দোহারের অলিগলি শেষ মূহুর্তের প্রচারণায় মুখরিত

750
নির্বাচন

ঢাকার দোহার উপজেলা পরিষদের উপনির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে শেষ মূহুর্তে প্রতিদ্বন্দ্বী তিন প্রার্থীর গণসংযোগ ও প্রচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে গোটা এলাকা। রাস্তা, অলিগলি, হাটবাজার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছেয়ে গেছে পোস্টারে। প্রার্থীরা নানা কৌশল কাজে লাগিয়ে নিজেদের পক্ষে সমর্থন নেয়ার চেষ্টা করছেন। উল্লেখ্য গত ২৬ জুন দোহার উপজেলা চেয়ারম্যান কামরুল হুদার মৃত্যুর পর পদটি শূন্য হয়। আর আগামী ২১ সেপ্টেম্বর দোহার উপজেলা চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

জানা যায়, দোহারের সাইনপুকুর থেকে নয়াবাড়ী অরঙ্গাবাদ পর্যন্ত ৮টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় ভোটার সংখ্যা দেড় লক্ষাধিক। উপনির্বাচনকে কেন্দ্র করে দোহারের সর্বত্রই চলছে নির্বাচনের আমেজ। চায়ের দোকান থেকে শুরু করে অফিস আদালত পর্যন্ত বিভিন্ন প্রার্থীর পক্ষে-বিপক্ষে চলছে আলোচনা-সমালোচনা ও পর্যালোচনা নির্বাচনী উৎসবের পাশাপাশি আতংক, ভয় ও হতাশা কাজ করছে ভোটারদের মাঝে। এরই মধ্যে সতন্ত্র প্রর্থী ইঞ্জিনিয়ার মেহবুব কবিরের সমর্থকদের উপর হামলা করে ৩ জনকে আহত ও ক্যাম্পে আগুন অপরদিকে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী আলহাজ্ব মো. সিরাজুল ইসলাম ভুলুর একটি নির্বাচনী ক্যাম্পে আগুন দেয়ার খবর পাওয়া গেছে।  সরকারি দলের সমর্থিত প্রার্থী দোহার উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আলমগীর হোসেনের পক্ষে সবাই এক হয়ে মাঠে নেমেছেন বেক্সিমকো গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান সালমান এফ রহমান, সাবেক প্রতিমন্ত্রী আবদুল মান্নান খান, সাবেক এমপি খন্দকার শহীদ আহমেদ, ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বেনজির আহাম্মেদ, ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান, আওয়ামী লীগের সহ-সম্পাদক পনিরুজ্জামন তরুন, সরুজ আলম প্রমুখ। নেতাকর্মীরা নিজ দলের প্রার্থীর পক্ষে গ্রাম, ওয়ার্ড ও ইউনিয়নে সভা সমাবেশ ও গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছে। বুধবার সকালে আলমগীর হোসেন জয়পাড়া বাজার, মাহমুদপুর, লাটাখোলায় গনসংযোগ করেন।

অন্য খবর  দোহারে অজ্ঞাত নবজাতকের দেহ উদ্ধার

আওয়ামীলীগ সমর্থিত প্রার্থী আলমগীর হোসেন বলেন, সাধারণ ভোটাররা তার পক্ষে রয়েছেন। একটি পক্ষ তাদের পরাজয় নিশ্চিত জেনে নির্বাচন বানচালের উদ্দেশ্যে নানা প্রোপাগন্ডা ছড়াচ্ছে। তার মতে সুষ্ঠু ও স্বাভাবিক নির্বাচন হবে। তিনি নির্বাচনে জয়ের আশা শত ভাগ প্রকাশ করেন। তবে তার অভিযোগ তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা ভোটারদের মাঝে কালো টাকা ছড়াচ্ছে। নির্বাচনে আনারস প্রতীক নিয়ে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

এদিকে বিএনপির প্রার্থী দলের দোহার উপজেলা সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মো. সিরাজুল ইসলাম ভুলু দোয়াত কলম প্রতীক নিয়ে ভোটের মাঠে লড়াই করছেন। তার সঙ্গে প্রচারণায় মাঠে নেমেছেন সাবেক তথ্য ও যোগাযোগমন্ত্রী, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী জোটের চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা, উপজেলা বিএনপির সভাপতি সাহাবুদ্দীন আহমেদ, নবাবগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান খন্দকার আবু আশফাক সহ বিএনপি অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। তারাও ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করছেন। বুধবার তিনি উপজেলার কাচারীঘাট বাজার, পালামগঞ্জ, বাশতলা এলাকায় প্রচারনা চালান। বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী আলহাজ্ব মো. সিরাজুল ইসলাম ভুলু বলেন, তার প্রতিপক্ষ নানাভাবে হয়রানি করার চেষ্টা করছে। নেতাকর্মীরা ভয় ও আতংকে আছে। আমার নির্বাচনী ক্যাম্পে আগুন দেয়া হয়েছে। প্রশাসনের বিরুদ্ধে তার অভিযোগ তারা একচোখা নীতিতে নির্বাচনী কার্যক্রম চালাচ্ছে। সাধারণ ভোটার ও নেতাকর্মীদের মাঝে সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে সংশয় রয়েছে। ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীর সমর্থকরা নির্বাচনী আচরণবিধি লংঘন করলেও তা দেখছে না প্রশাসন। কিন্তু আমাদের উঠান বৈঠক ও গণসংযোগে দুর্বৃত্তরা বাধা দিলেও প্রশাসন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।

অন্য খবর  বিদেশ থেকে ফিরেই অংশ নিতে পারলেন না নির্বাচনে

এ বিষয়ে দোহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম বলেন, নির্বাচনী বিধি ভঙ্গ করলে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার নির্দেশে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। কোনো অভিযোগ এলে তা তাৎক্ষণিক দেখা হচ্ছে।

অপরদিকে, আরেক চেয়ারম্যান প্রার্থী প্রকৌশলী মেহবুব কবির কোনো রাজনৈতিক দলের সরাসরি সমর্থন না পেলেও তার পাশে দোহারের আওয়ামী লীগ ও বিএনপির অনেক নেতাকর্মী রয়েছেন। গত উপজেলা নির্বাচনে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে প্রায় ২৮ হাজার ভোট পেয়ে দ্বিতীয় হন। এরপর থেকেই তিনি দোহারের বিভিন্ন স্থানে উন্নয়নমূলক কাজ করে জনগণের পাশে থাকেন। এই কারনে তিনি ভোটারদের সমর্থনও পাচ্ছেন অনেক। তিনি আশাবাদী ভোটাররা নির্বিঘেœ ভোট দিতে পারলে তিনি জয়ী হবেন। বুধবার তিনি উপজেলার ইক্রাশী, জয়পাড়ায় প্রচারনা চালান। মেহবুব কবিরের অভিযোগ, একটি প্রভাবশালী মহল প্রতিনিয়ত নানা হুমকি ধামকি দিয়ে বেড়াচ্ছে। তার কর্মীদের ওপর হামলাও চালানো হয়েছে। ক্যাম্পে আগুন দেয়া হচ্ছে, খিচুরী খাওয়ানো হচ্ছে। তবে প্রশাসন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।

এ বিষয়ে সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা জসীম উদ্দিন বলেন, তার কাছে আচরণবিধি লংঘনের কোনো লিখিত অভিযোগ নেই। দুজন ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত টহলে রয়েছে। ভোটের দুইদিন আগে থেকে আরো ৬ জন ম্যাজিস্ট্রেট মাছে নামানো হবে।

আপনার মতামত দিন