ঢাকার দোহার উপজেলায় তিনটি ইউপিতে জমে উঠেছে নির্বাচনী প্রচার প্রচারণা। এই তিনটি ইউনিয়ন পরিষদের ভোট গ্রহণ আগামী ২নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে। পৌরসভার সাথে সীমানা জটিলতা ও মামলার কারনে ঝুলে থাকায় প্রায় ২০ বছর পর হতে যাচ্ছে কাঙ্ক্ষিত এ নিবার্চন।
এই তিনটি ইউনিয়নগুলো হলো- মাহমুদপুর, রাইপাড়া ও সুতারপাড়া। জনগণের মধ্যে দীর্ঘদিন পর নির্বাচন কে ঘিরে যেমন উৎসাহ উদ্দীপনা রয়েছে তেমনি সুষ্ঠু ভোট নিয়ে শঙ্কাও রয়েছে। এসব ইউনিয়নগুলোতে অবাধ সুষ্ঠু ভোট হলে চেয়ারম্যান পদে জয়-পরাজয় অনেকটাই নির্ভর করছে বিএনপি সমর্থিত ভোটারদের উপর। নিবার্চনে আওয়ামীলীগ সমর্থিত নৌকার প্রার্থীর পাশাপাশি রয়েছে সরকারী দলের বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের সাথে যুক্ত একাধিক স্বতন্ত্র প্রার্থী। এ হিসেবে প্রতিটি ইউনিয়নেই নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর মূল প্রতিদ্বন্দ্বি হয়ে লড়াই করাছে আওয়ামী লীগের দলের একাধিক স্বতন্ত্র প্রার্থীরাই তবে তারও প্রচার প্রচারনায় ভোটের মাঠ চষে বেড়াচ্ছে।
তিনটি ইউনিয়নের সরেজমিনে ভোটারদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, আগামী ২ নভেম্বর ভোট গ্রহণের দিন যতই ঘনিয়ে আসছে প্রার্থীদের প্রচার প্রচারণাও ততই বাড়ছে। তবে মাঝে মাঝে কিছু স্থানে ঝামেলাও তৈরী হচ্ছে। ভোট গ্রহণের দিন পর্যন্ত এমন সুন্দর পরিবেশ থাকবে কিনা তা নিয়ে রয়েছে ভোটারদের মাঝে নানা শঙ্কা ও উৎকণ্ঠা। পদ্মা নদীর তীর ঘেষে মিনি কক্সবাজার ঘিড়ে উঠা মাহমুদপুর ইউনিয়ন। ভোটার সংখ্যা প্রায় ১৭ হাজার। এখানে এক যুগেরও বেশী সময় ধরে ইউপি নিবার্চনে ভোট দিতে না পারায় এ নিবার্চনকে ঘিরে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা লক্ষ্য করা গেছে। এখানে চেয়ারম্যান পদে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হয়েছেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আইয়ুব আলী। তার মূল প্রতিদ্বন্দ্বি হয়েছেন আ‘লীগের বর্তমান সভাপতি আনারস প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী এসএম ফারুকুজ্জামান ওরফে ফারুক পেশকার। মাঠে আছেন আরো দুই প্রার্থী হাত পাখা প্রতীকের নুরুল ইসলাম, তাজেল ইসলাম খান মটর সাইকেল প্রতীক। এখানে বিএনপি সমর্থিত কোনো প্রার্থী না থাকায় তাদের সমর্থন জয় পরাজয়ে অনেকটাই নিয়ামক ভূমিকা রাখতে পারে বলে সুধী মহলের ধারণা। স্থানীয় এ নিবার্চনে সদস্য (মেম্বার)প্রার্থী থাকায় ব্যাপক ভোটার উপস্থিত হবে এমটাই আশা করা যায়। সে ক্ষেত্রে বিএনপি সমর্থকরা কোন প্রার্থীকে সমর্থন দিবে এ প্রশ্নে বিভোর প্রার্থী ও সাধারণ মানুষ। যদিও দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে বিএনপির ইউনিয়ন সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. গিয়াস উদ্দিন স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন। কিন্তু পরবর্তীতে নৌকার প্রার্থী মো.আইয়ুব আলীকে সমর্থন দিয়ে এক সভায় তার মনোনয়ন প্রত্যাহার করেন। তবে এটা তার ব্যক্তি সিদ্ধান্ত নাকি দলীয় তা প্রকাশ করেননি তিনি।
এদিকে রাইপাড়া ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে নৌকার প্রার্থী আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আমজাদ হোসেন, তার প্রতিদ্বন্দ্বি সাবেক ছাত্রলীগ নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী আনারস প্রতীকের মো.আলী হোসেন নান্টু, বিএনপি সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থী বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান চশমা প্রতীকের নুরুল হক। এখানে প্রায় ১৮ হাজার ভোটার সংখ্যা। সর্বশেষ এ ইউনিয়নের নির্বাচন হয়েছিলো ২০০৩ সালে। এ ইউনিয়নে বিএনপির প্রার্থী থাকলেও দলের সমর্থনের উপর নির্ভর করছে জয়ের বিষয়টি। কারন বিএনপি স্থাণীয় সরকারের এ নির্বাচনে অংশ নেয়নি। তবে প্রচার প্রচারণায় এখন পর্যন্ত নৌকা, আনারস ও চশমা অনেকটাই প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক অবস্থানে আছে। তবে এ ইউনিয়নে ব্যক্তি জনপ্রিয় কিছু সুধীজন রয়েছে তাদের ইশারা ইঙ্গিতের উপরও জয় পরাজয়ের আভাস হিসেবে দেখছে এলাকাবাসী।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যাক্তি বলেন, বিগত জাতীয় নির্বাচনসহ বিভিন্ন নির্বাচনে এই রায়পাড়া ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি ভোট বিএনপির। জাতীয় নির্বাচনের সময়ও আমাদের এই ইউনিয়ন থেকেই সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়েছওল বিএনপি।
অপরদিকে, ইউপি নিবার্চনে তিন ইউনিয়নের মধ্যে অধিক গুরুত্বপূর্ণ সুতারপাড়াকে টার্নিং পয়েণ্ট হিসেবে দেখছে পর্যবেক্ষক মহল। কারণ এখানে চেয়ারম্যান পদে ৯জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। এখানে ভোটার সংখ্যা প্রায় ২১ হাজার। এখানে একজন নারী প্রার্থীও চেয়ারম্যান পদে মাঠে আছেন। তার নাম পারুল আক্তার। তার প্রতীক রজনীগন্ধা। এছাড়া আজাদ মোল্লা ও আব্দুল মালেক প্রার্থী হিসেবে মাঠে কাজ করছে। তার মধ্যে মূল প্রতিযোগিতা হবে ৪/৫জনের মধ্যে। ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি শেখ নাসির উদ্দিন নৌকা প্রতীক, স্বতন্ত্র প্রার্থী স্বেচ্ছাসেবকলীগের চঞ্চল মোল্লা চশমা প্রতীক, মেহেদী হাসান সাদ্দাম বেপারী প্রতীক টেলিফোন, বায়েজিদ হোসেন বাদল চোকদার প্রতীক জোড়া পাতা, জাতীয় পার্টির (স্বতন্ত্র)হায়দার বেপারীর প্রতীক অটোরিক্সা, আনারস প্রতীকের নুরে আলম।
সুতারপাড়া ইউনিয়নের রবিন হোসেন (২৭) বলেন, এ ইউনিয়নে নৌকার সাথে কয়েকজন স্বতন্ত্র প্রার্থীই হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে বলে আমি মনে করি। তবে এখানে দলের একাধিক প্রার্থী থাকায় অনেকটাই চাপে রয়েছে নৌকার প্রার্থী। সেই ক্ষেত্রে ভোটও ভগ হবে।
এ বিষয়ে নৌকার প্রার্থী নাসির উদ্দিন বলেন, সাধারণ জনগণ আমার সাথে আছে বলে মনে করছি। দলের একাধিক প্রার্থী থাকলেও তা চাপ হিসেবে নিচ্ছি না। আমি ইউনিয়নের জন্য করোনা কালীন সময় থেকে অনেক কাজ করেছি তাই জনগণ আমাকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করবে বলে আশা করি।
এবিষয়ে দোহার উপজেলার বিএনপির সাধারন সম্পাদক মাসুদ পারভেজের সাথে কথা হলে তিনি জানান, প্রথম কথা হচ্ছে আমাদের দলীয় সিদ্ধান্ত হল এই সরকারের অধিনে নির্বাচনে যাবো না। আমাদের অনেক ভোটার আছে তিনটি ইউনিয়নে আমারা কোন লোকে সমর্থন দেয়নি। তবে যেহেতু স্থানীয় নির্বাচন সেক্ষেত্রে বিএনপির ভোটাররা তাদের আত্মীয় স্বজনকে ভোট দিতে পারে সেক্ষেত্রে আমাদের নলেজে থাকবে না তবে আমরা সবাই বলেছি এই সরকারের অধিনে ভোট না দিতে।
রায়পাড়া ইউনিয়নের চশমা প্রতিকের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী নরুল হকের বিষয়ে জানতে চাইলে দোহার উপজেলার বিএনপির সেক্রেটারি মোঃ মাসুদ পারভেজ বলেন, নরুল হক বিদেশে থাকতেন। তিনি বিএনপির কেউ না