কে হচ্ছেন দোহার পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী? (পর্ব – ০২)

1240

কে হচ্ছেন পৌরমেয়র পদে আওয়ামীলীগের প্রার্থী এ নিয়ে যেমন জল্পনা-কল্পনার শেষ নেই। তেমনি নির্বাচনী হাওয়ায় ভেসে আসছে অনেক প্রার্থীর নাম; এদের প্রত্যকেই আবার রাজনৈতিকভাবে আছেন স্ব-স্ব শক্তিশালী পদে।

দোহার উপজেলা আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবকলীগের অনেকেরই রাজনৈতিক গুরু, সাজ্জাদ হোসেন সুরুজও আছেন দোহার পৌরসভা আওয়ামী লীগের থেকে মনোনয়ন নেয়ার দৌড়ে। একজন ত্যাগী ও পরিশ্রমী নেতা হিসাবে সাধারন মানুষ থেকে শুরু করে দোহার উপজেলা আওয়ামী লীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মাঝে তার রয়েছে প্রচন্ড জনপ্রিয়তা। ব্যক্তি হিসাবে সৎ ও পরিচ্ছন্ন ইমেজের অধিকারী আপদমস্তক ভদ্রলোক সাজ্জাদ হোসেন সুরুজকেও অনেকে দেখতে চায় দোহার পৌরসভার মেয়র হিসাবে। নিজে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলেন ছাত্র বয়স থেকেই। তার বাবা সৈয়দ আহমেদ ছিলেন জয়পাড়া পাইলট স্কুলের শিক্ষক এবং আমৃত্যু উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি। আওয়ামীলীগের দুর্দিনে সৈয়দ আহমেদ ছিলেন দলীয় আনুগত্য, ঐক্য ও আশ্রয়ের প্রতীক। তার শিষ্যরাই আজ রাজনৈতিক অঙ্গনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন।  সেই হিসাবে সাজ্জাদ হোসেন সুরুজকেও দলীয় অনেক নেতা-কর্মি দেখতে চায় দোহার পৌরসভার মেয়র পদে। ইতিমধ্যে সাজ্জাদ হোসেন সুরুজের পরিচিত অনেকেই তার হয়ে বিভিন্ন রকমের প্রচারনা শুরু করেছেন। অনলাইনেও শুরু হয়েছে সাজ্জাদ হোসেনের সুরুজের প্রচারনা।

দোহার পৌরসভা মেয়র পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চাইবেন বলে গুজব রয়েছে দোহার উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক ও সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী এডভোকেট আব্দুল মান্নান খানের ছোট ভাই মোতালেব খান। দোহার উপজেলা আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে প্রচন্ড ভাবে আলোচিত – সমালোচিত এই বর্ষিয়ান নেতা মনোনয়ন পাবে কিনা তা নিয়ে সন্দিহান অনেক নেতাই। ইতিমধ্যে পৌরসভা ড্রেনেজ ব্যবস্থার টেন্ডার পেয়েছেন তিনি এবং কাজও চলছে পুরোদমে। তার ভাই আব্দুল মান্নান খান মন্ত্রী থাকাকালিন সময়ে বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে মোতালেব খান ছিলেন প্রচন্ড ভাবে সমালোচিত। মোতালেব খান মনোনয়ন পাবেন কিনা সময়ই তা বলে দিবে।

অন্য খবর  কে হচ্ছেন দোহার পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী? (পর্ব – ০১)

মনোনয়নের দৌড়ে আছেন দোহার উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ও জয়পাড়া বিশ্ববিদ্যালয় (ডিগ্রী) কলেজের শেষ নির্বাচিত ভিপি আলমাস উদ্দিন। এক সময়ের ছাত্র রাজনীতির অত্যন্ত জনপ্রিয় এই মানুষটি এগিয়ে আছে প্রচারণার দৌড়েও। পৌর নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন স্থানে তার পোস্টার ও স্টিকার দেখা যাচ্ছে। দোহারে কোন নির্বাচনে আওয়ামীলীগ জিততে পারে তা যেন ভুলেই গিয়েছিল দোহার উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতা-কর্মিরা। ১৯৯৬ সালে জয়পাড়া কলেজ ছাত্র-সংসদ নির্বাচনে ভিপি, জিএস, এজিএস পদের ৩টি পদেই জয়লাভ করে দোহার ছাত্রলীগ। আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্ব ও বন্ধুত্ব-সুলভ আচরণে তিনি সাধারণের কাছেও অনেক পরিচিত। এছাড়া একবার আওয়ামীলীগ থেকে ভিপি আলমাস, মোতালেব খান ও দেওয়ান মোশাররফ মুসা বহিষ্কৃত হলেও কোনদিন দল ছেড়ে যাননি তিনি। দলের প্রতি আনুগত্য তাকে নিয়ে গিয়েছে যুবলীগের সভাপতি পদে।

এছাড়া ২০১৪ সালের ৫ই জানুয়ারী নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় দল ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়েও আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এই নেতা জেল খেটেছেন কিন্তু তবুও রাজনীতির রাজপথ ছেড়ে তিনি যাননি। এবার তিনি লড়তে চান পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের টিকিট নিয়ে। নিউজ৩৯কে ভিপি আলমাস উদ্দীন জানিয়েছেন, তাকে দল মনোনয়ন দিলে তিনি শতভাগ নিশ্চিত বিজয়ী হওয়ার ব্যাপারে। নির্বাচনী উদাহরণের কথা দিয়ে তিনি বলেন, তিনি ছিলেন ছাত্র সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী আওয়ামীলীগের একমাত্র ব্যক্তি ; এছাড়া তিনি ইতিমধ্যে জয়পাড়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের অভিভাবক প্রতিনিধি নির্বাচনেও জয়লাভ করে বর্তমানে স্কুলটির পরিচালনা পর্ষদের একজন প্রভাবশালী সদস্য। তাই সর্বদা সাধারণ মানুষের সাথে রয়েছে তার মেলামেশা। দল মনোনয়ন তাকে দিবে এবং পৌরমেয়র পদে তিনি জয়লাভ করবেন বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন ভিপি আলমাস।

অন্য খবর  দোহারে জজ মান্নানের শীতার্ত পরিবারের মাঝে কম্বল বিতরণ

এছাড়া ১৯৯৬ সালে জয়পাড়া কলেজ ছাত্র-সংসদ নির্বাচনের নির্বাচিত জিএস ও দোহার উপজেলা যুবলীগের সাধারন সম্পাদক আব্দুর রহমান আকন্দ  নিউজ৩৯ এর কাছে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, দোহার পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে নির্বাচন করার ইচ্ছা। দোহার উপজেলা যুবলীগ-ছাত্রলীগ নেতা কর্মীদের কাছে জনপ্রিয় এই নেতাও চাইছেন দোহার পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে। সম্পূর্ণ দলীয় শৃঙ্খলায় বিশ্বাসী ও সজ্জন এই যুবলীগ নেতা আওয়ামী লীগের কাছে চাইবেন তার মনোনয়ন। দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে তিনি কোন সিদ্ধান্ত নিবেন না এটাও তিনি স্পষ্ট করেছেন।

তিনি নিউজ৩৯কে বলেন, তিনি আশা করেন যখন আওয়ামী লীগের একটা অংশ জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগকেই হারানোর জন্য জাতীয় পার্টির সাথে হাত মিলিয়েছিল সেই সময়ও তিনি ছিলেন আওয়ামী লীগের সাথেই। আর তার সেই সময়ে দলের প্রতি আনুগত্য দল এবার মূল্যায়ন করবে বলে তিনি দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। এছাড়া ছাত্র সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে জয়পাড়া কলেজে ছাত্রলীগের ঘাটি স্থাপন করেছিলেন বলেও তিনি জানান। এলাকায় বয়ঃ- বৃদ্ধদের কাছের লোক হিসাবে পরিচিত আব্দুর রহমান আকন্দ জানান তিনি আশা করেন, দল মনোনয়ন দিলে প্রথমবারের মতো পৌরমেয়র পদটি আওয়ামীলীগ সভানেত্রীকে উপহার দিলেন।

অপেক্ষায় থাকুন, নিউজ৩৯ পড়ুন, এবার আসছে ৩য় পর্ব …………

আপনার মতামত দিন