাহানাজ মিথুন মুন্নীর নেতৃত্বে চলে ঘুষ লেনদেন। তবে তিনি সরাসরি কোনো ঘুষ নেন না। তার পক্ষে ঘুষ আদায়ে নিয়োজিত আছেন কানুনগো, নাজির, সার্ভেয়ার, তহশিলদারসহ একদল দালাল। এখানে ঘুষ ছাড়া কোনো ফাইলের মুক্তি মেলে না। নামজারি ফাইলে ঘুষের রেট বেশি। এসি ল্যান্ডের জন্য মোটা অংকের ভাগ রেখে দিয়ে অন্যরা ফাইলের ম্যারিট ও মক্কেল বুঝে টাকা হাতিয়ে নেন
দালালরা ধারণা দিয়েছেন, কোনো কোনো মাসে কোটি টাকার ওপরে ঘুষ লেনদেন হয়। শুধু ভূমি অফিসের দালালি করে এখানে অনেকে রাতারাতি আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়ে গেছেন। অথচ ওপরে সবাই নিজেকে সৎ ও সাহসী অফিসার বলে দাবি করেন। কিন্তু সন্ধ্যা হলে ঠিকই ঘুষের খাতা কল করে কড়ায়-গণ্ডায় নিজের পাওনা বুঝে নেয়া হয়। যুগান্তরের অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে ঘুষ লেনদেনের ভয়াবহ সব চিত্র। নমুনা হিসেবে কয়েকটি ঘটনার অডিও-ভিডিও রেকর্ড সংরক্ষিত আছে।
তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, ঢাকার পার্শ্ববর্তী উপজেলা হওয়ায় দোহার-নবাবগঞ্জের জমি অন্যান্য স্থানের তুলনায় অনেক মূল্যবান। প্রায় প্রতিটি বাড়ির কেউ না কেউ বিদেশে থাকেন। আছেন অনেক ধনাঢ্য ব্যক্তি। এই সুযোগে জমির প্রকৃত মালিকদের জিম্মি করে নামজারিসহ নানা খাতে বিপুল পরিমাণ টাকা ঘুষ আদায় করেন এখানকার হর্তাকর্তারা। এ সুবাদে এখানে গড়ে উঠেছে দালালদের একটি শক্ত গ্রুপ। যারা ভূমি অফিসের কর্মচারীদের মতো ফাইলপত্রের কাজ করেন। অথচ তারা ভূমি অফিসের কেউ নন। মূলত এদের মাধ্যমে ঘুষের দরকষাকষি হয়। আবার কোনো কর্মকর্তা নিজেই প্রকাশ্যে ঘুষ লেনদেনে অভ্যস্ত। সেবাপ্রার্থী সেজে যে কেউ গেলে এমন দৃশ্য অহরহ চোখে পড়বে।
দালাল দিয়েই শুরু : নিয়মানুযায়ী জমির প্রকৃত মালিক নামজারির রেকর্ডপত্র সংশোধন কিংবা মিসকেসের জন্য সহকারী কমিশনার (ভূমি) বরাবরে সরাসরি আবেদন করেন। ভূমি অফিসের বাইরে বড় একটি সাইনবোর্ডে এ বিষয়ে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি টানানো আছে। ওই সাইনবোর্ডে ‘মিউটেশন (নামজারি), জমাভাগ ও জমা একত্রীকরণ সংক্রান্ত নিয়মাবলী’তে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের তালিকা দেয়া আছে। নামজারিতে সরকারি খরচের একটি হিসাবও আছে দৃশ্যমান। যেখানে আবেদনে ২০ টাকার কোর্ট ফি, নোটিশ জারির ফি ৫০, রেকর্ড সংশোধন ও পর্চা ফি ১ হাজার এবং প্রতি কপি মিউটেশন খতিয়ান সরবরাহ বাবদ ১০০ টাকা। সর্বমোট ১ হাজার ১৭০ টাকা। এছাড়া বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী মালিকানা বিষয়ে কোনো বিতর্ক না থাকলে ৪৫ দিনের মধ্যে মিউটেশন কেস নিষ্পত্তি হবে। এ সময়ের মধ্যে আবেদন নিষ্পত্তি না হলে এবং উল্লিখিত খরচের অতিরিক্ত ফি কেউ দাবি করলে সহকারী কমিশনার (ভূমি), উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) অথবা জেলা প্রশাসকের সঙ্গে যোগাযোগের কথা বলা হয়। কিন্তু নবাবগঞ্জ ভূমি অফিসে দালাল ছাড়া কোনো আবেদন করা যায় না। আবার সরাসরি কোনো উপকারভোগী নথিপত্র জমা দিলেও রহস্যজনকভাবে তা হারিয়ে যায়। তাই বাধ্য হয়েই জমির প্রকৃত মালিক দালালদের সহায়তা নেন। এসব দালালের আবার রাজনৈতিক পরিচয়ও আছে। দালালদের মাধ্যমে রেকর্ডপত্র জমা হলে এর একটি হিসাব রাখা হয়। নামজারিতে সহকারী কমিশনার (ভূমি) চূড়ান্ত স্বাক্ষরের পর কোন দালালের মাধ্যমে ফাইলটি জমা হলো, সেই হিসাব অনুযায়ী ঘুষের টাকা আদায় করা হয়। দিনশেষে এ টাকা ভাগাভাগি করা হয়। এজন্য একটি খাতাও মেইনটেন করা হয়। তাই ঘুষ ছাড়া সেবা পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা ও ঢাকা জেলা পরিষদের সদস্য মো. ওয়াহিদুজ্জামান রনি বলেন, ‘ভূমি অফিসে সবই অনিয়ম-দুর্নীতি। কোনো কিছুই টাকা ছাড়া হয় না। মানুষ তার প্রাপ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এ কারণে সুপারিশ করাতে আমার কাছে অনেকে আসেন। গরিব মানুষ যারা টাকা দিতে পারেন না, তাদের পক্ষে আমাকে কথা বলতে হয়।’ তিনি বলেন, ‘নতুন এসিল্যান্ড যোগদান করার পর মনে করেছিলাম ঘুষের রেট হয়তো কমবে। কিন্তু কমেনি। আমি এমনও দেখেছি, যিনি টাকা-পয়সা দেন না, তার মিসকেসের রায়ও হয় না।’ এক প্রশ্নের জবাবে নবনির্বাচিত এ জনপ্রতিনিধি বলেন, ‘একটি খারিজ ফাইলে শতভাগ নথিপত্র ঠিক থাকলেও এসিল্যান্ড, তহশিলদার, সার্ভেয়ার, কানুনগো এবং পিয়নকে মোটা অঙ্কের টাকা দেয়া রেওয়াজে পরিণত হয়েছে।’
এ সময় ভুক্তভোগী একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রতিবেদককে বলেন, ‘আরে ভাই না, না। বর্তমান এস্যিল্যান্ড ফাইলপ্রতি ঘুষের রেট আরও বাড়িয়ে দিয়েছেন।’ তিনি বলেন, ‘ভূমি অফিসে সরাসরি কোনো খারিজ ফাইল জমা নেয়া হয় না। জমা দেয়া হলেও তা হারিয়ে যায়। এ কারণে বাধ্য হয়েই মানুষ দালালের শরণাপন্ন হন।’ তিনি বলেন, ‘এ নিয়ে প্রকাশ্যে কেউ প্রতিবাদ করলে তাকে জেলে পাঠানোর ভয় দেখান এসিল্যান্ড শাহানাজ মিথুন মুন্নী। দালালদের মাধ্যমে যেসব নথি জমা হয় সেসব নথির পেছনের পৃষ্ঠায় বিশেষ সংকেত দেয়া হয়। যেগুলো দ্রুত গতিতে নিষ্পত্তি হয়। প্রতিদিন ফাইল হিসাব করেই ঘুষের টাকা নেয়া হয়। এরপরই একসঙ্গে ভাগাভাগি করা হয়।’ নথির পেছনের পৃষ্ঠায় বিশেষ সংকেতের বিষয়ে খোঁজ নিতে গিয়ে দেখা যায়, নামজারির জন্য জমা হওয়া শত শত নথির শেষ পৃষ্ঠায় দালালদের স্বাক্ষর করা রয়েছে। কোনো কোনো নথিতে দালালদের মোবাইল নম্বরও দেয়া আছে।
ঘুষের সাক্ষী : অভিযোগ অনুসন্ধানে সরেজমিন দেখা যায়, ভূমি অফিসটির ঘুষ বাণিজ্য ওপেন সিক্রেট। কানুনগো আবুল কালাম আজাদ, সার্ভেয়ার মস্তফা জামান আব্বাছি, জাকারিয়া আহমেদ, সহকারী নাজির গৌর গোপাল সাহাসহ অফিসের পিয়নকেও নির্দিষ্ট হারে ঘুষ দিতে হয়। ২১ মার্চ ছিল মিসকেস শুনানির নির্দিষ্ট তারিখ। ওই দিন নবাবগঞ্জ ভূমি অফিসে গিয়েই দেখা যায়, সার্ভেয়ার জাকারিয়া আহমেদ স্থানীয় এক সেবাপ্রত্যাশীর কাছ থেকে নামজারির জন্য প্রকাশ্যে ঘুষ নিচ্ছেন। আবার পাশের রুমে নিজের টেবিলে বসা নাজির গৌর গোপাল সাহাকেও ঘুষ দিচ্ছেন কইলাইল গ্রামের দালাল আইয়ুব আলী। ২৭ মার্চ প্রকাশ্যে ঘুষ বাণিজ্যের এমন চিত্র প্রতিদিনের।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রভাবশালী দালাল উপজেলার মাদবপুর খন্দকার হাটির শাহজাহান কোনোরকম রাখডাক না রেখেই বলেন, ‘আমি প্রতি ফাইলে বেশি টাকা দেই। পরিমাণ ১০-১২ হাজার। এর কম আমি দেই না। কারণ আমার কাজটা ঝটপট। আমি ১০ দিন দেরি করবার পারুম না। তাদের কাছে আমার কথাই থাকে; আমার কাছ থেকে টাকা নিবেন, কিন্তু ২২ দিন অপেক্ষা করবার পারুম না। আবার ২২ দিনের কথা কইয়া যদি তিন মাসও ঘুরায় তাহলে আমি বইলাই দেই, আমার টাকাটা ১০ দিনেই ফেরত দিবেন।’ তিনি বলেন, ‘এ চায়, ও চায়, আমি কিয়ারে ঘুরবার যামু মানুষের কাছে। আমারে এসিল্যান্ড কয়, আপনে নিজে করবার পারেন না?’ আমার একটা মান-সম্মান নাই? আমি একটা সেকেন্ড ক্লাস অফিসার ছিলাম।’ আপনি এত টাকা দেন কেন জানতে চাইলে শাহজাহান বলেন, ‘দেই ওগো একটা হক আছে না(!) আমি ২৫ হাজার টাকা দিয়াও খারিজ করাইছি। ওরা (কর্মকর্তারা) কয় আমাগো কিছু থাকে না, তো আমি কী করমু? সাংবাদিকরা এইটা দেখে না?’ জমি খারিজ করতে যে টাকা লাগে তা প্রমাণ করতে শাহজাহান প্রতিবেদকের সামনে ডেকে আনেন আরেক দালাল কিরণজি গ্রামের নুরুল হককে। তিনি একটি খারিজের বিষয়ে বলেন, ‘১০ হাজার টাকা তো লাগবেই।’ এরপর শাহজাহান বলেন, ‘এ অফিসে পাঁচজন পিয়ন। আর এই ৫ জন পিয়নের কর্মচারী আরও ৭ জন। এদের প্রত্যেকের নামে টাকা আদায় করা হয়। এসি ল্যান্ড শাহানাজ মিথুন মুন্নীর ওমেদার (বেসরকারি) আক্কাছ বলেন, ‘নতুন এসি ল্যান্ড এসে ঘুষের রেট বাড়িয়ে দিয়েছেন।’ রেট কত জানতে চাইলে আক্কাছ বলেন, ‘ম্যাডামকেই দিতে হয়…. টাকা’। এ ছাড়া তহশিলদার এক হাজার টাকার নিচে ফাইল ছাড়তে চান না। কানুনগো, সার্ভেয়ারের টাকা আলাদা।’ এসি ল্যান্ডকে টাকা না দিলে হয় না এমন প্রশ্নের জবাবে আক্কাস বলেন, ‘তিনি তো এই টাকা একা পান না। অফিসে একটা খরচা আছে না! ওপরেও দিতে হয়।’ এ প্রসঙ্গে দালাল নুরুল হক বলেন, ‘পুলিশের কাছে যত আইনের ধারা, ভূমি অফিসেও আইনের তত ব্যাখ্যা। এসি ল্যান্ড ফাইল আটকায়া দিলে কী করবেন?’ এসি ল্যান্ড টাকা সরাসরি নেন কিনা জানতে চাইলে পাশ থেকে জালাল নামে আরেক দালাল বলেন, ‘যে কর্মকর্তার মাধ্যমে ফাইল জমা হয় সেই কর্মকর্তাই ঘুষের টাকা আদায় করেন। আর টাকা নেয়ার কয়েকজন নির্দিষ্ট ব্যক্তির মধ্যে আছেন সার্ভেয়ার আব্বাছি, জাকারিয়া ও সহকারী নাজির গৌর গোপাল সাহা। তাদের মাধ্যমেই ঘুষের টাকা আদায় করা হয়।
ওদের অনেক টাকা : সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহানাজ মিথুন মুন্নীর বিরুদ্ধে নবাবগঞ্জ ভূমি অফিসের দ্বিতীয় শ্রেণীর একজন কর্মকর্তা বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উত্থাপন করেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘এসি ল্যান্ড ম্যাডাম কাজ বোঝেন না। বুঝতেও চান না। এমন কর্মকর্তা দীর্ঘ চাকরিজীবনে পাইনি।’ তিনি বলেন, ‘ভূমি অফিসে দু-একটা টাকা সবাই নেন। কেউ কম নেন, আবার কেউ বেশি। কিন্তু প্রকাশ্য দিবালোকে দালাল সিন্ডিকেট করে মানুষের পকেট থেকে টাকা নেয়ার রেওয়াজ আমি দেখিনি।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সার্ভেয়ার মস্তফা জামান আব্বাসী টানা চার বছর এখানে কাজ করেছেন। দুই মাস না যেতেই আবার এখানেই পোস্টিং নিয়ে সাধারণ মানুষের ওপর স্ট্রিম রোলার চালাতে শুরু করেছেন। একইভাবে সার্ভেয়ার জাকারিয়ার বিরুদ্ধেও মানুষের অভিযোগের শেষ নেই। এদের মাধ্যমেই ম্যাডাম সব করাচ্ছেন। ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বা তাদের সম্পদের হিসাব নিলেই সব বের হয়ে যাবে। দুদক এদের চোখে দেখে না?’ অপর এক প্রশ্নের জবাবে ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘ওদের অনেক টাকা। এই দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকার পরও ম্যাডাম তাদেরকে দিয়েই জমির সরেজমিন তদন্ত করান। এমনকি বাদী ও বিবাদী দু’পক্ষেরই তদন্ত একজনকে দিয়ে করানোর নজির রয়েছে।’ আপনার বিরুদ্ধেও ঘুষ নেয়ার অভিযোগ আছে- এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ওদের মতো আমি টাকা নিই না। খুশি হয়ে যদি কেউ দেয় সেটা নিই।’
পিয়নদের ৭ পিয়ন : নবাবগঞ্জ ভূমি অফিসে সরকারিভাবে ৫ জন এমএলএসএস কর্মরত আছেন। তারপরও এখানে অতিরিক্ত আরও ৭ জন পিয়ন হিসেবে কাজ করেন। সরকারিভাবে কর্মরতরা হলেন : কাশেম, জাহাঙ্গীর, জিকু, সুফিয়ান ও সালাম। অন্যদিকে স্বেচ্ছায় কর্মরতদের মধ্যে আছেন মামুন, রবিন, মহিউদ্দিন, ইউসুফ, কাওছার, সোহেল, আরিফ ও আক্কাস। ভূমি অফিসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা যে টাকা ঘুষ নেন তাদের মধ্য থেকে হাতে গোনা কিছু টাকা এদের দেয়া হয়। আর ফাইল তল্লাশি বা অন্য কোনো সহযোগিতা করে নথি জমাকারীর কাছ থেকে টাকা নিয়ে থাকেন। এসব পিয়নের মাধ্যমে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে এই ভূমি অফিসে। এদের মধ্যে আক্কাছ এসি ল্যান্ড শাহানাজ মিথুন মুন্নীর বাসায় কাজ করেন। তিনি যখন অফিস করেন তখন আক্কাছও অফিসে ডিউটি করেন। আর অন্য সবাইকে পিয়নের পিয়ন হিসেবেই সবাই জানেন।
এসি ল্যান্ডের বক্তব্য : উল্লিখিত বিভিন্ন অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে এসি ল্যান্ড শাহানাজ মিথুন মুন্নী বলেন, ‘আমার অফিসের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ আমার জানা নেই। আমি এখানে নতুন যোগদান করেছি। যদি কেউ এসব কাজ করে থাকে তা আমার অজ্ঞাতসারে। বিষয়টি প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ঘুষ নেয়ার বিষয়ে কানুনগো আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘খুশি হয়ে কেউ দিলে আমি নিয়ে থাকি। তবে ফাইল আটকিয়ে কোনো টাকা-পয়সা নিই না।
সার্ভেয়ার মস্তফা জামান আব্বাছি বলেন, কারও কাছে চেয়ে ঘুষ নেয়া হয় না। সারা দিন জমি ডিমারকেশন করলে উপকার পেয়ে মানুষ কিছু দিতে পারে।’ বারবার ঘুরেফিরে কেন আপনি নবাবগঞ্জেই পোস্টিং নেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কর্তৃপক্ষ আমাকে বারবার দেয়। এ পর্যন্ত দু’বার আমাকে এখানে বদলি করেছে।’
সহকারী নাজির গৌর গোপাল সাহা বলেন, ‘মানুষ এভাবে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করলে চাকরি ছেড়ে দেব। আসলে আমি সহকারী নামজারিকারক। জোর করে আমাকে সহকারী নাজিরের দায়িত্ব দেয়া হয়।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘কর্মচারীদের বেতন দিতে গেলে তো টাকা লেনদেন হবেই।