জাকির হোসেন♦ সোহেল আহমেদ : ঢাকা জেলার অন্যতম বৃহৎ উপজেলা নবাবগঞ্জ। ১৪ টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত এই উপজেলার অন্যতম একটি ইউনিয়ন বান্দুরা। বান্দুরা ইউনিয়ন দোহার-নবাবগঞ্জ উপজেলার সীমানায় থাকায় দুইটি উপজেলার মানুষের কাছে এটি গুরুত্বপূর্ণ। বিভিন্ন কারণে প্রতিদিন বান্দুরায় ও আশেপাশের গ্রামে প্রচুর লোকজন যাতায়াত করে। এই দুই উপজেলার মানুষের যাতায়াতের জন্য যতগুলো রাস্তা আছে তার মধ্যে ইকরাশি থেকে হাসনাবাদ হয়ে বান্দুরার রাস্তাটি অন্যতম। এই রাস্তাটির অবস্থা বর্তমানে খুবই করুণ। এই রাস্তাটির যায়গায় যায়গায় সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্ত। আর সামান্য বৃষ্টি হলে রাস্তার মাঝেই সৃষ্টি হয় ডোবা।
ইকরাশি থেকে হাসনাবাদ হয়ে বান্দুরা যাওয়ার এই রাস্তাটি প্রতিদিন প্রায় কয়েক হাজার মানুষ ব্যবহার করে। প্রতিদিন যাতায়াত করে নানা রকম যানবাহন। রাস্তার এই করুন অবস্থার কারনে মানুষকে পোহাতে হচ্ছে নানা রকম ঝক্কি ঝামেলা। প্রায়ই ঘটছে ছোট খাটো দূর্ঘটনা।
ঢাকার দক্ষিণের অন্যতম সুপরিচিত বিদ্যাপাঠকেন্দ্র বান্দুরা হলিক্রস উচ্চ বিদ্যালয়। এই বিদ্যালয়ে পড়তে আসার জন্য প্রতিদিন কয়েকশ ছাত্রকে এই রাস্তা ব্যবহার করতে হয়। এই রাস্তা ব্যবহারকারী মাঝে রয়েছে হাসনাবাদ, মৌলভিডাঙ্গী গ্রাম ছাড়াও দোহারের অন্যান্য গ্রামের ছাত্র-ছাত্রী। এই সব ছাত্রদের বেশীর ভাগই যাতায়াতের মাধ্যম হিসাবে ব্যবহার করে রিক্সা। কিন্তু রাস্তার বেহাল দশার করনে প্রায়ই পাওয়া যায়না রিক্সা। আর পাওয়া গেলেও রিক্সাচালকরা যেতে চায় না ভাঙ্গা রাস্তার করনে। ফলে বেশির ভাগ সময় হেটেই বিদ্যালয়ে যেতে হয় ছাত্রদের।
বান্দুরা হলিক্রসের ছাত্র ছাড়াও এই রাস্তা ব্যবহার করে একটি বালিকা বিদ্যালয় , দুইটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও বেশ কয়েকটি কিন্ডারগার্টেনের কোমলমতি ছাত্র ছাত্রীরা। ছাত্র ছাত্রীদের এই দূর্ভোগের জন্য ক্ষোভ প্রকাশ করেন অভিভাবক মহল।
ছবি: হাসনাবাদের রাস্তা
রাস্তার এই খারাপ অবস্থা সত্বেও প্রশাসনিক কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় এলাকাবাসী সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেন। স্থানীয় এক তরুন তুষার ইসলাম আমাদের প্রতিনিধিকে জানান নির্বাচনের সময় বর্তমান এম.পি ও মন্ত্রী এ্যাড. আব্দুল মান্নান খান নবাবগঞ্জের উন্নয়নের অঙ্গিকার করলেও তিনি তার কথা রাখেন নি। মহাজোট সরকারের এই আড়াই বছরে নবাবগঞ্জের কোন উন্নয়নই হয় নি বলে তিনি মন্ত্যব্য করেন। ইমাম হাসান সাইফি নামে আরেক জন আমাদের জানান, দীর্ঘদিন এই রাস্তাটি ছিল অবহেলিত। গত চারদলীয় সরকারের সময় ইটের এই রাস্তাটি পিচ ঢালাই করা হয়। কিন্তু নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহারের কারনে অল্প কিছুদিনের মধ্যেই রাস্তাটি নষ্ট হয়ে যায়। তারপর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দুই বছর ও মহাজোটের আড়াই বছরেও লাগে নি এই রাস্তায় কোন উন্নয়নের ছোয়া। তিনি দুর্ভোগ লাঘবের জন্য এবং দোহার নবাবগঞ্জের মানুষের যোগাযোগ সহজ করার জন্য অতিদ্রুত এই রাস্তার উন্নয়ন প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।
ছবি: হাসনাবাদের রাস্তা
ফোনে বান্দুরা ইউনিয়নের নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান মো: হিল্লোল মিয়ার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি আমাদের জানান রাস্তার উন্নয়নের জন্য সব পদক্ষেপ ‘গ্রহণ’ করা হয়েছে। এই রাস্তার ব্যাপারে স্থানীয় প্রতিমন্ত্রী আব্দুল মান্নান খানকে অবহিত করা হয়েছে বলে তিনি জানান। আলাপকালে তিনি আরো জানান যে অল্প কিছুদিনের মধ্যেই এই রাস্তার কাজের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হবে।
ছবি: হাসনাবাদের রাস্তা