দোহারে বিলাতি গাবের হালি ষাট টাকা

455
দোহারে বিলাতি গাবের হালি ষাট টাকা

ঢাকা জেলার দোহার উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নের বিভিন্ন বাড়িতে গাছে গাছে ঝুলছে বিলাতি গাব। দোহারের বিভিন্ন বাজার গুলোতেও বিক্রি হচ্ছে সেই বিলাতি গাব। মূলত এটি একটি মৌসুমি ফল আর এখনই গাবের মৌসুম। উপজেলার বিভিন্ন বাজারে বিক্রি করতে দেখা যাচ্ছে এই মৌসুমি ফল। এই ফল খেতে খুব মিষ্টি ও সুস্বাদু। রয়েছে নানাবিধ স্বাস্থ্য গুণ। দামও সাইজ ভেদে কমবেশি অনেকেই পরিবারের জন্য ক্রয় করে থাকে এই ফল। পূর্বের চেয়ে বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে এই গাবের চাহিদা ও উৎপাদন।

সুগন্ধীযুক্ত গাঢ় লাল এই ফল দেখতে তো আকর্ষণীয় বটেই খেতেও ভীষণ মজা! বিলাতি গাব নামে বিলাতি তো বটেই এর আদি নিবাসও আমাদের দেশের বাইরে! বিলাতি গাবের আদি নিবাস ফিলিপাইনে। কিন্তু এর স্বাদ, গন্ধ ও পুষ্টিগুণের কারণে প্রায় সারা বিশ্বেই এর চাষ হয়। বিলাতি গাবের ইংরেজি নাম Malobo। একে Korean mango বা Velvet-apple নামেও ডাকা হয়। কারণ এটি দেখতে অনেকটা লাল আপেলের মতোই এবং এর গা মখমলের মতো মসৃণ ! বিলাতি গাবের বৈজ্ঞানিক নাম Diospyros balncoi। এটি গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলের চিরসবুজ বৃক্ষ।

অন্য খবর  আমরা সবাই দোহারের উন্নয়নের অংশীদার: আলমগীর হোসেন

বিলাতি গাব গাছ আকারে মাঝারি, লম্বায় ১০-৩০ মিটার পর্যন্ত উঁচু হয়। ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসে গাছে ফুল ফোটে এবং জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ফল সংগ্রহ করা যায়। কাঁচা ফল হালকা সবুজ বা বাদামি হয়। ফল পাকলে উজ্জ্বল বাদামি বা গাঢ় লালবর্ণ ধারণ করে। পাকা ফলের ভেতরটা সাদা এবং মাখনের মতো নরম। পাকা ফল সুগন্ধী এবং বেশ লোভনীয়। বিলাতি গাব ফল হিসেবে খাবার পাশাপাশি এটা দিয়ে জুস, ডেজার্ট, ফ্রুটকেক, ক্রিম ইত্যাদিও তৈরি করা হয়। এ ফলের পুষ্টিগুণও ব্যাপক। পাকা বিলাতি গাবের প্রতি ১০০ গ্রাম খাদ্যযোগ্য অংশে রয়েছে – খাদ্যশক্তি- ৫০৪ কিলোক্যালরি জলীয় অংশ- ৮৩.০-৮৪.৩ গ্রাম আমিষ- ২.৮ গ্রাম চর্বি- ০.২ গ্রাম শর্করা- ১১.৮ গ্রাম খাদ্যআঁশ- ১.৮ গ্রাম চিনি- ১১.৪৭ গ্রাম ক্যালসিয়াম- ৪৬ মিলিগ্রাম ভিটামিন এ- ৩৫ আইইউ ফসফরাস- ১৮ মিলিগ্রাম আয়রন- ০.৬ মিলিগ্রাম থায়ামিন- ০.০২ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি- ১৮ মিলিগ্রাম সোডিয়াম- ১১০ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম- ৩০৩ মিলিগ্রাম।

উপজেলার কার্তিকপুর বাজারে বিলাতি গাব কিনতে আসা মিঠুন বলেন, বিলাতি গাবে অনেক পুষ্টি রয়েছে। খেতেও সুস্বাদু তাই এই বাজারে এসেছি গাব কিনতে। তবে বাজারে এসে মনে হচ্ছে গাবের দামটা একটু বেশী।

অন্য খবর  পুলিশের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ: নুরুল ইসলাম বাবুল

উপজেলার জয়পাড়া বাজারের বিলাতি গাব বিক্রেতা শেখ ফালু বলেন, আগে মানুষ এই ফল খুবই কম পছন্দ করতো কারন তখন মানুষ এই ফলের পুষ্টিমান সম্পর্কে জানতো না। তবে মানুষ অনেক স্বাস্থ্য সচেতন হয়েছে। মানূষ এখন পুষ্টিকর ফলমূল বেশি পছন্দ করে। তাই বর্তমানে এই ফলের চাহিদার সাথে সাথে বৃদ্ধি পেয়েছে গাবের দাম। বর্তমানে এক হালি গাব আকারভেদে ২০-৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দাম সাশ্রয়ী হওয়ায় অনেকেই প্রতিদিন নিজের পরিবারের জন্য কিনে নিচ্ছে বিলাতি গাব।

আপনার মতামত দিন