কাউকে উপহাস, ঠাট্টা, ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ করা ইসলামে সম্পূর্ণ না-জায়েজ। আল্লাহপাক এটিকে অপচ্ছন্দ করেন। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘মুমিনগণ কেউ যেন অপর কাউকে উপহাস না করে। কেননা, সে উপহাসকারী অপেক্ষা উত্তম হতে পারে।
কোনো নারী অপর নারীকে যেন উপহাস না করে। কেননা সে উপহাসকারিণী অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ হতে পারে। তোমরা একে অপরের প্রতি দোষারোপ করো না এবং একে অপরকে মন্দ নামে ডেকো না। কেউ বিশ্বাস স্থাপন করলে তাদের মন্দ নামে ডাকা গোনাহ। যারা এরূপ কাজ হতে তওবা না করে তারাই জালেম। ’ (সুরা হুজরাত-১১)।
কারো চলাফেরা,উঠাবসা,কথাবর্তা,অঙ্গভঙ্গি ইত্যাদি নিয়ে ব্যঙ্গ করা,কারো শারীরিক গঠন ও আকার-আকৃতি নিয়ে কটূক্তি করা তার কোনো কথা বা কাজের ওপর ঠাট্টা করা। চোখ, হাত-পা দ্বারা টিকা-টিপ্পনী মারা ইত্যাদি এ সকল জিনিস অন্তর্ভুক্ত।
রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন,“দুনিয়ায় যারা কাউকে নিয়ে উপহাস করে তাদের জন্য আখিরাতে জান্নাতের দরজা খোলা হবে এবং তাদেরকে জান্নাতের দিকে ডাকা হবে। কিন্তু তারা যখন কাছে এসে জান্নাতের দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে উদ্যত হবে তখনই দরজা বন্ধ করে দেওয়া হবে। এভাবে বারবার তাদেরকে ডাকা হবে এবং প্রবেশ করতে গেলেই তা বন্ধ করে দেওয়া হবে। একপর্যায়ে এভাবে করতে করতে সে নিরাশ হয়ে আর জান্নাতের দিকে ফিরে যাবে না। এভাবে দুনিয়ায় তার উপহাসের পরিণামে আখিরাতে তাকে নিয়ে এ ধরনের উপহাস করা হবে।
ঠাট্টা-বিদ্রুপ এতটাই নিকৃষ্ট কাজ যে মহানবী (সা.) এই কাজকে ‘দূষণ সৃষ্টিকারী’ বলে আখ্যা দিয়েছেন। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, কোনো এক সময় মহানবী (সা.)-কে আমি জনৈক ব্যক্তির চালচলন নকল করে দেখালাম।
তিনি বলেন, আমাকে এই পরিমাণ সম্পদ প্রদান করা হলেও কারো চালচলন নকল করা আমাকে আনন্দ দেয় না। আয়েশা (রা.) বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল (সা.)! সাফিয়্যা তো বামন নারী লোক, এই বলে তিনি তা হাতের ইশারায় দেখালেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, তুমি এমন একটি কথার দ্বারা বিদ্রুপ করেছ, তা সাগরের পানির সঙ্গে মেশালেও ওই পানিকে দূষিত করে ফেলতো। (তিরমিজি, হাদিস : ২৫০২)।
অনেকে ঠাট্টা-বিদ্রুপকে এতটাই হালকা বিষয় মনে করে যে কখনো কখনো ধর্ম নিয়েও বিদ্রুপাত্মক উক্তি করে বসে, কোনো ধার্মিক বা আলেমকে পেলে ধর্ম নিয়ে বিভিন্ন বিদ্রুপাত্মক উক্তি করে বসে, যা অত্যন্ত ভয়ংকর বিষয়।
পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘মানুষের মধ্যে কেউ কেউ অজ্ঞতাবশত আল্লাহর পথ থেকে বিচ্যুত করার জন্য অসার বাক্য ক্রয় করে এবং আল্লাহর প্রদর্শিত পথ নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করে, তাদের জন্য আছে অবমাননাকর শাস্তি। ’ (সুরা : লুকমান, আয়াত : ৬)।