আল্লাহর প্রকৃত বান্দা হতে চাইলে জীবনের সর্বক্ষেত্রে প্রয়োজন বিনয়। ইবাদত-বন্দেগি থেকে শুরু করে ঘরে-বাইরে সবার সঙ্গে আচরণে বিনয়ী হওয়া অপরিহার্য। বিনয়ী ব্যক্তির ওঠাবসা, কথাবার্তা, এমনকি হাঁটাচলায়ও তা প্রকাশ পায়। আল্লাহ তাআলার বিধিবিধানের সামনে নিজেকে সঁপে দেওয়ার জন্য বিনয়ী হওয়া দরকার। বাহ্যত নিজের শ্রমে-ঘামে কিংবা অর্থ-মেধায় অর্জিত সফলতাকেও তখন সে আল্লাহর দান বলে বিশ্বাস করবে। পবিত্র কোরআনে প্রকৃত বান্দাদের গুণাগুণ উল্লেখ করে আল্লাহ তাআলা বলেছেন, ‘দয়াময়ের বান্দা তারাই, যারা পৃথিবীতে নম্রভাবে চলাফেরা করে।…’ (সুরা ফুরকান: ৬৩)
নবীজি (সা.) খুব বিনয়ী ছিলেন। খুব সাধারণভাবে মানুষের সঙ্গে মিলিত হতেন। যেকেউ যখন-তখন তাঁর সঙ্গে কথা বলতে পারত। কেউ কথা বলতে গিয়ে ভয় পেলে তিনি অভয় দিতেন। আবু মাসউদ (রা.) বলেন, ‘এক ব্যক্তি নবীজির সঙ্গে কথা বলতে এল। তখন সে ভয়ে কাঁপছিল। নবী (সা.) বললেন, ‘শান্ত হও। আমি কোনো রাজা-বাদশা নই। আমি একজন সাধারণ নারীর সন্তান।’ (ইবনে মাজাহ: ৩৩১২)
জান্নাতি ও জাহান্নামিদের বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করে নবী (সা.) বলেছেন, ‘আমি কি তোমাদের জান্নাতবাসীদের ব্যাপারে বলব না? তারা হচ্ছে দুর্বল, নরম স্বভাবের লোক, তাদের কেউ যদি আল্লাহর নামে কসম করে কিছু বলে, আল্লাহ অবশ্যই তার কসম রক্ষা করেন। আমি কি তোমাদের জাহান্নামিদের সম্পর্কে বলব না? তারা রূঢ় ও কর্কশ স্বভাবের, উদ্ধত, আত্মম্ভরি লোক।’ (বুখারি: ৪৯১৮; মুসলিম: ২৮৫৩)
বিনয়ের বিপরীত হলো অহংকার। যারা উগ্র, অহংকারী, বদমেজাজি, তারা নিজেরা নিজেদের বড় ভাবলেও পরিবার-পরিজন, আত্মীয় ও বন্ধুবান্ধব—কারও প্রিয়পাত্র হতে পারে না। সবাই তাদের আড়চোখে দেখে; যথাসম্ভব এড়িয়ে চলার চেষ্টা করে।
লেখক: ইসলামবিষয়ক গবেষক