দোহার পৌরসভা (শেষ পর্ব): উপসম্পাদকীয় – আব্দুর রহমান আকন্দ

1108

প্রিয় পৌরবাসী, আরেকটি বিষয় আমার ভাবতে অবাক লাগে এই ২০১৫ সালে উপস্থিত হয়ে আমরা পৌরসভার রাস্তা নির্মাণ বা সংস্কার গুলো দেখলে দেখবো এগুলোর নাম দেয়া হয়েছে “পচার বাড়ির সামনে দিয়ে অমুকের বাড়ির পিছনের রাস্তা”। অথচ আমরা যদি একটু আধুনিক দৃষ্টি কোন থেকে দেখি তাহলে পৌরসভার বিশিষ্ট ব্যক্তিদের  নামে যারা এখন ইন্তেকাল করেছেন তাদের নামে করা যায়। অথবা জাতির শ্রেষ্ট সন্তান মুক্তিযোদ্ধাদের নামে করা যায়। দোহার উপজেলা পৌর পরিষদকে বার বার অনুরোধ করা সত্ত্বেও তা তারাআমলে আনছে না। সুতরাং আমরা আমাদের বাপ দাদার নামে যে রাস্তার নামকরণ করে যাচ্ছি তা দেখার কেউ নাই।

একটি আধুনিক পৌরসভার জন্য অনেকগুলো জনকল্যান মুলক প্রতিষ্ঠান থাকতে হয়। তার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ হলো দোহার পৌরবাসীর জন্য একটি কবরস্থান, বাস টার্মিনাল, পৌর খেলার মাঠ, পৌর মার্কেট, পৌর শিশু পার্ক, আবর্জনা নিষ্কাসনের স্থান, প্রতিটি ওয়ার্ডে সুনির্দিষ্ট কিছু স্থান যেখানে পৌরসভার ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের অফিস থাকবে। কিন্তু প্রথম শ্রেণীর পৌরসভা হলেও দোহার পৌরসভার আওতায় এগুলোর কিছুই নেই। আমি ব্যক্তিগত ভাবে দুইজন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ভূমি কর্মকর্তার সাথে কথা বলেছিলাম এই ব্যাপারটা নিয়ে। তাদের বলেছিলাম এই সব প্রতিষ্ঠানের জন্য পরবর্তীতে জমি ক্রয় অসম্ভব হয়ে যাবে যদি এখইন জমি ক্রয় না করা হয়। তাই তাদের অনুরোধ করেছিলাম পৌরসভার খাস জমিগুলো কোন ব্যক্তিকে লিজ না দিয়ে তা পৌরসভায় স্থানান্তর করতে যা জনকল্যানের জন্য পৌরসভা ব্যবহার করতে পারবে। কিন্তু দুঃখের বিষয় আমার এই পরামর্শ কারো কাছেই গ্রহনযোগ্য মনে হয় নি।

অন্য খবর  তরুণদের ভাবনা: আমরা মৃত্যু ঝুকি ঘাড়ে করে ঘুরে বেরাচ্ছি

প্রিয় পৌরবাসী আপনারা লক্ষ করে থাকবেন দোহার পৌরসভার ভিতরে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় বা চৌরাস্তা রয়েছে। যেমন বাশতলা থেকে করম আলীর মোড়, দোহার বাজার, কাজীর চর, জয়পাড়া কলেজ মোড় ইত্যাদি। এসব মোড় গুলোতে দুর্ঘটনা, যানজট ও অগোছালো গাড়ি পার্কিং সবসময় দেখা যায়। গত ৩ বছর অসংখ্যবার মেয়র ও নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে বলা হয়েছিল এই মোড় গুলোর মধ্যে মূরাল তৈরি করা হোক, এতে যেমন দুর্ঘটনা এড়ানো যেত সেই সাথে এই এলাকার সৌন্দর্যও বর্ধন হতো। এই প্রস্তাবটি আমি ৩ বছর আগে ব্যক্তিগত ভাবে উত্থাপন করলে অর্থের সংকটের কথা বলে বাড় বাড় এড়িয়ে যায় দোহার পৌরসভা। তখন আমি তাদের জয়পাড়া বাজারে অবস্থিত বেসরকারি ব্যাংকগুলোর কাছে সহযোগিতা চাওয়ার প্রস্তাব করি। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলেও সত্য ব্যাংক কর্মকর্তাদের সাথে প্রাথমিক ভাবে মিটিং হলেও পৌর কর্তৃপক্ষের আন্তরিকতার অভাবের কারনে আলোর মুখ দেখে নি এই গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পটি। এই মুরালগুলো স্থাপন করা হলে একদিকে যেমন দুর্ঘটনা এড়ানো যেত সেই সাথে পৌর এলাকার সৌন্দর্য বর্ধনও হতো। সেই সাথে মুরালগুলোতে এলাকার বিশিষ্ঠ ব্যক্তি ও মুক্তিযোদ্ধাদের নামে নাম করন করে তাদের সম্মানিতও করা যেত। যেমন নাম করন করা হয়েছিল দোহার বাজারের চত্ত্বরটি মরহুম কাজী আফতাব উদ্দিনের নামে।

অন্য খবর  বাংলাদেশের বেসরকারি উচ্চ পদগুলো ভারতীয়দের দখলে

অতীব দুঃখের বিষয় পৌর বাসীর সুযোগ সুবিধার দিকে পৌর কর্মকর্তাদের নজর দেয়ার কথা থাকলেও তারা নিজেদের দিকে বেশি নজর দিতে ব্যস্ত। পৌর সভার চাহিদা রাস্তাঘাট মেরামতকে উপেক্ষা করে পৌর কর্মকর্তাদের আরাম আয়েসের জন্য তৈরি করা হচ্ছে আরামদায়ক ইমারত এবং পৌর সভার জন্য তৈরি করা হচ্ছে গেট। যেখানে পৌরসভার মানুষের চাহিদা ও প্রাপ্তির মাঝে এতো পার্থক্য সেখানে পৌরসভার এমন কর্মকাণ্ড আমি মেনে নিতে পারি না।

সব শেষে আমার শেষ কথা, পৌরবাসী এই পরিষদের কাছ থেকে কতটুকু কি সুবিধা পেয়েছে তা আমি জানি না, তবে এতোটুকু জানি তাদের পৌরবাসীর সুবিধার দিকে নজর দেয়ার থেকে নির্বাচন ঠেকানোর দিকেই বেশি নজর।

আব্দুর রহমান আকন্দ
সাধারণ সম্পাদক
দোহার উপজেলা যুবলীগ
সর্বশেষ নির্বাচিত জিএস
জয়পাড়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ছাত্র সংসদ ১৯৯৬

আপনার মতামত দিন