বাংলাদেশে লিকুইফাইড ন্যাচারাল গ্যাসভিত্তিক (এলএনজিভিত্তিক) বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে দুই থেকে আড়াই বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে সৌদি আরব। এই বিনিয়োগে দেশে তিন হাজার ৬০০ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করা হবে।

আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি হোটেলে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) সঙ্গে সৌদি আরবের কোম্পানি আকুয়া পাওয়ারের এ-সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে।

বাংলাদেশের পক্ষে পিডিবির চেয়ারম্যান প্রকৌশলী খালেদ মাহমুদ এবং সৌদি আরবের পক্ষে আকুয়া পাওয়ারের চেয়ারম্যান মোহম্মদ আবু নাইয়ান স্মারকে সই করেন।

পরিকল্পিত বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের জায়গা এখনো চূড়ান্তভাবে নির্ধারিত হয়নি। তবে জানা গেছে, মহেশখালী অথবা পায়রায় এই বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হবে।

সমঝোতা স্মারক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি বিনিয়োগ-বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান জানান, তিন হাজার ৬০০ মেগাওয়াটর ক্ষমতাসম্পন্ন বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনে দুই থেকে আড়াই বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করতে যাচ্ছে আকুয়া পাওয়ার। খুব দ্রুত চূড়ান্ত চুক্তি ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের কাজ শুরু হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হতে চার-পাঁচ বছর সময় লাগবে।

প্রধানমন্ত্রীর এই উপদেষ্টা গত নভেম্বরে তার সৌদি আরব সফরের প্রসঙ্গ তুলে বলেন, ‘সে সময় সৌদি বাদশা বলেছিলেন বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য পিআইএফ (পাবলিক ইনভেস্ট ফান্ড) টিম পাঠাবেন। এক বছরের কম সময়ে তিনি তার কথা বাস্তবায়ন করেছেন।’

অন্য খবর  ঢাকা-১ এ লড়াই হবে দুই শিল্প গ্রুপের

অনুষ্ঠানে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, ‘বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাতে বিনিয়োগের ঝুড়ি এখন ভরা। অনেক দেশ এই খাতে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী।’

বাংলাদেশে বিদ্যুৎ খাতে সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ যুক্তরাষ্ট্রের। গত ফেব্রুয়ারিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানি জেনারেল ইলেক্ট্রিক (জিই) বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড পিডিবির সঙ্গে তিন হাজার ৬০০ মেগাওয়াটের একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের জন্য সমঝোতা স্মারক সই করে।

এ ছাড়া দেশের বেসরকারি বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী একটি কোম্পানি সামিটের সঙ্গে জিই দুই হাজার ৪০০ মেগাওয়াটের আরও একটি কেন্দ্র নির্মাণের জন্য সমঝোতা স্মারক সই করেছে। এর বাইরে জিই দেশের আরেক প্রতিষ্ঠান ইউনিক গ্রুপের সঙ্গে কেন্দ্র নির্মাণে চুক্তি করেছে, যার মধ্যে মেঘনাঘাটে সামিট এবং ইউনিকের প্রতিটি ৬০০ মেগাওয়াট করে দুই কেন্দ্রের জন্য শিগগির চুক্তি সই হওয়ার কথা রয়েছে।

জিই-এর যন্ত্রাংশ ব্যবহার করে ঘোড়াশালের তৃতীয় এবং চতুর্থ ইউনিটের রি-পাওয়ারিং (পুনঃক্ষমতায়ন), শাহজিবাজার-১০০, খুলনা-৩৩০ এবং সিদ্ধিরগঞ্জ ৩৩৫ মেগাওয়াট এবং ভোলা-২২৫ মেগাওয়াট কেন্দ্রগুলো নির্মাণ করা হচ্ছে।

বিদ্যুৎ খাতে বাংলাদেশে দ্বিতীয় বৃহৎ বিনিয়োগ জার্মানির। দেশটি সিমেন্সের সঙ্গে গত বছর বাংলাদেশের নর্থ-ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের সমঝোতা স্মারক সই হয়। দেশটি বিভিন্ন প্রকল্পে ৪০০ কোটি ডলার বা ৩৩ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের চুক্তি করে।

আপনার মতামত দিন