ঢাকার দোহার উপজেলার নয়াবাড়ী, মাহমুদপুর, বিলাসপুর ও সুতারপাড়া ইউনিয়নে পদ্মার ভাঙন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। গত এক সপ্তাহে এই চার ইউনিয়নের শতাধিক বসতবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। একমাত্র সম্বল ভিটেমাটি ও ফসলি জমি হারিয়ে পথে বসেছেন অনেক মানুষ।
বাসিন্দারা জানান, পদ্মার তীর ঘেঁষে গড়ে ওঠা নয়াবাড়ী, মাহমুদপুর, বিলাসপুর ও সুতারপাড়া ইউনিয়নে ভাঙনের ফলে অনেকটা বদলে গেছে দোহারের মানচিত্র। ভাঙনের বিষয়ে উপজেলা প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ।
দোহার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শামীমুল হক বলেন, কিছু এলাকায় ভাঙনের বিষয়ে তাঁরা জেনেছেন। বাকি এলাকাগুলোর খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।
সুতারপাড়া ইউনিয়নের মধুরচর গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, মধুরচর রেজিস্টার্ড বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে খোলা আকাশের নিচে আশ্রয় নিয়েছে ঘরহারা মানুষ।
গ্রামবাসী জানান, অনেকে ঘরবাড়ি হারিয়ে উপজেলার আড়িয়ল বিল এলাকার দুবলী গ্রামে চলে গেছে। কয়েক দিন থেকে ভাঙন অব্যাহত থাকলেও স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও উপজেলা প্রশাসনের কেউ ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের খোঁজখবর নেননি। ভাঙন প্রতিরোধে কোনো ব্যবস্থা না নিলে শিগগিরই মধুরচর ও আলীনগর গ্রাম দুটি পদ্মায় বিলীন হয়ে যাবে বলে স্থানীয় বাসিন্দাদের আশঙ্কা।
পদ্মার ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত মধুরচর গ্রামের দুলু মোল্লা বলেন, ‘পদ্মার ভাঙনে আমরা ভিটামাটি হারাইয়া রাস্তায় পইড়া গেলাম বাবা। কেউ তো আমাগো দেখতে আইলো না।’
সুতারপাড়া ইউপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সুরুজ ব্যাপারী বলেন, নদীভাঙনের বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে সহায়তা দিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে ভাঙনের কারণে নয়াবাড়ী ইউনিয়নের বাহ্রাঘাট ও দেওয়ানবাড়ী মোড় এলাকায় দোহার-মানিকগঞ্জ বেড়িবাঁধের বেশির ভাগ অংশ ভেঙে যাওয়ায় যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপবিভাগীয় প্রকৌশলী আবদুল মান্নান বলেন, এ মুহূর্তে তাঁরা কিছুই করতে পারছেন না। তবে নয়াবাড়ী এলাকায় দুটি পয়েন্টের জন্য জরুরি ভিত্তিতে কাজ করতে চার কোটি টাকার একটি প্রকল্প চেয়ে মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়েছে।