ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার বান্দুরা ইউনিয়নের হাসনাবাদ এলাকার মাত্র ৫০০মিটার সড়কের বেহাল দশা। দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় সড়কটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ফলে সড়কটি দিয়ে কোন যানচলাচল করতে চায় না। এতে বিপাকে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা ও স্কুল এবং কলেজগামী শিক্ষার্থীরা। হাসনাবাদ গীর্জা থেকে সেন্ট ইউফ্রেজিস্ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজ গেট পর্যন্ত সড়কটিতে সামান্য বৃষ্টি হলেই হাঁটু পানি জমে যায়। এছাড়া পুরাতন বান্দুরা বাজার থেকে সেন্ট ইউফ্রেজিস বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজের যাওয়ার সড়কটিরও বিভিন্ন স্থানে সৃষ্টি হয়েছে একাধিক গর্ত। এতে প্রতিনিয়ত ঘটছে র্দুঘটনা, বিকল হচ্ছে গাড়ি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হাসনাবাদ গির্জার প্রধান ফটক থেকে হাসনাবাদ সেন্ট ইউফ্রেজিস বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজের দূরত্ব সর্বোচ্চ ৫শ’ মিটার। সড়কটি বর্তমান অবস্থা খুবই নাজুক। সড়কটি থেকে পিচ ও ইটের খোয়া উঠে গিয়ে সড়কের মধ্যে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে কোন যানবাহন বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া সড়কটি দিয়ে এখন আর যেতে চায় না। বিশেষ প্রয়োজনে যানবাহন গেলেও অনেক সময় গর্তের মধ্যে চাঁকা ফেঁসে গিয়ে যানবাহন বিকল হয়ে পড়ে জনদুর্ভোগের সৃষ্টি হয়। এতে প্রতিনিয়ত ঘটে নানা রকম দুর্ঘটনা। বর্তমান সড়কটি যানবাহন ও পথচারীদের চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। প্রতিদিন এ সড়কটি দিয়ে হাসনাবাদ সেন্ট ইউফ্রেজিস বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজ, হাসনাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও বান্দুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শত শত শিক্ষার্থী যাতায়াত করে থাকে। সামান্য বৃষ্টি হলে সড়কটিতে পানি জমে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় তিনটি বিদ্যাপীঠের শিক্ষার্থীদের। এছাড়া হাসনাবাদে ঐহিত্যবাহী জপমালা গির্জায় প্রতি রোববার কাঁচারীঘাট, পুরাতন বান্দুরা, মোলাশীকান্দা, দেওতলা এলাকা থেকে খ্রিষ্টান সম্পদায়ের শত শত লোক এ সড়কটি দিয়ে গির্জায় যাতায়াত করে। সংস্কারের উদ্যোগ না নেওয়ায় গির্জায় যাতায়াতে প্রতিনিয়ত সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় তাদেরকে। সড়কটি সংস্কার না হওয়ার সব ধরনের যান চলাচলে মারাত্মক বিঘ্ন ঘটছে। অন্যদিকে দীর্ঘদিনেও সড়কটির সংস্কার না হওয়ায় নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের উপর অনেকটা ক্ষুব্ধ ভুক্তভোগী এলাকার লোকজন। অথচ স্থানীয় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. হিল্লাল মিয়ার বাড়ির যেতেও এই সড়কটি ব্যবহার করতে হয়। এ সড়কটি দিয়ে চলাচলকারী জনগন নির্বাচিত জনপ্রতিনিদের দুষছেন। তাদের দারি জনপ্রতিনিধিদের অবহলোর কারণে সড়কটি সংস্কার সম্ভব হচ্ছে না।
বান্দুরা সরকারি প্রাথমিক বালক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির ছাত্র শাহরিয়ার সান বলেন, রাস্তাটির অবস্থা অনেক খারাপ। আমাদের অনেক কস্ট হয়। বৃষ্টি হলে পানি জমে, জামা কাপড় নস্ট হয়। তাই স্কুলেই আসি না।
হাসনাবাদ সেন্ট ইউফ্রেজিস বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজের ১০ শ্রেণির ছাত্রী সুরাইয়া আফরিন বলেন, আমাদেরকে ইকরাশি থেকে প্রতিদিন স্কুলে আসতে হয়। কোন গাড়ি এই রোড দিয়ে আসতে চায় না। ফলে বাধ্য হয়ে হেঁটেই আসতে হয়। সামান্য বৃষ্টি হলেই চলাচল করা যায়। পানি মধ্যে হাঁটতে গিয়ে র্দুঘটনার ঘটনাও ঘটেছে প্রতিনিয়ত।
অটোরিক্সা চালক মঞ্জু মিয়া বলেন, বান্দুরা থেকে দোহারের পালামগঞ্জ পর্যন্ত পুরো সড়কটি ভাল। তবে এই ৪/৫শ মিটার ভাঙ্গার কারনে কোন অটো গাড়ি বা রিক্সা এই সড়কটি দিয়ে আসতে চায় না। বাধ্য হয়ে আমরা প্রায় এক কিলোমিটার রাস্তা ঘুরে দোহার যাই।
স্থানীয় বাসিন্দা রতন ডি কস্তা বলেন, হাসনবাদ গির্জা থেকে স্কুল পর্যন্ত সড়কটির দূরত্ব সর্বোচ্চ ৫শ মিটার হবে। সড়কটির অবস্থা এতই খারাপ প্রয়োজনের সময়ও গাড়ি পাওয়া যায় না। মাত্র ৫শ মিটার সড়কের কারনে সড়কটি দিয়ে কোন গাড়ি যাতায়াত করতে চায় না। এছাড়া বৃষ্টি হলে পাঁয়ে হেঁটেও যাতায়াত করা যায় না। রোববার গির্জায় খ্রীষ্টান সম্প্রদায়ের লোকজনকে বিশেষ প্রার্থনায় আসতে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়।
হাসনাবাদ সেন্ট ইউফ্রেজিস বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ সিস্টার মার্গ্রেট বলেন, গুরুত্বপূর্ণ সড়কটির অবস্থা খুব খারাপ। প্রতিদিন সড়কটি দিয়ে শিক্ষার্থীদের যাতায়াত করতে হয়। এছাড়া গির্জায় কোন অনুষ্ঠান হলে খ্রীস্টান সম্প্রদায়ের লোকজনদের খুব ভোগান্তিতে পড়তে হয়। তাই ত দ্রুত সড়কটি সংস্কার করা প্রয়োজন।
এবিষয়ে বান্দুরা ইউপি চেয়ারম্যান মো. হিল্লাল মিয়া রাস্তাটির দূর্ভোগের কথা স্বীকার করে বলেন, অনেক দিন আগে রাস্তটি মেরামত করা হয়েছিলো। রাস্তাটি আবার মেরামতের জন্য বেশ কয়েকবার উপজেলা প্রকৌশলী অফিসকে তাগাদা দিয়েছি কিন্তু এ বিষয়ে তাদের কোন আগ্রহ নেই।
নবাবগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, সড়কটির ব্যাপারে আমি অবগত আছি। আশা করছি খুব শীঘ্রই কাজের দরপত্র আহবান করা হবে।