বিল তোলা হলেও কবরস্থান প্রকল্পে হয় নি একটা ইটেরও গাঁথুনি

300

ঢাকা জেলা পরিষদের উন্নয়ন প্রকল্পের বাস্তব অবস্থা কী, সেটা বোঝা যায় একটি উদাহরণ থেকে- ২০১২-১৩ অর্থবছরের বাজেটে জেলার নবাবগঞ্জ উপজেলার যন্ত্রাইল কবরস্থান উন্নয়নের জন্য ২১ লাখ ৮৫ হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। এই প্রকল্পের কাজ শেষ দেখিয়ে ২০১৩ সালের ৩১ জুলাই বিলও উঠিয়ে নেয় সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু তদন্তে দেখা গেছে, ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কবরস্থানের কোনো উন্নয়ন কাজই করেনি। অর্থাৎ দুর্নীতির আগ্রাসী তৎপরতা থেকে কবরস্থানের বরাদ্দ পর্যন্ত রেহাই পায়নি!

কাগজে-কলমে ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে সামাজিক-সাংস্কৃতিক খাতের ৫০ কোটি এবং অবকাঠামো উন্নয়ন খাতের ৫০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়েছে। মোট ১ হাজার ১৫৬টি প্রকল্পের মধ্যে ১ হাজার ৫০টি প্রকল্পই ভুয়া। এই ভুয়া প্রকল্পগুলোর নামে অভাবনীয় এই দুর্নীতির খবর প্রকাশ পেলে তদন্ত শুরু করে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়, দুর্নীতি দমন কমিশন এবং সরকারি অডিট বিভাগ। প্রবল প্রতাপশালী দুর্নীতিবাজরা তদন্তে নামা সংস্থার লোকজনকে পর্যন্ত বশীভূত করে ফেলেছে বলে ঢাকা জেলা পরিষদের কর্মকর্তা এবং ভুক্তভোগী ঠিকাদাররা হতাশা ব্যক্ত করেছেন। ফলে দেখা যাচ্ছে, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটি প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন না করে অফিসে বসে ফাইলপত্র দেখেই তদন্ত গুটিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছে। সরেজমিনে এই ভয়াবহ দুর্নীতির তদন্তকারীরাও দুর্নীতির ব্লাকহোলে শরিক হচ্ছে। অর্থাৎ ঢাকা জেলা পরিষদে চলছে দুর্নীতির মহোৎসব।

অন্য খবর  ছাত্রদল থেকে কাওছার মাহমুদ শাওনের বরিস্কারাদেশ প্রত্যাহার

একটা সময় ছিল যখন সরকারি কাজে দুর্নীতির ধরন ছিল কমদামি দ্রব্য বেশি দামে ক্রয় কিংবা ১০টি দ্রব্য ক্রয়ে ২টি আত্মসাৎ করা। কিন্তু এমন পদ্ধতির কথা অকল্পনীয় যে, ৫০টি কম্পিউটার কেনার জন্য টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে, কম্পিউটার ক্রয় ও সরবরাহের জন্য ৩৮ লাখ টাকা সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে পরিশোধ করা হয়েছে; কিন্তু একটি কম্পিউটারেরও দেখা মেলেনি! কারণ কার্যত কম্পিউটার কেনাই হয়নি- সবই ঘটেছে কাগজে-কলমে, চেকে। অর্থাৎ কাজীর গরু কেতাবে আছে, গোয়ালে নেই- ঢাকা জেলা পরিষদে এমন খোলা দুর্নীতিই চলছে। এক্ষেত্রে তাদের কোনো চক্ষুলজ্জা নেই, কেননা সবই এই দুর্নীতিবাজদের হাতের মুঠোয়। এই ভয়ংকর দুর্নীতিবাজদের কঠোর শাস্তি প্রদানের বিকল্প নেই।

আপনার মতামত দিন