রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতির আড়ালে হারিয়ে যাচ্ছে পদ্মাতীরের মানুষের চোখের জল

375

নিউজ৩৯.নেট ♦ “মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসলে দোহারের নদী ভাঙ্গন প্রতিরোধ করা হবে”- শেখ হাসিনা ২০০৮ সালের নির্বাচন পূর্ব জনসভায় এমনই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, বলেছিলেন পদ্মা তীরে গড়ে তোলা হবে পর্যটন এলাকা। সেই সাথে তৎকালিন এমপি গৃহায়ণ ও গনপূর্ত প্রতিমন্ত্রী আব্দুল মান্নান খান ও পদ্মা বাঁধের প্রতিশ্রুতির বন্যায় ভাসিয়ে দিয়েছিলেন এই অঞ্চলের মানুষকে। ফলশ্রুতিতে স্বাধীনতার পর প্রথম বারের পর ঢাকা ১ আসনটি দখল করতে সক্ষম হয় আওয়ামী লীগ। এমপি হন আব্দুল মান্নান খান এবং স্থান পান আওয়ামী লীগের মন্ত্রী সভায়।

এর পরের ৫ বছর পদ্মার নিয়মিত ভাঙ্গনে পদ্মা যত কাছে এসেছে এই এলাকার সাথে তার দূরত্ব তত বেড়েছে। চোখের জলে নিজের ভিটামাটি হারিয়ে ততদিনে উদ্বাস্তুতে পরিনত হয়েছে দোহারের প্রায় ৩০ হাজারেরও উপরের দোহারবাসী।

এর মাঝে ২০১৪ সালের নির্বাচনে মান্নান খানকে হারিয়ে এমপি নির্বাচিত হয় জাতীয় পার্টির সালমা ইসলাম। দোহার-নবাবগঞ্জের মৃতপ্রায় জাতীয় পার্টির এই জয়ের মূল সহায়ক ভূমিকা পালন করেছে পদ্মা বাধ। নির্বাচনী বৈতরনী পার হওয়ার পর তিনিও আমাব্যশার চাঁদে পরিনত হয়েছেন।

ইতিমধ্যে ভাঙ্গন কবলিত এলাকায় ত্রাণ বিতরণের নামে নতুন এক প্রহসন তৈরী হয়েছে। ভোটের রাজনীতির বলি বানাতে কারো চেয়ে পিছিয়ে নেই কোন দল। এই ত্রাণ কার্যক্রম দেখে নয়াবাড়ি ইউনিয়নের হাবিবুব রহমান বলেন, “যে কয়টাকা খরচ করে ত্রান দেওয়া হচ্ছে ব্যক্তি উদ্যোগে সেই টাকা গুলো দ্বারা যদি বস্তা ভর্তি করে নদী তীরে ফেলা হতো তাহলেও ভাঙ্গন অনেক কমে যেতো। এরা এখানে আসে অসহায় মানুষের সার্কাস দেখতে।“

অন্য খবর  নবাবগঞ্জে নতুন করে করোনা শনাক্ত ৭; মোট আক্রান্ত ৩৩১

কয়েক দিন আগে ঢাকা জেলা বিএনপির উদ্যোগে ত্রাণ বিতরণ করা হয় ভাঙ্গন কবলিত অঞ্চল গুলোতে। সেই দিনের বক্তব্যে সাধারন মানুষের প্রতি সহানুভুতি জানানো দূরে থাক, ক্ষমতার রাজনীতিতে তাদের ব্যবহার করার উদ্যেশ্যে তাদেরকে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার হাতকে শক্তিশালী করতে আহ্বান জানান। অসহায় মানুষগুলোর প্রতি এর চে’ বড় কৌতুক আর কি হতে পারে!

এরপর ঈদের আগে এই অঞ্চলের মানুষের কাছে দেখা দেন জাতীয় পার্টির স্থানীয় এমপি সালমা ইসলাম। কিন্তু তিনিও ত্রান বিতরণের নামে প্রহসনের একটা অনুষ্ঠান করে অসহায় ভাবে ফেলে রেখে যান এই পদ্মা তীরের মানুষগুলোকে। বরাবরের মতো প্রতিশ্রুতির পাহাড় শুনিয়ে গেলেও তা বাস্তবায়নের কোন লক্ষণ এখনো দেখা যায় নি।

বরাবরের মতো রাজনৈতিক ঘুটিতে পরিনত হচ্ছে এই অঞ্চলের মানুষগুলো। তাদের নিয়ে এই রাজনৈতিক প্রহসনগুলো কি শেষ হবে না!

আপনার মতামত দিন