অনেকেই বেঈমানী করেছে কিন্ত আমি ও আমার বংশ আজন্ম নৌকার কর্মি – নুরুল হক বেপারী, সেক্রেটারী প্রার্থী – দোহার উপজেলা আওয়ামীলীগ

605

দীর্ঘ ১৯বছর। কত-শত প্রতীক্ষা। অবশেষে প্রতীক্ষার অবসান। প্রায় দুই দশকের প্রতীক্ষার অবসান শেষে ঢাকার দোহার উপজেলা আওয়ামী লীগের ৫ম ত্রিবার্ষিক সম্মেলন আগামী ১৫ মে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। আর এ সম্মেলন ও কমিটি গঠনকে ঘিরে আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাকর্মীদের মাঝে দেখা দিয়েছে উৎসবের আমেজ। ইতোমধ্যে পদপ্রত্যাশী নেতারা সম্মেলন সফল করার লক্ষ্যে নেতাকর্মিদের আহবান জানিয়ে উপজেলার নয়াবাড়ি থেকে মুকসুদপুর পর্যন্ত ফেস্টুন, ব্যানার, তোরণ ও বিলবোর্ড লাগিয়েছেন। আগামী ১৫ মে রোববার উপজেলার জয়পাড়া পাইলট সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ প্রাঙ্গণে সম্মেলনের স্থান নির্বাচিত করেছেন দোহার উপজেলা আওয়ামী লীগ। অনুষ্ঠানের উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত থাকবেন ঢাকা জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি বেনজির আহম্মদ(এম.পি)। সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্ঠা এবং ঢাকা-১ আসনের সংসদ সদস্য সালমান ফজলুর রহমান।

৫ম ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হয়েছেন আওয়ামীলীগের দুঃসময়ের কর্মী দোহার উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি এবং বাংলাদেশ কার্গো ভেসেল ওনার্স এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক নুরুল হক বেপারী । কাউন্সিল নিয়ে একান্ত আলাপচারিতা করেছেন news39.net এর সাথে। আলাপচারিতায় ছিলেন স্টাফ রিপোর্টার মোঃ আল-আমিন।

মোঃ আল-আমিনঃ আপনি কি দোহার উপজেলা আওয়ামীলীগের ৫ম ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী? কেন এই পদে প্রার্থী হয়েছেন?

নুরুল হক বেপারিঃ আমি বাংলাদেশ কার্গো ভেসেলের জেনারেল সেক্রেটারি ও চট্টগ্রাম WTC এর বিগত ২০ বছর আমি সদস্য ছিলাম। আমার রাজনীতি করার উদ্দেশ্য হলো সাধারণ মানুষে জন্য কাজ করা।  এখান থেকে সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করা যায়। আমি সব সময়ই সামাজিক উন্নয়নসহ সকল ধরনের কাজ করে যাচ্ছি সাধারণ মানুষের জন্য। দোহার উপজেলার আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে আমার ও আমার পরিবার সম্পর্ক জন্মলগ্ন থেকে । আমি দুঃসময়ের একজন কর্মি। তাই আমি যদি সাধারণ সম্পাদক হই বিশেষ করে মাননীয় সাংসদ সালমান এফ রহমান উন্নয়নের যে গতিশীলতা সৃষ্টি করেছেন, তা অব্যাহত রাখতে ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে প্রতিষ্ঠিত করতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবো বলে বিশ্বাস করি। তাই আমি আস্থা রাখি সাধারণ সম্পাদক হবো এবং দলকে নেতৃত্ব দিয়ে আরও সুদৃঢ় এবং সংগঠিত করতে পারবো।

মোঃ আল-আমিনঃ আপনার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার/ব্যাকগ্রাউন্ড সম্পর্কে বলুন?

নুরুল হক বেপারিঃ আমার ব্যক্তিগত জীবনে আমি লন্ডনে লেখা পড়া করে আমি ১৯৮৮ সালে বাংলাদেশে ফিরি। আমি ফ্যামিলি গত ভাবেই আওয়ামী লীগের রাজনীতি করি ও সদস্য ছিলাম। নারিশা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আমার চাচা। ডা.আবুল কালাম আজাদ তিনি হলেন দোহার উপজেলার আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক। তাই আমার রাজনীতির জীবনে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের বাইরে কখনোই যাইনি। আমাদের বংশের কোন আওয়ামীলীগের বাইরে ভিন্ন ইতিহাস নেই। ১৯৯৬ সাল থেকে নির্বাচন থেকে যতগুলো নির্বাচন হয়েছে যখন আমাকে যে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে তখন নৌকার পক্ষে সেই কাজ করেছি।

অন্য খবর  মালিকান্দায় গাঁজাসহ মাদক ব্যবসায়ী আটক

মাননীয় এমপি সালমান এফ রহমান যখন দোহার আসেন, তখন থেকেই আমাকে দলের জন্য ভাইস প্রেসিডেন্ট করে রাখেন এবং আমিও দলের জন্য দিনরাত কাজ করি। বিএনপি জোট সরকারের আমলে আমি অনেক নির্যাতনের শিকার হয়েছি। তখন আমার প্রায় ২৫ লক্ষ টাকার গাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে বিএনপি জোট সরকার। আমি শারীরিকভাবে অনেক আঘাত প্রাপ্ত হই। এখনো আমার পায়ের সন্ধিক্ষণে ব্যাথা আছে। বিভিন্ন নির্বাচনে দোহারের অনেকেই নৌকার বিপক্ষে গেছে, কিন্ত আমি সব সময় নৌকার পক্ষে কাজ করে গিয়েছি।অনেকেই বেঈমানী করেছে কিন্ত আমি ও আমার বংশ আজন্ম নৌকার কর্মি।

সর্বশেষ ইউনিয়ন নির্বাচনে আমার চাচাতো ভাই তবারক ব্যাপারী নৌকার প্রার্থী আলমগীর হোসেনকে বিজয়ী করতে আমার সহযোগিতায় প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে নেন। আমরা বেপারী বংশ সব সময় নৌকার যাত্রী। তাই আমি চাই দোহারে গতিশীল নেতৃত্ব। আর সালমানের এফ রহমানের গতিশীল নেতৃত্বের সাথী হতে পারেন একমাত্র উপজেলা চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন। আর আলমগীর হোসেনকে সর্বোচ্চ এবং সর্বাত্মক সহযোগীতা করার মতো সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আমার দক্ষতা, যোগ্যতা এবং সামর্থ্য আছে বলে আমি বিশ্বাস করি।

মোঃ আল-আমিনঃ সাধারণ সম্পাদক পদে কেন কাউন্সিলর-রা আপনাকে ভোট /সমর্থন দিবে?

নুরুল হক বেপারিঃ আমি নিশ্চিত ভাবে বলতে পারি ব্যক্তি বা দলগতভাবে দোহারে ডিজিএফ/এনএসআই বা গোয়েন্দা সংস্থার রিপোট অনুযাই আমি ক্লিন ইমেজের রাজনৈতিক কর্মী। গত কয়েকদিন আগে সারা দেশে কার্গো ভেসেল ওনার্স এসোসিয়েশনের নির্বাচন হয়েছে। ৫০ জন প্রার্থীর মধ্য সেখানেও আমি সর্বোচ্চ ভোট পেয়েছি। তাই যেখানে সারাদেশের এতো বড় একটা সেক্টরের নেতৃত্ব আমি দিচ্ছি, সেখানে দোহার উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক হলে এমপি ও দলের নির্দেশনা মোতাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেনের নেতৃত্বে সফলভাবে সকল কাজ করতে পারবো বলে আমি ও দলের অন্যান্যরা বিশ্বাস রাখে।

অন্য খবর  বিলাশপুর উপনির্বাচনে আবুল মেম্বার জয়ী

মোঃ আল-আমিনঃ আপনি দোহার উপজেলা সভাপতি হিসেবে কাকে দেখতে চান?

নুরুল হক বেপারিঃ আমি সভাপতি হিসেবে বর্তমান দোহার উপজেলার চেয়ারম্যান মোঃ আলমগীর হোসেন কে দেখতে চাই। কেননা তিনি এমপিকে বুঝেন, সাধারণ জনগণকে বুঝেন। তার দুয়ার নেতা-কর্মিদের জন্য সব সময় উন্মুক্ত থাকে। তিনি উদার মনের বিচক্ষণ মানুষ।

মোঃ আল-আমিনঃ দোহার উপজেলা আওয়ামী লীগ নিয়ে আপনার ভবিষ্যৎ ভাবনা কি?

নুরুল হক বেপারিঃ আমি সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী। তাই, ভবিষ্যৎ ভাবনা নিয়ে এ মূহুর্তে কোন কমেন্ট করবো না ।

মোঃ আল-আমিনঃ দল যদি আপনাকে বাদ দিয়ে অন্য কাওকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে মনোনয়ন দেয়, আপনি কি মেনে নেবেন?

নুরুল হক বেপারিঃ যদি কাউন্সিলররা আমায় ভোট না দেয় সেক্ষেত্রে যদি অন্য কেউ সাধারণ সম্পাদক হয় তাহলে অবশ্যই আমি দলে সিদ্ধান্তকে মেনে নিবো। দলের বাহিরে কোন কাজ করবো না।

মোঃ আল-আমিনঃ বিএনপি/ বিরোধী রাজনৈতিক শক্তিকে সামনে কিভাবে মোকাবিলা করবেন?

নুরুল হক বেপারিঃ এই বিশয়ে আপাতত আমি কোন কথা বলবো না। আমি যদি সাধারণ সম্পাদক হতে পারি তার পরে ভাববো, দল যে নির্দেশনা দেয়, সে অনুসারে।

মোঃ আল-আমিনঃ সভাপতি পদে কেন একজন অন্য কেউ প্রার্থী হচ্ছে না বলে, আপনি মনে করেন?

নুরুল হক বেপারিঃ দোহার উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলমগীর হোসেন তার রাজনৈতিক জীবনের কৌশল ও সাংগঠনিক দক্ষতা জন্য এগিয়ে আছেন। সুন্দরভাবে দলকে গুছিয়েছেন। সম্পূর্ণ প্রতিকূল পরিবেশে তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তার বিরুধে ষড়যন্ত্র হয়েছে। কিন্তু তিনি তার বুদ্ধি, যোগ্যতা, প্রজ্ঞা আর মেধা দিয়ে সকল কিছু জয় করেছেন। সালমান এফ রহমানেরের জন্য উপযোগী একটি পরিবেশ সৃষ্টি করেছেন। দোহার উপজেলা আওয়ামীলীগ এবং অংগ সংগঠনকে এক করেছেন। তার বিকল্প এখন আর দোহারে কেউ নাই।  সেইসাথে সালমান এফ রহমানের একান্ত আস্থাভাজন ব্যক্তি আলমগীর সাহেব। সেক্রেটারি সভাপতি থাকা শর্তেও আলমগীর সাহেব দলটাকে গোছায়ছেন এককভাবে। কাউন্সিল করিয়েছেন। নির্বাচনে অমানুষিক পরিশ্রম করে নৌকাকে সবখানে বিজয়ী করেছেন। তার সঠিক নেতৃত্বের জন্যই আজ সে সভাপতি এককভাবে প্রার্থী এবং তার কোন প্রতিদ্বন্দ্বী নাই। তাই আমি মনে করি তিনি একমাত্র যোগ্য ব্যক্তি সভাপতি হওয়ার।

আপনার মতামত দিন