মাত্র দুই কিলোমিটার পাকা রাস্তার অভাবে উপজেলা থেকে বিচ্ছিন্ন ঢাকা-১ আসনের নবাবগঞ্জের ৭ গ্রামবাসী। অবহেলিত এসব গ্রাম হলো- নয়নশ্রী ইউনিয়নের খানেপুর, চক খানেপুর, রাহুতহাটি, রাধাকান্তপুর, শৈল্যা, আবজা নগর ও তুইতাল। এসব এলাকায় ৫০,০০০ লোকের বসবাস।
উপজেলার সব স্বনামধন্য স্কুল- কলেজ, চিকিৎসালয় ও ব্যাংক শাখা গড়ে উঠেছে উপজেলার বান্দুরা ও নবাবগঞ্জে। শিক্ষাদীক্ষায় এই এলাকার বাসিন্দারা বেশ আগ্রহী হলেও যোগাযোগ অবকাঠামোর অভাবে উচ্চশিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত তারা। মাধ্যমিক পাশ করেই ইতি টানে পড়াশুনার।
উপজেলার সঙ্গে এই এলাকাবাসীর যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম খানেপুর- বান্দুরা রাস্তাটি। একটু বৃষ্টি হলেই রাস্তাটি কাদায় ভরে যায়। এ সময় শিক্ষার্থী ও অসুস্থ রোগীদের কষ্টের সীমা থাকে না। তাই এলাকাবাসীর দাবি বান্দুরা টু খানেপুর পাকা রাস্তা নির্মাণের।
এলাকাবাসী জানান, শিক্ষাদীক্ষায় নয়নশ্রী ইউনিয়নের মধ্যে এসব এলাকা অগ্রগামী। খানেপুরের কৃতী সন্তান মরহুম মো. নবু বেপারী ও মো. সিরাজউদ্দিন কাজল দীর্ঘদিন নয়নশ্রী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছিলেন। তাদের আমলেই নির্মিত হয়েছে বর্তমান রাস্তাঘাট। নানা কারণে নয়নশ্রী ইউনিয়নের অন্যসব এলাকার রাস্তাঘাটসহ এলাকার অবকাঠামো উন্নয়ন হলেও অবহেলিত থেকে যায় খানেপুর গ্রাম। রাস্তাঘাট ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের অভাবে ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার এসব গ্রাম এখন উপজেলা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
স্থানীয়রা জানান, প্রাথমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষায় এলাকাগুলো উপজেলার অন্যান্য গ্রামের তুলনায় বেশ এগিয়ে। লেখাপড়ায় বেশ মনোযোগী এ এলাকার শিক্ষার্থীরা। এলাকার বেশিরভাগ পরিবারের সদস্য প্রবাসী। তাই ছেলেমেয়েদের শিক্ষার ব্যাপারে তারা বেশ তৎপর। পিতামাতার আগ্রহে এলাকার প্রায় ছেলেমেয়েই উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় অংশ নিয়ে কৃতিত্বের সঙ্গেই পাস করে। কিন্তু এলাকাটি থেকে কলেজটি খানিকটা দূরে অবস্থিত। হাঁটা ছাড়া অন্য কোন মাধ্যম না থাকায় মেয়েদের উচ্চশিক্ষায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়।
সেবা নিতে এই এলাকার বাসিন্দাদের ২ কিলোমিটার রাস্তা হেঁটে যাওয়ার পর মিলে যানবাহন। বৈরী আবহাওয়ার কারণে শিক্ষার্থীরা কলেজে যেতে পারে না। এর মধ্যে রাতে কেউ অসুস্থ হলে ওই পরিবারের বিপদের সীমা থাকে না। অসহায় হয়ে খাটে করে নিয়ে যেতে হয় বান্দুরা হাসপাতালে। এতে ৫ মিনিটের রাস্তা যেতে সময় লাগে ঘণ্টারও বেশি। অনেক সময় নারীর প্রসব বেদনায় যথাসময়ে ডাক্তারের কাছে নিতে না পেরে পড়ে যায় মৃত্যুঝুকিতে। এলাকার এ সমস্যা সমাধানে গত শুক্রবার খানেপুর বাজারে আয়োজন করে এক মতবিনিময় সভা। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন স্থানীয় এমপি অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম এমপি। এ সময় তিনি এলাকাবাসীর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বলেন, নয়নশ্রী ইউনিয়নের বান্দুরা ব্রিজ থেকে খানেপুর বাজার হয়ে তুইতাল পর্যন্ত নির্মাণ করা হবে পাকা রাস্তা। ইতিমধ্যে পাকা রাস্তা নির্মাণের দরপত্র আহ্বান প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। আগামী ৪/৫ মাসের মধ্যেই কাজ সম্পন্ন হবে বলে এলাকাবাসীকে আশ্বাস দেন তিনি।
আপনার মতামত দিন