কামরুল হুদা, দোহার-নবাবগঞ্জে রাজনৈতিক অঙ্গনে অত্যন্ত পরিচিত একটি নাম। সাবেক যোগাযোগ মন্ত্রী ও বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা এবং বর্তমানে বিএনএফ এর আহবায়ক ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার ছোটভাই হিসাবে তার পরিচিতিটা বেশি। শিক্ষানুরাগী, ক্রীড়াপ্রেমী ও সাংস্কৃতিক ব্যাক্তিত্ব হিসাবে তার খ্যাতি রয়েছে। ক্লাস নাইনে পড়াকালে একজন বোলিং অলরাউন্ডার হিসাবে পাকিস্তান ক্রিকেট একাডেমির বয়স ভিত্তিক ক্যাম্পে ডাক পেয়েছিলেন। বর্তমানে ঢাকা জেলা বিএনপি’র সিনিয়র সহ-সভাপতি হিসাবে কামরুল হুদা সুশাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে মাদক ও সন্ত্রাস মুক্ত দোহার গড়তে আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন দোয়াত-কলম প্রতীক নিয়ে।
নিউজ৩৯ এর সাথে একান্ত সাক্ষাৎকারে বলেছেন তার অতীত, বর্তমানের বিভিন্ন কথাসহ ভবিষ্যতের পরিকল্পনা নিয়ে – সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আছিফুর রহমান সাথে ছিলেন জাকির হোসেন পলাশ।
নিউজ৩৯: আপনার শিক্ষাজীবন কোথায় কেটেছে?
কামরুল হুদা: ব্যাচেলার অব সাইন্স, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
নিউজ৩৯: বর্তমানে আপনি কোন পেশায় যুক্ত আছেন?
কামরুল হুদা: ব্যবসায়।
নিউজ৩৯: রাজনীতিতে আসার পিছনের ঘটনা যদি বলেন?
কামরুল হুদা: আমাদের পরিবার শুরু থেকেই রাজনৈতিক পরিবার। সালমান এফ রহমানের বাবা ফজলুর রহমান সাহেব ছিলেন আমার চাচাত দাদা। ফজলুর রহমান সাহেব ছিলে পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় শিল্প ও শিক্ষা মন্ত্রী। আর তখন থেকেই আমরা রাজনীতি সচেতন পরিবার ছিলাম।
তারপর আমার ভাই ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা রাজনীতিতে এলেন। তখন থেকেই তাকে আমার সার্পোট দিতে হত। কারন নেতৃত্বগুণ আমার জন্মগত ভাবে ছিল। আমি কলেজে কলেজ ক্যাপ্টেন ছিলাম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে নটরডেম কলেজ থেকে ব্যাচেলর অব সাইন্স ডিগ্রি নেয়ার পর আমি বিদেশে চলে যাই। কারন আমাদের শিল্প-কারখানাগুলো দেখা শোনা করার জন্য আমাকে বাইরে চলে যেতে হয়। জুট টেকনলজির উপর আমি প্রাক্টিকাল শিক্ষার জন্য আমার এই প্রবাসে যাওয়া। এছাড়া বেলফেস্টের কুইন্স ইউনিভার্সিটিতে আমি ব্যবস্থাপনার উপর কোর্স কমপ্লিট করি। কিন্তু কম বয়স হওয়ার কারনে আমি পরীক্ষা দিতে পারিনি। তারপর আমি দেশে ফিরে এসে কর্মজীবনে প্রবেশ করি।
নিউজ৩৯: আমরা জানি, আপনি স্বাধীনতাপূর্ব সময়ে পাকিস্থান ক্রিকেট একাডেমিতে ডাক পেয়েছিলেন।
কামরুল হুদা: আমি তখন ক্লাস নাইনের ছাত্র। আরমানীটোলা স্কুলের ছাত্র ছিলাম । তখন আমাকে বিখ্যাত ব্যাটসম্যান ও তৎকালীন পাকিস্থানের প্রধান নির্বাচক মুস্তাক মোহাম্মদ আমার খেলা দেখে পাকিস্তান ক্রিকেট একাডেমীর বয়স ভিত্তিক ক্যাম্পে ডেকেছিলেন। করাচিতে আমার ডাক পড়লো। আমি একজন বোলিং অলরাউন্ডার ছিলাম। আমরা বাঙ্গালীরা কিন্তু অনেক আবেগী। যখন করাচি যাওয়ার ডাক পড়লো তখন আমার মা আমাকে যেতে দিলেন না।
নিউজ৩৯: আপনি যেহেতু খেলাধুলার সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন । তাই উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলে কতটুকু অবদান রাখতে পারবেন দোহারের ক্রীড়াক্ষেত্রে।
কামরুল হুদা: উপজেলা পরিষদের সুযোগ সুবিধা অনেক কম। সাধ থাকলেও সাধ্য অনেক কম। একটা সময় আমার ছোটভাই মরহুম বদরুল হুদার নামে একটি ক্রিকেট টূর্নামেন্ট আয়োজন আমরা করেছিলাম। কিন্তু পরবর্তীতে বিভিন্ন কারণে সেটা আর হয় নি। আমি আমার সাধ্যে যতটুকু আছে তার সবই করবো ব্যাক্তিগত ও জাতীয় পর্যায় থেকে।
নিউজ৩৯: আপনি জানেন, দোহার বর্তমানে জাতীয় মাদক পাচারের রুটে পরিনত হয়েছে। এর বিরুদ্ধে আপনি কি ব্যবস্থা নিবেন?
কামরুল হুদা: এটি শুধু বর্তমানে না। পূর্বেও ছিল। নয়াবাড়ি একসময় এর প্রধান রুটে পরিণত হল। পরবর্তীতে বিএনপি যখন শেষবার ক্ষমতায় আসে তখন আমি তা বন্ধ করেছিলাম। বর্তমানে তা আবার মাথাচারা দিয়ে উঠেছে। এখন ঔষধ কোম্পানীগুলোর বিক্রয় প্রতিনিধির মতো মাদক বিক্রয় প্রতিনিধিও তৈরী হয়ে গেছে। আমার প্রধান টার্গেট হবে এই মাদক পাচার বন্ধ করা। এর আগে মাদকদ্রব্য অধিদপ্তরকে সাথে নিয়ে আমি মাদকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থাও গিয়েছিলাম।
একটা কথা আসতে পারে রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় এটি ঘটছে কি’না! তবে আমি আপনাদের চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলতে পারি আমাদের সময় এটি হয় নি। আর বর্তমানের কথা বললে সেটা আপনারাই ভাল জানেন। আমি নির্বাচিত হলে জনগনকে সাথে নিয়ে এটির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলবো। এটি প্রতিরোধ বা সচেতনতা একা কারও পক্ষে করা সম্ভব নয়। জনগনকে নিয়ে মাদকের বিরুদ্ধে এই যুদ্ধে আমাদের জয়ী হতেই হবে। আমার সর্ব্বোচ চেষ্টা থাকবে প্রশাসনকে মাদকের বিরুদ্ধে ব্যবহার করে দোহার থেকে মাদক উচ্ছেদ করা ।
নিউজ৩৯: নদী ভাঙ্গন বর্তমানে দোহারের সবচেয়ে বড় সমস্যায় পরিনত হয়েছে। উপজেলা চেয়ারম্যানের সীমিত ক্ষমতার মধ্যে আপনি কতটুকু কি করতে পারবেন বলে আশা করছেন?
কামরুল হুদা: আসলে আমার ভাই ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার সময় দোহারে প্রচুর উন্নয়ন কাজ হলেও আমার ভাইও কিন্তু নদী ভাঙ্গনের জন্য কিছু করতে পারেন নি। এটি সম্পূর্ন পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপর ন্যাস্ত। ওখান থেকেই বাজেট নির্ধারণ করা হয়। মিনিস্ট্রির উপর নির্ভর করবে এই সব কর্ম। যদি আমি নির্বাচিত হতে পারি তাহলে আমি নদী ভাঙ্গন প্রতিরোধে বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারবো বলে আশা করি। যদিও মন্ত্রণালয়ের অবস্থা আপনারা জানেন। আমি আমার সাধ্যের ভিতরে সবটুকু করবো।
নিউজ৩৯: দোহারের অন্যতম প্রধান সমস্যার মধ্যে অন্যতম ভঙ্গুর রাস্তা। ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার সময় সড়ক নির্মান ও সংস্কারের পর আর কোন উন্নয়নের ছোয়া এখানে লাগে নি। রাস্তা ঘাট উন্নয়নের ব্যাপারে আপনি কি করবেন?
কামরুল হুদা: আমি তো মন্ত্রী না। আমার ভাই মন্ত্রী থাকার সময় রাস্তা ঘাটের প্রভুত উন্নয়ন করেছি। পরবর্তীতে সংস্কারের অভাবে এটি আর উন্নত হয় নি। এটি খুব দুঃখ জনক। সরকার যদি উন্নয়নের অংশীদার হতে চায় তাহলে আমি এই রাস্তাঘাট গুলোর দ্রুত সংস্কার করতে পারবো। তাছাড়া উন্নয়ন কর্মকান্ডের সাথে সাথে আমি নতুন প্রজেক্ট হাতে নিব ইনশাল্লাহ। আর বিএনপির শেষ আমলে যে রাস্তাঘাট হয়েছে তাতে আমি তো বিভিন্ন কাজের তদারকি করেছি।
নিউজ৩৯: বাল্য বিবাহ প্রতিরোধে ও শিক্ষাক্ষেত্রে দোহার এখনো অনগ্রসর । এর বিরুদ্ধে কি পদক্ষেপ নিবেন?
কামরুল হুদা: দোহারে আগের থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বেড়েছে। কিন্তু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বাড়লেও বিভিন্ন কারনে দোহারে দক্ষ শিক্ষকের স্বল্পতা রয়েছে। বিভিন্ন সুবিধা আমরা দিতে পারি না বলে দক্ষ শিক্ষকরাও এখানে আসতে চান না। আর চরাঞ্চলে অভিভাবকেরা দারিদ্র্যতার কারনে ও শহরে নিরাপত্তার কারণে অনেকে মেয়েদের নির্দিষ্ট বয়সের পূর্বেই বিয়ে দিয়ে দেন। আর ছেলেদের কাজে পাঠিয়ে দেন। শিক্ষার অনগ্রসরতাও এখানে অন্যতম একটি কারণ। এসব কারণে শিক্ষার অগ্রগতি চরাঞ্চলে কম। কিন্তু বাধ্যতামূলক শিক্ষা ব্যাপারটা যদি যথাযথ প্রয়োগ করা হয় তাহলে এই সমস্যার কিছু সমাধান আসবে। দ্রুততো আর বাড়বে না। আস্তে আস্তে বাড়বে।
নিউজ৩৯: দোহারের ১৫ হাজার তরুন ভোটার। এদের উদ্দেশ্যে আপনার বক্তব্য কি?
কামরুল হুদা: তরুনদের কর্মসংস্থানে যে বিষয়টি সবচেয়ে কাজে লাগতে পারে তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে কিছু সমবায় সমিতি চালু হয়েছে। এবং তারা যথেষ্ট তৎপর। দোহারে আমি সমবায় সমিতি গঠনের ব্যাপারে সবাইকে উৎসাহিত করবো। সেই সাথে জনগণকে আত্ম-কর্মসংস্থান ও শিল্পপতিদেরকে শিল্প স্থাপনে উৎসাহিত করবো। আর অর্থনৈতিক উন্নয়নে আমি আমার সর্ব্বোচ্চ চেষ্টা করবো।
নিউজ৩৯: সরকার আওয়ামী লীগের, স্থানীয় এমপি জাতীয় পার্টির। উপজেলা নির্বাচনে জয়লাভ করলে এদের কাছ থেকে আপনি কতটুকু সহায়তা পাবেন বলে আশা করছেন?
কামরুল হুদা: সরকার আওয়ামী লীগের। সরকার চাইবে দেশকে স্থিতীশীল রাখতে। এর জন্য গুড গভার্নেস একটি গুরুত্বপূর্ন বিষয়। আমরা দেখেছি তাদের মন্ত্রীদের যাদের বিরুদ্ধে দূর্নীতির অভিযোগ আছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে। এখানে কে ক্ষমতায় তা ব্যাপার না। স্থানীয় সরকার পদ্ধতি একটু ভিন্ন। এখানে ব্যাপারটা হচ্ছে উন্নয়ন। দেশের উন্নয়নে যদি তারা আমাকে ব্যবহার করতে পারে, তাহলে দোহারের উন্নয়নে এটি কোন বড় প্রতিবন্ধকতা হিসাবে থাকবে না। আমি নির্বাচিত হলে সীমিত ক্ষমতার মধ্যে সবটুকু উজাড় করে দিতে সচেষ্ট থাকবো।
নিউজ৩৯: রাজনৈতিক মতাদর্শে আপনি বিএনপি’র কর্মী। সেই সাথে ঢাকা জেলা বিএনপির সহ-সভাপতিও। আপনার ভাই ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা বিএনএফের প্রতিষ্ঠাতা। অপরদিকে সালাউদ্দিন মোল্লা দোহার উপজেলা নির্বাচনে বিএনপির একক প্রার্থী হিসাবে নিজেকে দাবী করেন। এখন আপনি আসলে কোন দলের সমর্থিত প্রার্থী?
কামরুল হুদা: আমি ঢাকা জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি। দলীয় কোন নির্দেশনায় এখানে নির্বাচন হচ্ছে না। এখানে দলীয় মনোনয়নের কোন ব্যাপার আছে বলে জানা নেই। সবাই জানে আমি বিএনপির কট্টরপন্থী একজন নেতা। সেখানে সালাউদ্দিন মোল্লা মানুষকে কনফিউজ করছে। আমি যতদুর জানি কেউ তাকে ব্যবহার করছে। মাঠ পর্যায় থেকে আমি যতটুকু তথ্য পাচ্ছি কেউ একজন তাকে সাপোর্ট দিচ্ছে আমার বিরুদ্ধে টিকে থাকার জন্য। এতে বিএনপির কিছু ক্ষতি হবে। এবং থার্ড পার্টি এতে লাভবান হতে পারে। কিন্তু বিএনপি’র কর্মী হিসাবে জয় আমারই হবে ইনশাল্লাহ।
নিউজ৩৯: দোহারের শেষপ্রান্তে আপনার বাস। সেই সাথে আপনি একজন ব্যবসায়ী। উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলে আপনি কি উপজেলায় নিয়মিত সময় দিতে পারবেন?
কামরুল হুদা: ব্যবসা দেখার জন্য তো ম্যানেজার আছে। আমি উপজেলায় সময় দিতে পারবো বলেই তো নির্বাচনে অংশ নিয়েছি। আমি দোহারের মাটির কাছের মানুষ। তাই উপজেলায় আমাকে সব সময় পাওয়া যাবে।
নিউজ৩৯: নির্বাচনের পর কি জনগন একজন প্রশাসক কামরুল হুদাকে পাবে, না সবার প্রিয় কামাল ভাইকে পাবে?
কামরুল হুদা: আমার মনে হয় কামাল ভাই উপাধি আমার থেকেই যাবে। আমি খুব বন্ধুবাৎসল। আমি সবার সাথে কথা বলি, সবার কথা শুনি। সেই কারনে মনে হয় আমি সবার কাছে কামাল ভাই-ই থেকে যাব।
নিউজ৩৯: কঠিন প্রতিপক্ষ কাকে মনে করছেন?
কামরুল হুদা: একজন আমাকে একটি কথা বলেছিল, আপনি চা খাবেন, পানি চুলায় আছে। বলকাচ্ছে। এখন আপনি এই পানি দিয়ে কি করবেন সেটা আপনার ব্যাপার। চাও খেতে পারেন আবার চাল দিয়ে ভাত রাধতে পারেন, সেটা আপনার ব্যাপার। জনগন ভাল কিছু গ্রহণ করার জন্য প্রস্তুত। এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা। আমি সবাইকে শ্রদ্ধার চোখে দেখি। কঠিন প্রতিপক্ষ কে তা ভোটের ময়দানে প্রমাণ হবে।
নিউজ৩৯: নিউজ৩৯ ও এর সামাজিক সংগঠন ভয়েস৩৯ এর পাঠকদের উদ্দেশ্যে কিছু বলুন।
কামরুল হুদা: আমি মনে করি, নিউজ৩৯ তারুণ্যের গর্ব। সেক্ষেত্রে নিউজ৩৯ স্বচ্ছতা-সততায় দোহার–নবাবগঞ্জবাসীকে সদা সর্বদা সত্য সংবাদ পরিবেশনের মাধ্যমে চারিপাশ সম্পর্কে সচেতন করবে বলে আশা রাখি। এছাড়া তাদের সকল সামাজিক কর্মকান্ডে আমাকে ও আমার পরিবারকে তারা পাবে বলে প্রত্যাশা করছি। আমি উনাদের দোয়া কামনা করবো। এবং তাদের সহ সবাইকে নিয়ে আমি দোহারের উন্নয়নের কাজ করতে চাই।
নিউজ৩৯: আমাদের সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
কামরুল হুদা: আপনাদেরকেও ধন্যবাদ, সব সময় যোগাযোগ থাকবে বলে আশা রাখি এবং জনগণের কাছে আমার কথা পৌঁছে দেবার জন্য আবারও আন্তরিক ধন্যবাদ।