এক অসহায় বৃদ্ধ মায়ের আর্তনাদ

153

বাংলা নাটক কিংবা সিনেমায় যেভাবে চক্রান্ত করে সাধারণ নিরীহ বৃদ্ধ কে ভিটি বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করে ভোগ দখল করার দৃশ্য দর্শকরা দেখে আসছেন সে রকম ই এক ঘটনা ঘটেছে দোহারের নারিশা ইউনিয়নের সাতভিটা গ্রামে। সালমা খানম নামক ঐ বৃদ্ধা এখন তার দেবর ও তার পরিবারের চক্রান্তে ভিটামাটি ছাড়া সালমা খানমের ঘটনার সূত্রপাত ২০২১ সালে। ২০২১ সালের মাঝামাঝি সময় যে সময় সালমা খানমের দেবরের মেয়ে মেহেরুন আক্তার ( বীপা) বিরুদ্ধে তার শ্বশুর বাড়ির লোকজন স্বামী, শ্বশুর বাড়ির অন্যান্য লোকজনের স্বর্ণ ও অর্থ আত্মসাৎএর অফিযোগ তুলে এবং পরবর্তী তে মেহেরুন আক্তার (বীপার) শ্বশুর বাড়ির লোকজন দোহারের সাইনপুকুর অবস্থিত পুলিশ ফাড়িতে একটি অভিযোগ দায়ের করে। তৎকালীন সময়ে ফুলতলা পুলিশ ফাঁড়িতে কর্মরত সাব ইনিসপেক্টর আতিকুর রহমান; মেহরুন আক্তার এর শ্বশুর বাড়ির লোক এবং নারিশা সাতভিটা গ্রামের লোকজন নিয়ে বিষয় টি সুরাহা করে এবং সেখানে মেহেরুন আক্তারের মুখ জবানি অনুযায়ী জানা যায় যে, বিভিন্ন সময়ে তার দেবর, নুরুল ইসলাম কে টাকা দিয়েছে, কিছু টাকা তার মায়ের সংসারে দিয়েছে এবং কিছু স্বর্ণ বন্দক রাখা আছে।

পরবর্তী তে ফুলতলা ফাঁড়ির ইন্সপেক্টর আতিক বন্দককৃত স্বর্ণ উদ্ধারের ব্যবস্থা গ্রহণ করে এবং কিছু স্বর্ণ উদ্ধার করে তার শ্বশুর বাড়িতে ফেরৎ দেয়।

ঘটনা আপাতত এখানেই শেষ হলেও ২০২২ সালের মাঝামাঝি সময় এসে আবার এই মীমাংসিত ঘটনা নিয়ে আবার চাপ সৃষ্টি করা হয় বৃদ্ধা সালমা খানমের উপর। এবার তাদের নজরে আসে বৃদ্ধা সালমা খানমের স্বামীর রেখে যাওয়া সম্পত্তির উপর। সালমা খানমের স্বামীর রেখে যাওয়া জমিতে সালমা খানমের দুই মেয়ের নামে নামজারি করা হয়। যা তাদের পিতা বেঁচে থাকতেই লিখে দিয়ে যান।

অন্য খবর  সাতভিটায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চুরি

সালমা খানমের দেবরের বউর অভিপ্রায় ছিল ঐ সম্পত্তি তার ছেলে একক ভাবে ভোগ দখল করে খাবে কিন্তু সে সুযোগ না থাকায় সালমা খানমের দেবরের বউ সাফিয়া বেগম তার ভাই শহিদুল ইসলাম কে নিয়ে ষড়যন্ত্র শুরু করে।

এদিকে মেহেরুন আক্তার এর স্বামী বিদেশ থেকে দেশে এসে তার সমস্ত অর্থ ও স্বর্ণ ফেরত চান এবং স্থানীয় ভাবে সে বিষয়টা নিয়ে আবার বিচারের ব্যবস্থা করে এবং তখন মেহেরুন আক্তার সম্পূর্ণ মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে সাইন পুকুর পুলিশ ফাঁড়িতে দেয়া বক্তব্যের সাথে সম্পূর্ণ অসামঞ্জস্যপূর্ণ তথ্য উপস্থাপন করে এবং তিনি নতুন করে বলা শুরু করেন, তিনি তার স্বর্ণ তার চাচীকে দিয়েছেন। স্বর্ণ তার চাচাীকে স্বর্ণ কেন দিয়েছেন এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন তার চাচী তাকে যাদু করে স্বর্ণ এবং অর্থ নিয়ে নিয়েছে।

পরর্বতী সময়ে ভুক্তভোগী সালমা খানম বিষয়টি নিয়ে নারিশা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ আলমগীর হোসেনের কাছে যান। তখন চেয়ারম্যান বিচারের আগ্রহ প্রকাশ করে এবং ২১শে জানুয়ারি বিচারের দিন ধার্য করলে মেহেরুন আক্তার বীপা ও তার মা জানায় তারা ইউনিয়ন পরিষদে বিচারে বসবে না। তারা বাড়িতে বিচার ছাড়া বসবে না।

কিন্তু সালমা বেগম জানান বাড়িতে বিচার বসলে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটতে পারে এবং চেয়ারম্যান সাহেবও জানিয়েছেন বাড়িতে গিয়ে বিচারে বসবেন না। এখন মেহেরুন আক্তার বীপা ও তার মা সাফিয়া বেগম ও তার ভাই সাজ্জাদ হোসেন বাবু ও তার মামা শহিদুল বৃদ্ধাকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিচ্ছে এবং বাড়িতে যেন না আসতে পারে তার জন্য বিভিন্ন অপকর্মে পরিকল্পনা করছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভুক্তভোগী সালমা খানম এখন তার ভিটামাটি ছাড়া।

অন্য খবর  দোহারের সাতভিটায় রাস্তার বেহাল দশা

এই ব্যাপারে নারিশা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন জানান, আমরা বিষয়টা নিয়ে অবগত হয়েছি। তারা উভয় পক্ষই নিজেরা তাদের মধ্যে পারিবারিক ঝামেলা ও স্বর্ণ নিয়ে ঝামেলা। এক পক্ষ থানায় বসতে চায় ও অন্য পক্ষ বাড়িতে বসতে চায় তাই আমরা ইউনিয়ন পরিষদেই সুষ্ঠু ভাবে এর সমাধান করবো এবং তাদের কে খুব তারাতাড়িই ইউনিয়ন পরিষদ ডাকা হবে।

এই ব্যাপারে ফুলতলা পুলিশ ফাড়ির এস আই আতিক নিউজ৩৯কে জানান, আমি এখন ফুলতলা ফাড়িতে নাই তবে হ্যা তাদের বিষয় আমি অবগত আছি। তাদের মধ্যে স্বর্ণ ও টাকা পয়সা নিয়ে ঝামেলা হওয়ায় তারা অভিযোগ করছিলো তখন তাদের ঝামেলা মিমাংসা করে দিয়ে হয়েছে। এর পরে আর কি হয়েছে আমার জানা নাই।

এই ব্যাপারে অভিযুক্ত মেহেরুন নিউজ৩৯ বলেন, মীমাংসিত বিচার নিয়ে আবার বিচার হচ্ছে এই কথাটা ভুল। সেই সময় যে ঘটনা নিয়ে বিচার হয়েছে সেটা এই ঘটনার সাথে সম্পর্কিত না। এটা ভিন্ন ঘটনা। আর আমরা সালমা খানমের উপর কোন অন্যায়-অত্যাচার বা চাপ প্রয়োগ কিছুই করি নাই। আমরা এই ব্যাপারটার সমাধান চাই।

আপনার মতামত দিন