নির্মাণ শুরুর প্রায় সাড়ে তিন বছর পর কয়েকটি শিল্পপ্রতিষ্ঠানকে জমি বরাদ্দ দিয়েছে দেশের প্রথম সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগের অর্থনৈতিক অঞ্চল মোংলা ইকোনমিক জোন। বাগেরহাটের মোংলা বন্দরের কাছে ২০৫ একর জমি নিয়ে গঠিত এই অর্থনৈতিক অঞ্চলে প্রথম ধাপেই ৪৪ শতাংশ ভূমি বরাদ্দ দেওয়ার কথা জানিয়েছে নির্মাতা প্রতিষ্ঠান পাওয়ারপ্যাক ইকোনমিক জোন কর্তৃপক্ষ। সোমবার রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ভূমি বরাদ্দ চুক্তি হয়, যার চারটিই এনার্জিপ্যাকের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান। এর বাইরে রয়েছে আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড ইউনিলিভারের অন্যতম পণ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান নাগা লিমিটেড।
অর্থনৈতিক অঞ্চলের সর্ব পশ্চিমে ১১ একর জমি বরাদ্দ পেয়েছে নাগা। এ ছাড়া শিকদার গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান পাওয়ারপ্যাক পেট্রোলিয়ামকে আট একর, এনার্জিপ্যাককে ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য আট একর, শিকদার গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান পাওয়ারপ্যাক স্টিলকে ২২ একর এবং মোটরসাইকেল সংযোজনের জন্য একটি কোম্পানিকে ১৪ একর জমি বরাদ্দ দেওয়া হয়। এ ছাড়া ন্যাশনাল ব্যাংক ও শিকদার ইন্স্যুরেন্সকে শাখা খোলার জন্য ছোট আকারের প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয় এই অর্থনৈতিক অঞ্চলে।
বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি খাত ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ, বেজার নির্বাহী সদস্য মোহাম্মদ আইয়ুব বক্তব্য রাখেন। পাওয়ারপ্যাক ইকোনমিক জোনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রনো হক শিকদার অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
সালমান এফ রহমান বলেন, ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর প্রধানমন্ত্রী অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেন। মূলত বঙ্গবন্ধুর ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প করপোরেশন বা বিসিক থেকে বিশেষ শিল্পাঞ্চলের ধারণা নেন প্রধানমন্ত্রী। বিশে^র বিভিন্ন দেশে এমন ধারণা থাকলেও বাংলাদেশে এর বিশেষত্ব হলে এখানে দেশভিত্তিক অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার অনুমোদন দেওয়া হচ্ছে। সুন্দরবনের কাছে এই অর্থনৈতিক অঞ্চল নিয়ে বিভিন্ন মহলের উদ্বেগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জলবায়ু ও পরিবেশ নিয়ে অত্যন্ত সচেতন এবং সতর্ক। সুন্দরবনের পাশে পরিবেশের ক্ষতির আশঙ্কা থাকলে এ ধরনের প্রকল্প হাতে নেওয়া হতো না। এখনও কোনো পরিবেশগত ঝুঁকি আছে কি না, বা সুন্দরবনের পরিবেশ রক্ষার বিষয়টি মাথায় রেখেই সেখানে সব কিছু করা হচ্ছে। পবন চৌধুরী বলেন, ২০১৫ সালে জোর গতি নিয়ে যাত্রা শুরুর পর পদে পদে তাদের বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছিল। শুরুতে অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার গুরুত্ব অনেকে বুঝে উঠতে পারেননি। এখন সারা দেশে অন্তত ২৮টি অর্থনৈতিক অঞ্চল নির্মাণ চলমান আছে। মোংলা ও সিলেটের শ্রীহট্ট অর্থনৈতিক অঞ্চলের প্রসঙ্গ তুলে তিনি আরও বলেন, মোংলার জন্য দুইবার দরপত্র আহ্বান করেও বেজা ব্যর্থ হয়েছিল। শ্রীহট্টতেও খুব সামান্য টাকার বিনিময়ে জমি চাওয়া হয়েছিল শুরুতে। এখন সেই পরিস্থিতি একেবারেই কেটে গেছে। পদ্মা সেতুর কাজ সম্পন্ন হলে এই অঞ্চলে শিল্প স্থাপন হবে সবচেয়ে লাভজনক।
১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর প্রধানমন্ত্রী অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেন : সালমান এফ রহমান
আপনার মতামত দিন