ওয়াইফাই চুরি নিয়ে দুবাইয়ে ফতোয়া জারি

657
ওয়াইফাই চুরি নিয়ে দুবাইয়ে ফতোয়া জারি

চুরি মানে না বলে অন্যের কিছু নেওয়া। চুরি দণ্ডণীয় অপরাধ। চুরি হতে পারে ছলে, বলে বা কৌশলে। মালিক বা তত্ত্বাবধায়কের অজ্ঞাতে কোনো কিছু গ্রহণ, ব্যবহার, বিক্রয়, বিলোপ, লোপাট বা বেদখল করা। এক কথায় অন্যের মাল সংরক্ষণের জায়গা থেকে বিনা অনুমতিতে গোপনে নিয়ে যাওয়াকেই সংজ্ঞাগত দিক থেকে ও সাধারণ পরিভাষায় চুরি বলা হয়।

হাল সময়ে চুরির ধরণ যেমন পাল্টেছে, তেমনি চুরি হওয়ার মতো বস্তু বা পণ্যের বেলায়ও ভিন্নতা দেখা যাচ্ছে। তেমনি একটি হলো ওয়াইফাই চুরি।

এখন ইন্টারনেট সংযোগসহ স্মার্টফোন বা ট্যাবলয়েড থাকা মানে প্রায় পুরো পৃথিবী হাতে থাকা। জীবনকে সহজ করে দেওয়া এই প্রযুক্তির জেরে অনেকেই কিছুটা বেপরোয়াও হন। নীতি-নৈতিকতা ভুলে অনেক ইন্টারনেট ব্যবহারকারী বিনে পয়সায় অন্যের ওয়াইফাই ব্যবহারের সুযোগ হাতছাড়া করতে চান না।

না বলে একটু ওয়াইফাই-ই তো চালাচ্ছি, এ আর তেমন কী? না, এবার আর সে সুযোগ থাকছে না। অন্যের ওয়াইফাই গোপনে ব্যবহারকে সোজা চুরি বলে সাব্যস্ত করে ফতোয়া জারি করা হয়েছে।

সম্প্রতি দুবাইয়ের শীর্ষস্থানীয় ধর্মীয় কর্তৃপক্ষ ঘোষণা করেছে, কেউ মালিকের পূর্ব অনুমতি বা সম্মতি ছাড়া ওয়াইফাই সেবা ব্যবহার করলে তা চুরি বলে গণ্য হবে। আর এটা ইসলামে নিষিদ্ধ। কিয়াসের ভিত্তিতে প্রদত্ত ফতোয়ায় এটা বলা হয়েছে।

অন্য খবর  প্রচলিত নামাজের নিয়ত কুরআন সুন্নাহর কোথাও নেইঃ মুফতি কাজী ইব্রাহিম 

দুবাইয়ের ইসলামিক অ্যাফেয়ার্স ও দাতব্য কার্যক্রম বিভাগ (Islamic Affairs & Charitable Activities Department- IACAD) অনলাইনে এই ফতোয়া জারি করেছে। জারিকৃত ফতোয়ায় বলা হয়, প্রতিবেশির অনুমতি ছাড়া তার ওয়াইফাই ব্যবহার করা ইসলামের সঠিক বিধান ও শিক্ষা পরিপন্থি কাজ।

দুবাই ইসলামিক অ্যাফেয়ার্সের প্রধান মুফতি ড. আলী মাশাইল ফতোয়ার প্রদানের বিষয়টি স্বীকার করেছেন খালিজ টাইমসের কাছে।

দুবাই ইসলামিক অ্যাফেয়ার্সের প্রধান মুফতি বলেন, যদি কোনো ব্যক্তি বৈধ মালিকের অনুমতি ছাড়া ওয়াইফাই ব্যবহার করে, তাহলে তা এক প্রকার প্রতারণা, আত্মসাৎ ও চুরি বলে গণ্য হবে। এটাকে হারাম উল্লেখ করে তিনি যোগ করে বলেন, যে এমন ছোটখাটো অপরাধে অভ্যস্ত হয়ে পড়বে পরবর্তীতে তার মাধ্যমে ভয়ানক অপরাধ করা সহজ হয়ে যাবে।

আমেরিকার ইসলামিক সুপ্রিম কাউন্সিলের মতে, এটা যেহেতু পেমেন্ট ছাড়া বা বিনা অনুমতিতে অন্যের জন্য ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয় না। অতএব, ইন্টারনেট সেবা শুধু তার নির্দিষ্ট সাবস্ক্রাইবারদের জন্য অনুমোদিত। আলোচ্য ফতোয়ায় বেআইনি ডাউনলোড নিষিদ্ধ করা হয়েছে স্পষ্টভাবে।

সুতরাং রুমমেট বা প্রতিবেশীর ওয়াইফাই সিগনাল আর চুরি নয়। সব চুরির ক্ষেত্রে বিধান থাকলেও ওয়াইফাই চুরি একটি নতুন ভার্সন। যা সামাজিক ও নৈতিক দিক থেকে বড় ধরনের অবক্ষয়ের শামিল। এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়।

অন্য খবর  প্রতিদিনের হাদিসঃ ইসরা মি‘রাজে কীভাবে সলাত ফরজ হলো?

অতএব এ ধরনের গর্হিত কাজ থেকে নিজেকে বিরত রেখে সামাজিক ও নৈতিক মূল্যবোধের অনুসারী হয়ে বিকশিত মানুষে রূপান্তরিত হওয়ার দিকে মনোযোগী হতে হবে সবাইকে।

আপনার মতামত দিন